নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটিতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেলকে সদস্য নিয়োগ করায় বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিএনপি। দলটি বলছে, একটি সাংবিধানিক পদের অধিকারীকে দলীয় পদে নিযুক্ত করা দেশের ইতিহাসে একটি নতুন ঘটনা। এটা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তার কার্যালয়কে নগ্ন দলীয় করণের অপচেষ্টা ও অত্যন্ত মন্দ দৃষ্টান্ত।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান জানান, গত শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় সর্বসম্মতিক্রমে যেসব প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে তা জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় কোনো কোনো সাংবিধানিক পদে দলীয় সমর্থক কাউকে নিয়োগ করার দৃষ্টান্ত থাকলেও কোনো সাংবিধানিক পদাধিকারীকে দলীয় পদে নিযুক্ত করার ঘটনা ১৯৭৫’এর বাকশালের কমিটি গঠনের পর আর ঘটেনি। জনগণের অর্থে যাদের বেতন-ভাতা পরিশোধিত হয় তাদের কারো বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলের শক্তি ও সামর্থবৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত হওয়া বা করা শুধু অন্যায় নয় অনৈতিকও বটে।
তিনি বলেন, বিএনপি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে, দেশের বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ও রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তার পদের নিরপেক্ষতা যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এটর্নি জেনারেলের উচিত হয় দলীয় পদ কিংবা এটর্নী জেনারেলের পদ থেকে পদত্যাগ করা।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি নড়াইলের এক আদালতে অসুস্থ অবস্থায় নিজ গৃহে কারারূদ্ধ বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারীর মত অমানবিক ও অস্বাভাবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সভায় বলা হয় যে, তিনি যখন চিকিৎসার জন্যও ঘরের বাইরে যেতে অক্ষম তখন গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে নড়াইলের আদালতে হাজির হওয়ার নিষ্ঠুর আদেশ জারীর সংবাদে সঙ্গতভাবেই দেশবাসী বিষ্মিত ও ক্ষুব্ধ।
সভায় অনতিবিলম্বে হয়রানীমূলক ও অমানবিক এই গ্রেফতারী পরোয়ানা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানানো হয়। একই সাথে সভায় ওই হাস্যকর হয়রানীমূলক মামলায় দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধেও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারীর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
নজরুল ইসলাম বলেন, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি বরিশালে অনুষ্ঠিত জনসভায় যোগদানের জন্য ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ‘জনতার মেয়র’ ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরকে মাওয়া ঘাটে অন্যায় ভাবে আটকে দেয়া, লঞ্চে পার হয়ে বরিশাল যাওয়ার পথে বাধা দেয়া, বরিশালে জনসভায় যোগদানকারী বিভিন্ন জেলা-অঞ্চল থেকে আগতদের নানা স্থানে বাধা দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
তিনি বলেন, সম্প্রতি জনস্বার্থে দায়িত্ব পালনরত সিলেট মহানগরের নির্বাচিত মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও তার সহকর্মীদের ওপর প্রকাশ্য দিবালোকে সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের হামলা, শটগান ব্যবহার এবং বেআইনী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সভায় জোর দাবি জানানো হয়।
সাননিউজ/টিএস/এম