নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঝালকাঠি: পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিচুর রহমান তাপুর সহযোগী হিসেবে এক নারীকে নির্যাতন চালিয়ে চুল কেটে দেওয়া এবং বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে থাকা শহীদ মিনার ভেঙে মার্কেট করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কয়েকজনের নামে দোকান বরাদ্দ দেওয়া ঝালকাঠি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকাকে বহিষ্কার করা হচ্ছে দল থেকে।
তার বিরুদ্ধে এসব বহু বিতর্কিত অভিযোগের সত্যতা পেয়েই বহিষ্কারের প্রস্তাব নিয়ে কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ।
সোমবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে শহরের টাউন হলের দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভার সিদ্ধান্ত রেজুলেশন করে কেন্দ্রে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শহিদুল ইসলাম।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সহ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও সালাহউদ্দিন আহম্মেদ সালেক, জেলা কৃষকলীগের সভাপতি আবদুল মান্নান রসুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক আকন্দ, তরুণ কর্মকার, প্রচার সম্পাদক এম আলম খান কামাল ও দপ্তর সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
সভায় উপস্থিত কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা জানান, শারমিন মৌসুমি কেকার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতেই জেলা আওয়ামী লীগ জরুরি সভাটি করেছে। দলের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে শারমিন মৌসুমি কেকা সংগঠনবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছেন। বিভিন্ন অপকর্ম করে জেলা আওয়ামী লীগের সুনাম ক্ষুন্ন করছেন তিনি। সভায় অংশ নেওয়া নেতারা কেকাকে দল থেকে বহিষ্কার করার জন্য সুপারিশ করেন।
ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর নির্দেশেই এ সভা আহ্বান করা হয়েছে বলেও দলীয় একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত ৩০ আগস্ট এক নারীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় ও নির্যাতনের পরে চুল কেটে দেওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শারমিন মৌসুমি কেকা ও শহর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপুসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে রাতেই সদর থানায় মামলাটি লিপিবদ্ধ হয়।
অন্যদিকে ঝালকাঠির সুগন্ধা পৌর আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ভেঙে ও খেলার মাঠ নষ্ট করে অবৈধভাবে বাণিজ্যিক মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে শারমিন মৌসুমি কেকার বিরুদ্ধে। এ দুটি ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। তার বিরুদ্ধে বিতর্কিত নেত্রী পাপিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও রয়েছে। এমন কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার মো. শাহ আলম বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে কেকাকে দল থেকে বহিষ্কারের। আমরা রেজুলেশন করে কেন্দ্রে পাঠাবো। তারাই ব্যবস্থা নেবেন।
সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. খান সাইফুল্লাহ পনির বলেন, ‘আমি ঢাকায় ডাক্তারের চেম্বারে আছি, পরে কথা বলবো।’
সান নিউজ/ এআর