নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খানের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ‘ঘোষক’। শাজাহান কি ছিলেন জানি না। ১৯৭২ সালের পর থেকে নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করেন। জিয়াউর রহমান ও শাজাহান কি এক জিনিস? এই শাজাহান এখন মিটিং করছেন কিভাবে জিয়াউর রহমানের খেতাব প্রত্যাহার করা যায় তা নিয়ে।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। শাজাহান খান আপনার খেতাব শুধু নয়, আপনার জীবনের জন্যও হুমকি হতে পারে। যদি একটা পটপরিবর্তন ঘটে, এদের ভূমিকা কি হবে জানি না। কারণ ৭২ থেকে ৭৫ আওয়ামী লীগের লোকজনদেরকে খুঁজে খুঁজে মেরেছে এই শাজাহান। কারণ তিনি একজন গণবাহিনীর নেতা ছিলেন। মাদারীপুরে জাসদের নেতা।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে এ সমাবেশ করা হয়।
রিজভী বলেন, যে লোকের কোন ধরণের ভদ্রতা, সভ্যতা, দৃঢ়তা নেই সে খেতাব বাতিল করবে না তো কে করবে। ডাকাতের কি কোন মনুষ্যত্ব থাকে? জিয়াউর রহমানের মত একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম জনগণের ধমনীতে বয়, তার মধ্যে একজন বীর খেতাব শাজাহান খানের মত একজন ডাকাত কেড়ে নিতে চায়।
শাজাহান খান সভ্যতার ধার ধারে না তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন রিজভী। তিনি বলেন, আপনাদের মনে আছে?পরিবহনের বাস যখন মানুষ চাপা দিয়ে মারে তখন সেটাকে তিনি বৈধতা মনে করেন। পরিবহনের বাস শিশুদের থেঁতলে দিয়ে যায়, আর তিনি হাসতে হাসতে বলেন- এগুলো কিছুই না।
তিনি বলেন, “ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম একজন নন্দিত আইনজীবী, এক টকশোতে রফিকুল ইসলামকে এই শাজাহান খান বলেন, ‘এই আপনার চোখ তুলে নিব’। যে লোকের মুখ থেকে চোখ তুলে নেবো, মারব, রক্তাক্ত করব এই শব্দ বের হয় সে তো ডাকাত, সন্ত্রাসী, মাফিয়া।”
ভারতের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ভারতের বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন হলে বাংলাদেশ থেকে একটা পাখিকেও ঢুকতে দিবে না। আমি বলি বাংলাদেশের পাখিরা যাবে কেন? আপনাদের দেশের গবেষকরা বলছেন শতকরা ৫০ ভাগের ঊর্ধ্বে উপরে ভারতে কোনো স্যানিটেশন নাই, রেললাইনের ধারে, রাস্তার ধারে মানুষ বাথরুম করে। আমাদের পাখিরা তো পরিষ্কার-পরিছন্ন। তারা কেন ইন্ডিয়াতে যাবে।
এসময় বিএনপির এই শীর্ষনেতা হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, জিয়ার রহমানের নাম সবার হৃদয়ে আছে। কয়েকজন সন্ত্রাসী-মাফিয়া খেতাব বাতিলের কথা বললে জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক অবদান মুছে যাবে না।
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) থেকে একটি খবর পড়ে আমার মনটা খুব খারাপ। আজকে (বুধবার) গাড়ির ভিতরে আসতেও খবরটি পড়লাম, আমার একটা ধারণা ছিল আওয়ামী লীগ বেশ বড় ধরনের চোর তারা বাংলাদেশ ব্যাংক চুরি করেছে, সোনালী ব্যাংকে চুরি করেছে, তারা বেসিক ব্যাংকে চুরি করেছে তারা বায়ান্নটি ক্যাসিনো করেছে যাদের অর্থমন্ত্রী চার হাজার কোটি টাকা চুরিকে বলেছে এটা কোন টাকাই না।এদের সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল এরা বড় ধরনের চোর কিন্তু গতকালকে (মঙ্গলবার) ফেনীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেছে সংবাদ সম্মেলন করে কাদের মির্জা ছিল গরু চোর। আওয়ামী লীগের নেতারা যে গরু চোর হতে পারে এইটা আমার ধারণা ছিল না আগে। এটা কিন্তু বিএনপি লোকেরা বলেননি তাদের দলের নেতারাই প্রেস কনফারেন্স করে বলেছেন যে কাদের-মির্জা ছিল গরুচোর এই খবরটা পড়ে আমার মনটা খারাপ আমার ধারণা ছিল ওরা বড় ধরনের চাের। এত নিম্নমানের চুরির সাথে আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত থাকতে পারে এই ধারণা আমার ছিলো না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আযাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/ টিএস/এসএস