বি. খন্দকার: আন্ডার মেট্রিক পাসরা প্রবাসে যায়! "মেট্রিক ফেইলের পাত্রীর যোগ্য পাত্র নাকি প্রবাসীরাই!
আরও পড়ুন: "সুশিক্ষা ও চাকরি"
স্টেজে উঠে গন্ড মূর্খের মতো কথাটি বলে প্রবাসীদেরকে নিয়ে তামাশা করেছেন কোটায় নিয়োগ পাওয়া বগুড়ার সরকারি শাহ সুলতান কলেজের "হাইব্রিড বি.সি.এস ক্যাডার শিক্ষক মিস্টার গোলাম রাব্বানী। একজন শিক্ষকই যদি এমন মূর্খের মতো কথা বলে তাহলে সেই জাতির উন্নতি কিভাবে হবে?
আপনাদের মতো হাইব্রিডরাই যুবক ধ্বংসের মূল কারণ। আপনাদের এসব সস্তা চিন্তা-ভাবনাই ২৫ লক্ষ বেকারের মূল কারণ। আপনি প্রবাসীদেরকে নিয়ে যেই মন্তব্য করেছেন আপনি কি জানেন এই প্রবাসীদের অর্থেই এসব বি.সি.এস ক্যাডারদের বেতন দেয়া হয় এবং আপনার বেতনও দেওয়া হয়?
কিসের এতো অহংকার আপনার? যেই প্রবাসীদের রক্ত ও ঘামের অর্থে আপনার বেতন দেওয়া হয় আপনি সেই প্রবাসীদেরকে অপমান করার সাহস কিভাবে পেলেন!!
আরও পড়ুন: “আমি একজন সাধারণ প্রবাসী”
দেশে পাঁচতলা বাড়ি সব প্রবাসীরা বানাতে পারেনা, আর যেই প্রবাসী প্রবাস থেকে টাকা পাঠিয়ে দেশে পাঁচ তলা উঠাতে পারে তাদের সামনে গিয়ে দেখেন আপনার মতো কয়টা ক্যাডার তাদের প্রতিষ্ঠানের বেতনভুক্ত কর্মচারী। আপনার মতো কয়টা ক্যাডার তাদের পকেটে আছে খোঁজ নিয়ে দেখেন। তাদের সামনে গিয়ে কথা বলার যোগ্যতাও আপনাদের মতো হাইব্রিড শিক্ষিতদের আছে কিনা আমার সন্দেহ আছে।
আপনার কথার মধ্যেই আপনার নিজের পরীক্ষার রেজাল্ট স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে আপনি কোন লেভেলের শিক্ষক। প্রবাসীরা শুধু এক মাস রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে দিলে আপনার মতো হাইব্রিড ক্যাডারদের বাসার চুলার ওপর বিড়াল ঘুমাবে সেটা কি জানেন? বাংলাদেশের অর্থনীতির মেরুদন্ডই হচ্ছে এই প্রবাসী আর আপনি তাদেরকে নিয়ে স্টেজে উঠে তামাশা করছেন! তাদেরকে অপমান করেছেন কোন সাহসে? WHO THE HELL ARE YOU!
বাংলাদেশের সব মেধা যে দেশের বাহিরে স্কিল মাইগ্রেশন ভিসায় সেটেল আর যারা বাহিরে চান্স পায়না তারাই দেশের বিভিন্ন কোম্পানিতে পরে আছে সেটাকি জানেন? হাজার হাজার এপ্লিকেশন প্রতি সপ্তাহেই জমা পড়ছে যাদের যোগ্যতা আপনার চেয়েও কয়েকগুন বেশি। আপনি নিজেই এপ্লিকেশন জমা দিয়ে দেখেন চান্স পান কিনা। সব জায়গায় "কোটার ডিব্বার সুবিধা পাওয়া যায়না, যদি এই মেধাগুলো প্রবাসে না গিয়ে দেশে থাকতো তাহলে আপনার মতো কোটায় নিয়োগ পাওয়া হাইব্রিড ক্যাডাররা চাকরি তো দূরের কথা দু’বেলা ঠিকমতো ভাতও পেতেন না।
আরও পড়ুন: ইমাম ও গ্রামবাসীকে কথা দিয়ে রাখতে পেরেছি
প্রবাসীদের সম্পর্কে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন না করে মূর্খের মতো কিসের সাথে কি তুলনা করছেন আপনি? অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা, কানাডা বা ইংল্যান্ডের সব কর্পোরেট গুলোর হাই-এন্ড পজিশনের জব বাঙালিরাই করছে।
ইউনিভার্সিটির প্রফেসর থেকে শুরু করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেক্ট, ব্যাবসায়ী, বিজ্ঞানী, পুলিশ ডিপার্টমেন্ট, ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট এমন কোনো ডিপার্টমেন্ট নেই যেখানে বাঙালির ভালো অবস্থান নেই। আর আপনি বলছেন কোনোমতে ক্লাস এইট পাশের নকল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে প্রবাসে যায়! তাহলেতো প্রবাস সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণাই নেই। আমারতো সন্দেহ হচ্ছে আপনি জীবনে ঢাকা শহরও ঠিকমতো ঘুরে দেখেছেন কিনা!!
