ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল: এখন চৈত্রের শেষ দিক। বৈশাখ আসি আসি করছে। এর মধ্যেই শুরু হয়ে গেছে প্রচণ্ড তাপ প্রবাহ। আবহাওয়াবিদদের মতে তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে
তার উপর চলছে রমজান মাস। এই প্রচণ্ড তাপ প্রবাহে শিশুসহ সবারই নাভিশ্বাস উঠে গেছে। প্রচণ্ড তাপ প্রবাহের একটা মারাত্মক দিক হচ্ছে হিট স্ট্রোক।
বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষ, গার্মেন্টস কর্মী, খোলা মাঠে কৃষিকাজ যারা করেন এবং প্রচণ্ড তাপদাহে যারা রিকশা ও যানবাহন চালান তারাই বেশি হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এই হিট স্ট্রোকের ফলে অনেক সময় মৃত্যুও হতে পারে। তাই আমাদেরসব সময় সতর্ক থাকতে হবে।
আরও পড়ুন: বায়তুল মোকাররমের মার্কেটে আগুন
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ সমূহ—
• শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে ১০৪ থেকে ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যায়।
• প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়।
• বমি বমি ভাব দেখা দেয়।
• গায়ের চামড়া লাল, শুকনো খসখসে হয়ে যায়।
• পালস ভলিউম বেড়ে বা কমে যায়।
• অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোয় বন্দুক হামলায় নিহত ৭
হিট স্ট্রোকের পর করণীয়—
• শিশুদের যথাসম্ভব বাসা থেকে কম বের করা উচিত।
• বাসার পরিবেশ ভ্যাপসা যাতে না থাকে এবং বৈদ্যুতিক পাখা, এয়ার কুলার, এসি এসবের ব্যবস্থা থাকলে ভালো হয়।
• শিশুদের পাতলা, সুতির আরামদায়ক পোশাক পরানো দরকার।
• প্রতিদিন ঠান্ডা জলে গা ধুতে হবে।
• প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সহজ পাচ্য খাবার, তরল খাবার, ফলের রস রাখা দরকার।
• বাসা থেকে বের হলে অবশ্যই ছাতা, সানগ্লাস পরা উচিত।
• সবসময় খাবার জল সাথে রাখা দরকার।
• হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত ছায়ায় সরিয়ে নিতে হবে।
• তার পোশাক আষাক ঢিলে ঢালা করে দিতে হবে।
• বরফ বা ঠান্ডা পানি শরীরের ভাঁজে, গলার নিচে বগল বা কুচকিতে লাগাতে হবে এবং চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
• প্রচুর বিশুদ্ধ পানি, ফলের রস পান করানো উচিত।
• যদি উন্নতি না হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
এই তাপ প্রবাহে হিটস্ট্রোক যে কারোরই হতে পারে। তাই সাবধান থাকুন এবং নিরাপদ থাকুন। সচেতনতাই মুক্তি।
ডা. রিজওয়ানুল আহসান বিপুল ।। সহকারী অধ্যাপক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউট