নিজস্ব প্রতিবেদক : সুষ্ঠৃু নির্বাচন নয়, লুটপাটে ব্যস্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা।
এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
সিইসির কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেছেন, সিইসি নিজের আত্মা বিক্রি করেছেন। শেখ হাসিনার পা চাটছেন। আপনার লজ্জা করে না? আপনি বলে আমলা ছিলেন, আপনি বলে ডিসি ছিলেন? এত বড় ক্রীতদাস? ক্রীতদাসরাও তো মাঝে মাঝে মালিকের বিরুদ্ধে ন্যায়ের পক্ষে বিদ্রোহ করেন আর আপনার মত এই ধরনের ক্রীতদাস আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। আপনার কমিশনার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অথচ আপনি নির্বিকার। কিসের জন্য নির্বিকার? প্রধানমন্ত্রী তার পেছনে আছেন। অতএব নির্বাচন নিয়ে ভোট নিয়ে যত অনাচার যত অবিচার সব করা যাবে।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকো এবং নিউমার্কেট থানা ছাত্রদলের সাবেক ছাত্র নেতা মাহবুবুর রহমান বাপ্পির দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী আরও বলেন, উনার (নুরুল হুদার) তো সুষ্ঠু ভোটের দরকার নাই। উনার কিছু লোক প্রশিক্ষণ দেবে এর জন্য টাকা বরাদ্দ দরকার। ইভিএম মেশিন একটা জালিয়াতির মেশিন। সেই মেশিন কিনতে হবে এর জন্য টাকা দরকার এবং এই টাকা লোপাট করবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং তার অন্যান্য যারা আছেন তারা। এইটা নিয়ে ব্যস্ত তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ব্যস্ত নয়। আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা এটার জন্য দরখাস্ত করেছিলেন রাষ্ট্রপতির কাছে যে এই লোকটিকে সরিয়ে দেয়া হোক। এই লোকটি দুর্নীতিবাজ। এই লোকটি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এই লোকটি সুষ্ঠু নির্বাচনকে গোরস্থানের মধ্যে সমাহিত করেছেন। কিন্তু কোনোভাবেই কে এম নুরুল হুদা সরে যেতে চান না। সরকার মনে করে এত বড় তাবেদার এত বড় গোলাম আর তো পাওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, চট্টগ্রামের নির্বাচন নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে এখানে ফেয়ার নির্বাচন হবে কিনা। চট্টগ্রামে এই নির্বাচনকালীন সময়ে ৬৯ জন বিএনপির নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হলো কেন? আমাদের প্রার্থী ডাক্তার শাহাদাত নিজে স্টেটমেন্ট দিয়েছেন। কই আওয়ামী লীগের থেকে তো কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি? আওয়ামী লীগের কারো বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়নি। চট্টগ্রামে বিএনপির এক হাজার নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, এই সরকার যতদিন থাকবে নির্বাচন এমনই হবে। নির্বাচন কমিশনার কী? ওটা তো ফালতু। সরকারের চাকর-বাকর দিয়ে নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনার পতন করতে হবে। আর এই পতনের প্রেরণা হবে বাপ্পিরা। কারণ ওদের জীবন দিয়ে ওরা গণতন্ত্রের পতাকা হয়েছে। সেই পতাকাকে সামনে রেখেই আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।
ছাত্রদল নেতা বাপ্পির স্মৃতিচারণ করে রিজভী বলেন, বাপ্পির বোনের অশ্রু ঝরছে। কিন্তু বাপ্পির এই আর্তনাদে এদেশের কোটি মানুষের হৃদয়ের মধ্যে যে অশ্রু ঝরছে সেই অশ্রু হয়তো দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু সেই অশ্রু ঝরছে অবিরত। বাপ্পি এখন বাপ্পি নয়, বাপ্পি এখন গণতন্ত্রের পতাকা। ওই পতাকাকে সামনে রেখেই শেখ হাসিনার সিংহাসন কে ধুলায় লুটাতে হবে, এটাই হবে আপনাদের অঙ্গীকার।
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সভাপতি খন্দকার এনামুর রহমান এনামের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রবিউল আলম, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সিনিয়র সহ-সভাপতি কাজী রওনুকুল ইসলাম শ্রাবন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সাননিউজ/টিএস/আরআই