অবশ্য প্রবাস সম্পর্কে আপনার মতো হাইব্রিড লোকজনের ধারণা থাকার কথা নয়, কারণ এগুলো আপনার মতো হাইব্রিড লোকজনের লেভেলের বাহিরে। আপনার পারিবারিক স্টেটাস, আপনার নিজের স্টেটাস, আপনার পূর্ব পুরুষের স্টেটাসও আপনার কথাতেই পরিচয় আপনি কোথা থেকে উঠে এসেছেন। আপনিতো স্পষ্টভাবে শুদ্ধ বাংলাই ঠিকমতো বলতে পারেন না।
আরও পড়ুন: আমাদের ঐতিহ্য “ বানিয়ারা”
আপনি যাদের কথা তুলে ধরছেন আপনি নিজেই তাদের চেয়েও জঘন্য। সবার আগে আপনার নিজের দৃষ্টি ভঙ্গি পাল্টান। এতো ক্যাডার ক্যাডার কইরেন না। সবার শেষে সরকারি চাকরি মানেই পাবলিক সার্ভেন্টের জব। জনগণের টাকায় জনগণের গোলামী করার জন্য আপনাকে রেখেছে সরকার। এতো হাই ডিমান্ড না যতটা আপনারা নিজেদেরকে জাহির করার জন্য বাড়িয়ে বলেন।
আপনি সকল প্রবাসীদেরকে ছোট করেছেন আপনার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়া উচিত। যদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই মামলার আসামি হতে হয় তাহলে সরকার ও দেশের অর্থ যোগানদারী প্রবাসীদেরকে অপমান করার দ্বায়ে আপনাকে আপনার চাকরি থেকে বরখাস্ত এবং সবার সামনে এসে ক্ষমা কেন চাওয়ানো উচিত।
যাদের টাকায় আপনি আপনার স্ত্রী, সন্তান ও পিতামাতাকে খাওয়ান আপনি তাদেরকেই অপমান করেছেন। বি.সি.এস করে কি এমন কাজ করেছেন? ২৫ লক্ষ বেকার আপনারাই বানিয়েছেন কারণ আপনাদের মধ্যে শিক্ষা ছাড়া অন্য কোনো জ্ঞান নেই। আপনাদের মতো লোকজনের জ্ঞানসীমা খুবই অল্প যার কারণে ওই চাকরি ছাড়া কোনো কিছুই আপনাদের মাথায় ঢুকেনা।
আরও পড়ুন: রূপ আর রান দেখিয়ে দুনিয়া চলেনা
আপনাকে সকল প্রবাসীর নিকট ক্ষমা চাইতে হবে নাহলে রাস্তা ঘাটে গেলে মানুষের ঘৃণা ছাড়া কিছুই অর্জন করতে পারবেন না। আমি আপনার সস্তা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আপনি সকল প্রবাসীদেরকে অপমান করেছেন এর জন্য জনগণের সামনে এসে সকল প্রবাসীর নিকট আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। এবং আপনার মতো সস্তা ও নোংরা মানসিকতার মানুষের শিক্ষক হওয়ার কোনোই যোগ্যতা নেই তাই আপনাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
আবারো বলছি ভালো করে মনে রাখবেন। আপনি একজন পাবলিক সার্ভেন্ট মানে জনগণের চাকর। দোকানের কর্মচারীদের যেমন মালিক থাকে তেমনি আপনার মালিক সরকার ও সরকারের অর্থ যোগানদারী হচ্ছে জনগণ, জনগণই হচ্ছে আপনার প্রতিষ্ঠানের মালিক। এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থ যোগানদাতা হচ্ছে এই আন্ডার মেট্রিক প্রবাসীরাই, তারমানে আপনি এই প্রবাসীদের গোলাম।
আমাদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অর্থ দিয়েই আপনাকে সরকার রেখেছে আমাদেরকে সেবা করার জন্য। অতএব নিজের মালিকের ওপর অহংকার করতে যাবেন না। এবার আপনার পজিশন বুঝে পেয়েছেন তো? যাদের নুন খান তাদের গুণ গাওয়া শিখেন।
আমরা প্রবাসীরা নিজের দেশ, পরিবার, স্ত্রী,সন্তান, পিতা মাতা ,আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু বান্ধবের মায়া ত্যাগ করে প্রবাসে দিন রাত পরিশ্রম করে দেশে টাকা পাঠাই যেনো আপনার মতো সরকারি গোলামদের ঘরের সন্তানদের পেটেও ভাত যায়।
আপনি একজন সম্মানিত শিক্ষক, আপনার কাজ জ্ঞান ছড়ানো, ঘৃণা ছড়ানো নয়।
একজন প্রবাসী" একজন রেমিট্যান্স যোদ্ধা" আপনার বেতনের অর্থ যোগানদাতা"
লেখক:
প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি
ইউনাইটেড গ্লোরি অব বাংলাদেশ (ইউজিবি)