নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল: বরিশাল থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলাদেশ বাণী পত্রিকার সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা ও কার্যালয়ে পুলিশি অভিযানের পর এবার পত্রিকাটির কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান বাচ্চুকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
রাজনৈতিক বিরোধের জেরে বাচ্চুর কর্মস্থল বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগে সশস্ত্র হামলা চালান মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা। তারা বাচ্চুকে মারধর ও কুপিয়ে জখম ছাড়াও তার মোটরসাইকেলসহ বিভাগের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। ওই বিভাগের স্টাফ আহত বাচ্চুকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন সহকর্মীরা।
এর আগে সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ বাণী পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক ও বিএম কলেজের সাবেক ভিপি মঈন তুষারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাজিব খান। পরদিন মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) কোতোয়ালি থানা পুলিশ পত্রিকাটির কার্যালয়ে অভিযান চালায়।
সমাজকল্যাণ বিভাগের প্রধান প্রফেসর আব্দুস সবুর বলেন, ‘মুখোশধারী ২০/২৫ জন ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র ও রড নিয়ে বিভাগে প্রবেশ করেন। তারা প্রথমে আমাদের স্টাফ মিজানুর রহমান বাচ্চুর মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তারপর তারা দ্বিতীয়তলায় উঠে বাচ্চুকে মারধর ও কুপিয়ে জখম করেন। পাশাপাশি বিভাগের অফিসে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। মুখোশধারীরা দুইটি টিভি, কম্পিউটারসহ আমার অর্থাৎ বিভাগীয় প্রধানের রুম এবং সকল চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে। পুরো ডিপার্টমেন্ট লণ্ড-ভণ্ড করে ফেলেছেন। পরে তারা সিসিটিভির রেকর্ড ও মেশিন নিয়ে যান। বাচ্চুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
হামলার কারণ সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. গোলাম কিবরিয়া। তিনি বলেন, ‘কারা এবং কেন হামলা করেছেন, সেই বিষয়টি আমরা জানি না। পুলিশ তদন্ত করছে এবং এই ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আহত মিজানুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘হঠাৎ করে এই মুখোশধারীরা কেন এবং কি কারণে হামলা চালিয়েছেন, জানি না এবং আমি কাউকে চিনি না।’
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
বাংলাদেশ বাণী পত্রিকার সম্পাদক-প্রকাশক মঈন তুষার বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত শওকত হােসেন হিরণ ও জেবুন্নেছা আফরোজ এমপির অনুসারী। দীর্ঘদিন ধরেই সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহর গ্রুপের সঙ্গে হিরণ-জেবুন্নেছা গ্রুপের স্নায়বিক বিরোধ চলে আসছে। তবে সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহ মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর রাজনীতি থেকে নিজেকে আড়াল করে রাখেন মঈন তুষার।
তারপরও মঈন তুষার ও তার সহকর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগ উঠছে মেয়র গ্রুপের বিরুদ্ধে।
সান নিউজ/ এআর