নিজস্ব প্রতিবেদক: মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সারা দেশে বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সাংগঠনিক জেলা শাখা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যন্ত এসব কর্মসূচি পালন করা হবে।
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যৌথসভার শুরুতে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধার্রণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আগামী ২৬ মার্চ থেকে শুরু করে ২০২২ সালের ২৬ মার্চ পযন্ত স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর পালনের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীসহ চার জনের মত বিদেশি মেহমান আসবেন। তাদেরও প্রোগ্রাম রয়েছে এবং জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটিও আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাইডলাইন নিয়ে কর্মসূচি প্রণয়ন করেছেন। জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমরা কর্মসূচি হাতে নেব।
তিনি বলেন, সম্ভবত ২৬ মার্চেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকা আসবেন। কাজেই জাতীয় কমিটির প্রোগ্রাম আছে, সেখানে আমাদেরও সীমিত আকারে হলেও উপস্থিতি থাকবে। সবকিছু মিলিয়ে আমরা আমাদের প্রোগ্রাম জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রোগ্রামের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আয়োজন করব। আবার আমাদের কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের সহযোগী সংগঠনগুলো তাদের কর্মসূচি প্রণয়ন করবে। তাদের নিজ নিজ কর্মসূচিও থাকতে পারে, সে কর্মসূচি তারা নিজেরা পালন করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সারাদেশে সংগঠনের দলীয় কার্যালয় ও সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ ভবন এবং সড়ক-মহাসড়ক সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জার আয়োজন করব। এখানে ঢাকা সিটি করপোরেশন ও মহানগর আওয়ামী লীগের ভূমিকা আছে, যা নিয়ে আমরা পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
কর্মসূচির মধ্যে আরও রয়েছে— জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম, স্বাধীনতার সংগ্রামের ওপর আলোচনা সভা, পুস্তিকা প্রকাশ, সেমিনার, গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন এবং আলোকচিত্র প্রদর্শনী (ভিজ্যুয়াল ডক্যুমেন্টশন)। সারাদেশে সংগঠনের দলীয় কার্যালয়ে ও বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচার এবং সভা-সমাবেশ ও র্যালির আয়োজন করা হবে।
এছাড়া সারাদেশে মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দির-গির্জা-প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন এবং সারাদেশে দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ ও সামাজিক সহযোগিতা কার্যক্রম পরিচালনা করবে আওয়ামী লীগ। দলের তথ্য গবেষণা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদকের নেতৃত্বে মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ক্রোড়পত্র ও বিশেষ স্মারক গ্রন্থ প্রকাশের কাজও এগিয়ে যাচ্ছে।
এর বাইরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমাদের সমমনা বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শিশুদের চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করবে। সেইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক যাত্রাপালা মঞ্চনাটক, পথনাটকের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় খেলাধুলার আয়োজন করা হবে। সারাদেশে বছরব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিও পালন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করায় দলের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ শেখ হাসিনার সাফল্যের মুকুটে নতুন সুবর্ণপালক যুক্ত করল। শেখ হাসিনা নেতৃত্বের কল্যাণেই একসময়ের দরিদ্র দেশ হিসেবে বিবেচিত বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হওয়ার গৌরবোজ্জল মাইলফলক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আজকের বাংলাদেশের সামনে অপার সম্ভাবনার হাতছানি। শেখ হাসিনার সুনিপুণ পরিকল্পনা, সুদক্ষ নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যেই উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রের মিছিলে সংযুক্ত হতে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
সান নিউজ/এমআর/আরআই