নিজস্ব প্রতিবেদক : জোট রাজনীতির রাজনীতি কোথায়? মাঠের রাজনীতিতে নেই জোট নেতারা, এছাড়া রাজনীতিতে পাওয়া আর না পাওয়া নিয়ে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ ক্ষেভে ফোসে উঠেছে। অনেকে বলছেন, এ জোট কেবলই কি ক্ষমতার সাধ আস্বাদনের মধ্যে সিমাবদ্ধ। কি লাভ হলো এ জোট করে? জোটের কাজকি,জোটের রাজনীতিতে কোথায় নেতারা এ বিষয়টি জোটের কোন নেতারা উঠালে অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের এচিত্র ফুটে উঠেছে। ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর সভাপতিত্বে ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় ভার্চুয়ালি এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তারা অফিস-আদালতসহ সর্বত্র ভাষার সঠিক ব্যবহারে বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও চলমান ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দ্রুত খুলে দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন।
সভায় সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান বলেন, ভাষা পেয়েছি, তারপথ ধরে স্বাধীনতাও পেয়েছি। কিন্তু সামগ্রিক মুক্তি পায়নি আমরা।
এসময় তিনি বলেন, ১৪ দল মাঝে মাঝে সরব হলেও নীরব থাকে বেশিরভাগ সময়। অনেকবার বিষয়টি ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সময় বললেও কার্যকর হয়নি। জোটের অভ্যন্তরীণ দলগুলো কীভাবে চলছে, বার বার জানালেও কোনো ফলাফল আসেনি।
তিনি বলেন, ১৪ দলের মধ্যে উপযুক্ত চিন্তা করে প্রত্যেক দলকে জনগণের কাছে পৌঁছাতে সক্ষমতা দানে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। সভাপতি (আমির হোসেন আমু) যেন এটি ভালো করে তুলে ধরেন।
এ বামনেতা বলেন, জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ও জোট দেশ-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। এগুলো করতে তারা সুযোগ পাচ্ছে আমাদের নিজেদের অনেকের কাজের কারণে। ক্ষমতায় থেকে ফুলে ফেঁপে প্রাচুর্যে অনেকে দেশের বাইরে অর্থপাচার করছেন। এগুলো দেখে জামাত জোট আরও শক্তিশালী বিরোধিতা করছে।
তিনি আরও বলেন, আমি ও আমার দল সকল সংগ্রামে ছিলাম-থাকবো। তবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের শতভাগ বাস্তবায়ন চাই। ১৪ দলের মধ্যে বঞ্চিত দল ও নেতৃবৃন্দের টিকে থাকার নির্দেশনা চাই।
তার বক্তব্যের পর সঞ্চালক মৃণাল কান্তি দাস বিষয়টি সভাপতির নজরে আনেন।
তিনি বলেন, সভাপতি, রেজাউর রশিদ খান শহীদ দিবসের আলোচনায় জোটের অভ্যন্তরীণ বিষয় অবতারণা করেছেন। এ বিষয়ে আপনার কথা থাকলে বলতে পারেন। এসময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, থাক। এটি পরে দেখা যাবে।
১৪ দলের আরেক নেতা বলেন, এটি ওভারফোনে বললেই হবে। এর জবাবে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস বলেন, বার বার নিষেধ করা সত্ত্বেও রেজাউর রশিদ খান সবসময় ভার্চুয়াল মিটিংয়ে এসব কথা বলেন। এগুলো তো আর আমাদের মধ্যে থাকে না। প্রকাশ হয়ে যায়। তাই সভাপতির কিছু নির্দেশনা থাকলে বলার জন্য বলছিলাম।
সভায় অন্যদের মধ্যে যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, জাতীয় পার্টি-জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম, শ্রমিক নেতা ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম, তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বশর, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে শিকদার, গণতান্ত্রিক পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন, সাম্যবাদী দলের মোসায়েদ আহমেদ, ন্যাপের ইসমাইল হোসেন, সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক রেজাউর রশিদ খান ও গণতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সভাপতি জাকির হোসেন।
সান নিউজ/এমআর/এম