নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জামায়াতীকরণ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, এটা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়।
আরও পড়ুন : ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণ করা হবে
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাব অডিটোরিয়ামে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজ এক বিশেষ দল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিশেষ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দখল করে নিয়েছে। সব বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়কে জামায়াতীকরণ করা হয়েছে। পত্রিকায় নিউজ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে জামায়াতীকরণ করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়। বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে জামায়াতী চেতনার লোকজনকে বসানো হয়েছে। আমাদের সমর্থিত লোকজন যেমনিভাবে আওয়ামী লীগের আমলে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনিভাবে এখনো বঞ্চিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বলেছে, রাষ্ট্র এবং সরকারের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না। এগুলো তো হাসিনার কথার প্রতিধ্বনি। হাসিনা সরকার এবং রাষ্ট্রকে এক করে দিয়েছে। এই সরকার তো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ফসল। আর গণতন্ত্র মানেই হচ্ছে, আলোচনা-সমালোচনা হবে এবং সরকার সব শুনবে। এরপরে জনকল্যাণের পক্ষে যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার, সেসব সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুততা ও দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়ন করবে। এটাই তো সরকার। রাষ্ট্র আলাদা জিনিস। রাষ্ট্রের বিরোধিতা অপরাধমূলক। কিন্তু সরকারের বিরোধিতা তো অপরাধমূলক নয়। সরকারের বিরুদ্ধে যত সমালোচনা হবে, সেই সরকার যদি সৎ এবং জনগণের মুখাপেক্ষী সরকার হয়, তাহলে সেই সরকার সমালোচনাকে গ্রহণ করবে। অথচ মাউশি বলে দিলো, সরকার এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিছু বলা যাবে না।
আরও পড়ুন : ২০২৪ সালে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ১৪০
রিজভী বলেন, জনপ্রশাসন সচিবের নামে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগের পরও তিনি কী করে দায়িত্বে বহাল থাকেন তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন রিজভী।
তিনি বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নানাভাবে মনে করছে, জুলাই-আগস্টের বিজয় শুধু তাদের। এই অন্তবর্তীকালীন সরকার তাদের সরকার। আমাদের মনে হয়, কোনো করণীয় ছিল না। কোনো অবদান নেই। আমরা ১/১১ এর সরকারকে বলতাম সেনা সমর্থিত সরকার। আর এখন অনেকেই বলছেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সেই বিশেষ দল সমর্থিত সরকার। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে সেটা প্রমাণ হচ্ছে।
আরও পড়ুন : সাত কলেজের আন্দোলন প্রত্যাহার
অন্তর্বর্তী সরকার বিপ্লবী সরকার হওয়ার কথা ছিল উল্লেখ করে রিজভী বলেন, সব দোসরদের উৎপাটন করে জনগণের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছিল তাদেরকে দিয়েই তো প্রশাসন চলার কথা। সেই দোসররা আবার সচিবালয়ের ভেতরে মিছিল করে, দাবিদাওয়া পেশ করে। তারা মনে করছে এটা তাদের ন্যায্য পাওনা। পৃথিবীর বহু দেশে বিপ্লবের পর থেকে পুরোপুরি নতুন কাঠামো তৈরি করে সেখানে নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থা হয়েছে। আজকে কী করে সচিবালয়ের ভেতরে সেই পুরোনো দোসরদের লোকেরা আন্দোলন করে এবং ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয়? এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করেনি। আবার ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের বিষয়টিও গণবিরোধী আমলাদের পরামর্শে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টে যে জনস্রোত সৃষ্টি হয়েছে, এর ভিত্তি রচনা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমান। বেগম খালেদা জিয়া শেখ হাসিনার সাথে কখনোই আপস করেননি।
সান নিউজ/এমআর