মাহমুদুল আলম : আগামীকাল (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন। এতে মেয়র পদে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির মনোনয়নে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন কামাল উদ্দিন চৌধুরী। আর আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আবদুল কাদের মির্জা। যিনি দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই।
স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনি প্রচারণায় নেমে কাদের মির্জার বলা নানা কথার মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে আলোচনায় উঠে আসে বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন। যেমন গত রোববার নির্বাচনী এক পথসভায় তিনি বড় ভাই ও স্থানীয় সংসদ সদস্য ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘এখানে জিততে হলে তার আমাদের লাগবে। সামনে জিততে হলে উনাকেও সতর্ক হতে হবে। এত সহজ নয়, কঠিন ব্যাপার। বউ-টউ সামলাতে হবে। আর উনার সঙ্গে যারা হাঁটেন, তারা কার থেকে মাসোহারা পান, তার খোঁজখবর নিতে হবে।’
এসব কথার মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সময় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের বিত্ত-বৈভব নিয়ে কথা তোলেন। স্থানীয় নির্বাচনী মাঠ, সামাজিক মাধ্যম বা ঘরোয়া আলোচনায় একাধিক বারের পৌরমেয়র আবদুল কাদের মির্জার আর্থিক বিষয় নিয়েও কথা বার্তা হয় এসবের মধ্যে। এর পরিপ্রেক্ষিতে তার হলফনামা থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাননিউজ । গতকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনের শিরোনাম ‘বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন: কাদের মির্জার হলফনামায় কী আছে?’
হলফনামা থেকে প্রতিবেদন প্রকাশের ধারাবাহিকতায় আজ প্রকাশ হলো কামাল উদ্দিন চৌধুরীর হলফনামা থেকে প্রতিবেদন।
নোয়াখালী বারের আইনজীবী এ.আর. বেলাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর (নোটারী পাবলিক) গত ১৯ ডিসেম্বর তারিখে স্বাক্ষর করা এই হলফনামায় প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীর শিক্ষাগত যোগ্যতার ঘরে লেখা হয়েছে ‘স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন’।
তিনি কোন ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত কিনা? এই বিষয়ে হলফনামায় লেখা আছে ,প্রযোজ্য নয়’। তবে অতীতে তার বিরুদ্ধে তিনটি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়। এরমধ্যে দুইটি বিচারাধীন আছে, আর অন্যটি থেকে অব্যাহতি পেয়েছেন তিনি।
প্রার্থীর ব্যবসা/পেশার বিবরণীতে লেখা হয়েছে, ‘স্বত্বাধীকারী: তানহা ভবন, কলেজ রোড, বসুরহাট, উক্ত ভবনের বিভন্ন অংশ ভাড়া দেওয়ার প্রেক্ষিতে আয় করি। পৈত্রিকসূত্রে প্রাপ্ত কৃষি জমি থেকে আয় করি।’
প্রার্থী কামাল উদ্দিন চৌধুরীর বাৎসরিক আয়ের উৎসের বিবরণে লেখা হয়েছে, কৃষিখাত থেকে ১৮ হাজার টাকা, বাড়ি/এপার্টমেন্ট/দোকান বা অন্যান্য ভাড়া সাত লাখ ১৬ হাজার ৪৮৪ টাকা। উভয় ক্ষেত্রে তার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের ঘরে লেখা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নয়’। তাছাড়া ব্যবসা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত, পেশা (শিক্ষকতা, চিকিৎসা, আইন, পরামর্শ ইত্যাদি), চাকুরী এবং অন্যান্য খাতে প্রার্থীর নিজের এবং তার উপর নির্ভরশীলদের আয়ের ঘরেও লেখা আছে ‘প্রযোজ্য নয়’।
তার স্থাবর সম্পত্তির বিবরণে লেখা আছে নিজ নামে নগদ টাকা ২৫ হাজার এবং স্ত্রীর নামে ৬৫ হাজার টাকা। তাছাড়া ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ নিজ নামে এক লাখ ৪৪ হাজার ২২৪ টাকা নিরানব্বই পয়সা। এক্ষেত্রে স্ত্রীর ক্ষেত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নয়’।
তাছাড়া বৈদেশিক মুদ্রা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জে তালিকাভূক্ত ও তালিকাভূক্ত নয় কোম্পানীর শেয়ার, পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয় পত্রে বা স্থায়ী আমানত বিনিয়োগ, বাস, ট্রাক, মটর গাড়ী ও মটরগাড়ী, লঞ্চ, স্টিমার বিমান ও মটরসাইকেল ইত্যাদি বিবরণীর ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজের, স্ত্রীর এবংনির্ভরশীলদের নামের ঘরে লেখা আছে, ’প্রযোজ্য নয়।’
তার নিজ নামে আট তোলা স্বর্ণ এবং স্ত্রীর নামে পাঁচ তোলা স্বর্ণ আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ আছে। ইলেকট্রনিক সামগ্রী নিজ নামে এক লাখ টাকার এবং আসবাব পত্র নিজ নামে ২০ হাজার টাকার আছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। এসব ক্ষেত্রে প্রার্থীর স্ত্রীর বা প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের নামের ক্ষেত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নয়।’
স্থাবর সম্পদের ক্ষেত্রে নিজ নামে লেখা হয়েছে কৃষি জমি দেড় একর এবং দালান, আবাসিক / বাণিজ্যিক ৫২ লাখ ২৫ হাজার টাকার (তানহা ভবন)। উভয় ক্ষেত্রে তার স্ত্রী এবং প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের ক্ষেত্রে লেখা হয়েছে ‘প্রযোজ্য নয়’।
এছাড়া অকৃষি জমি,বাড়ি/এপার্টমেন্ট, চা বাগান, রাবার বাগান, মৎস খামার ইত্যাদির ক্ষেত্রে প্রার্থীর নিজের, স্ত্রীর এবং প্রার্থীর উপর নির্ভরশীলদের ক্ষেত্রে লেখা হয়েছে ,’প্রযোজ্য নয়’।
সান নিউজ/এমএ/এস