ড. খন্দকার এ হাফিজ : ডেইলি ষ্টার পত্রিকা আমাদের দেশের পতাকাবাহী বিমানের উপর একটি চমকদার সংবাদ ছেপেছে। গত বছর বাংলাদেশ বিমান তার বোয়িং ৭৭৭ চালানোর জন্য ১৪ জন পাইলট এর ঘাটতি মেটাতে জরুরি ভিত্তিতে চুক্তিভিত্তিক পাইলটদের একটি ব্যাচ নিয়োগ করেছিল।
আরও পড়ুন : “আমি একজন সাধারণ প্রবাসী”
এক বছর পর দেখা গেল ১৪ জনের পাইলটের ব্যাচের মধ্যে মাত্র পাঁচজন কৃতকার্য্য হয়েছে। বাকি ৯ জনের মধ্যে কয়েক জনের ছিল জাল সার্টিফিকেট, কারো ছিল বিমান চালনায় অযোগ্যতা এবং কেউ ছিল বিমান চালনার লাইসেন্সিং পরীক্ষায় ফেল।
বোয়িং ৭৭৭ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আধুনিক প্যাসেঞ্জার বিমান আর সেটির পাইলট নিয়োগে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে ভাবুন আমাদের বিমান কাদের হাতে?
বাংলাদেশের এই বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ অযোগ্য পাইলটদের নিয়োগ দিয়েই ক্ষান্ত হন নাই তারপর আবার সেই নিয়োগকৃত পাইলটদের বাংলাদেশ বিমানের খরচে থাইল্যান্ড পাঠিয়ে ট্রেনিং করিয়েছে।
আরও পড়ুন : "সুশিক্ষা ও চাকরি"
অথচ উচিত ছিল কঠিন পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে সবচাইতে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া যেন যোগ্য পাইলটদের হাতে যাত্রীদের জীবন নিরাপদ থাকে এবং তাদের পেছনে বিমানকে আর কোন খরচ করতে না হয়।
বাংলাদেশ বিমানের পাইলট হিসাবে যোগদানের আবেদন করার জন্য যোগ্যতার বিভিন্ন শর্তাবলীর মধ্যে একটি অন্যতম শর্ত হচ্ছে প্রার্থীকে অবশ্যই বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হতে হবে।
অথচ এই ১৪ জনের মধ্যে একজন মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী হয়েও বিজ্ঞান বিভাগ এর ভূয়া সার্টিফিকেট দিয়ে আবেদন করে নিয়োগ পেয়েছিল এবং পরবর্তীতে বিমানের খরচে থাইল্যান্ডে ট্রেনিংও সম্পন্ন করেছে।
আরও পড়ুন : রূপ আর রান দেখিয়ে দুনিয়া চলেনা
সাদিয়া নামের সেই মেয়ে নাকি বিমানের চিফ অব ট্রেনিং ক্যাপ্টেন সাজিদ আহমেদের স্ত্রী। ধরে নেওয়া যায় ১৪ জনের প্রায় প্রত্যেকেই হয় টাকা না হয় আত্মীয়তা কিংবা প্রভাবশালী কোন কর্তাব্যক্তির তদবীরে চাকুরীতে যোগদানের সুযোগ পেয়েছিল।
এইসব জানার পর মানুষ কেন জীবনের রিস্ক নিয়ে বিমানে চলবে? এই recruitment process-এ যারা ছিল তাদের সবাইকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনা উচিত। এরা জাতির সাথে বেঈমানি করেছে।
বিমানের বিপুল টাকার অপচয় করিয়েছে এবং যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি বাড়িয়েছে। এমনি এমনি কি আর বিমানের এই দুরবস্থা।
আরও পড়ুন : গণম্যাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্য ও সিন্ডিকেট দৌরাত্ম্য
একসময় বাংলাদেশ বিমান এর অনেক সূনাম ছিল। বিমানে যারা চাকুরী করতেন সমাজে তাদের একটা সম্মান ছিল।
একই কথা আমাদের টেলিটকের, আমাদের রেলের, আমাদের সব কিছুর। সব কিছুই এখন বাটপার লোকজনের কবলে চলে গিয়েছে।
লেখক :
উপদেষ্টা সম্পাদক, দৈনিক বাঙ্গালীর কন্ঠ