মাহমুদুল আলম: আগামী বুধবার (২৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচন। প্রচারণার সময় শেষ হয়ে আসায় করপোরেশন এলাকায় এখন সবখানে আলোচনার বিষয়, সিটি নির্বাচন।
স্থানীয় সরকারের সর্বোচ্চ সংস্থা সিটি করপোরেশন এবং দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে পরিচিত মহানগরের নির্বাচন হওয়ায় এই নির্বাচনী আলোচনা যেন গুরুত্ব পাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের মতোই। আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের আর্থিক বিষয়আশয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দল বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের হলফনামা থেকে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হলো। ধানের শীষ প্রতীকে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিনি।
হলফনামায় শাহাদাত হোসেনের সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা আছে ‘এম. বি. বি. এস’। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে ৪৮টি ফৌজদারি মামলা আছে। যার মধ্যে ৪৪টি বিচারাধীন। অন্যগুলোর একটিতে বর্তমান অবস্থা লেখা আছে ‘স্থগিত’, দুইটি ‘তদন্তাধীন’, আর অন্যটি ‘স্টে’। এছাড়া এর অতীতেও তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারী মামলা হয়, সেটিতে তিনি খালাস পান বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়।
শাহাদাত হোসেনের পেশার বিবরণীতে লেখা আছে ‘চিকিৎসক’। আর বাৎসরিক আয়ের উৎস সম্পর্কে লেখা আছে, বাড়ি/ এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া তিন লাখ ৫৩ হাজার ২৫ টাকা। ব্যবসা থেকে আয় প্রসঙ্গে লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নহে’। পেশা থেকে বাৎসরিক আয় উল্লেখ করা আছে ১৭ লাখ ২১ হাজার ৬০০ টাকা। আর প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের আয় প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নহে’।
শাহাদাত হোসেনের সম্পদের বিবরণে লেখা হয়েছে নগদ টাকা ১৫ লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৩৪ লাখ ৪৭ হাজার ২৭৭ টাকা এবং বন্ড, ঋণপত্র স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় এমন কোম্পানীর শেয়ার তিন লাখ ৭১ হাজার ৩৫০ টাকা। বাসা, ট্রাক, মটরগাড়ী ও মটরসাইকেল ইত্যাদির বিবরণীতে লেখা হয়েছে কার (ফিল্ডার-টয়োটা) মূল্য ১১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। পুরানো জীপ (ভি-৭৩ মডেল- ২০০৩) মূল্য ২৭ লাখ ২০ হাজার টাকা।
স্বর্ণ ও অন্যান্য মূল্যবান ধাতু ও পাথর নির্মিত অলংকারাদি ৭৫ হাজার টাকা। ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী উল্লেখ করা হয়েছে ২৫ হাজার টাকা করে একটি ফ্রিজ ও একটি টিভি। আসবাবপত্র উল্লেখ করা হয়েছে একটি খাট, সোফা সেট-১, আলমিরা -১, ওয়ারড্রফ-১। এসবে সর্বমোট মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৭৫ হাজার টাকা।
এছাড়া ৩০/৬/২০১৯ইং তারিখের স্থিতি অনুসারে দ্যা ট্রিটমেন্ট হেলথ কেয়ার এন্ড দ্যা ট্রিটমেন্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবসায়িক মূলধন ৩ কোটি ২৮ লাখ ৯০ হাজার ৬০০ টাকা।
এসব বিষয়েও শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী এবং প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের নামের ঘরে কিছু লেখা হয়নি।
প্রার্থীর স্থাবর সম্পদের বিবরণে লেখা হয়েছে, অকৃষি জমি ১৮ শতক বা নয় গন্ডা মূল্য ১৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং দেড় কাঠার মূল্য ছয় লাখ ৬০ হাজার টাকা। আট তলা বিশিষ্ট দালানের এক-অষ্টমাংশ, মূল্য ৬৭ লাখ ৮৬ হাজার টাকা। বাড়ি/এপার্টমেন্টের হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এপার্টমেন্ট-১, মূল্য ৩৫ লাখ টাকা। তবে স্থাবর সম্পদের বিবরণেও প্রার্থীর স্ত্রী এবং প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের নামের ঘরে কিছু লেখা হয়নি।
প্রার্থীর দায়-দেনার ঘরে লেখা হয়েছে, ব্যাংক ঋণ: উত্তরা ফাইন্স ইনভেষ্টমেন্ট লি: তিন কোটি দুই লাখ ২৫ হাজার টাকা, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক লি: ২৯ লাখ ৮১ হাজার ১৩২ টাকা ৮৪ পয়সা এবং অন্যান্য দুই লাখ ৪৬ হাজার ৩১৩ টাকা।
এতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ এবং পুনঃতফসিল করণ করা হইয়া থাকিলে উহার সর্বশেষ তারিখের ঘর দুটিতে কিছু লেখা নাই।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারী এই হলফনামায় স্বাক্ষর করেন শাহাদাত হোসেন।
সান নিউজ/আরআই