মহীয়সী নেত্রী
মতামত

বিশ্বের এক মহীয়সী নেত্রী

প্রফেসর ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী

জননেত্রী শেখ হাসিনা, যিনি জনকল্যাণের ব্রত নিয়ে গণতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপরিচালনা করে চলেছেন- অতিমারীকালীন সময়ে এবং তার পূর্বকালে, তার ঔদার্য, শাসক হিসেবে সক্ষমতা, মানবীয় গুণাবলীর আধাররূপে সর্বমহলে স্বীকৃত। রাষ্ট্র পরিচালনায় তার ন্যায়পরায়ণতা, বিচক্ষণ কূটনৈতিক জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং মানব মর্যাদা সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যে তাৎপর্যমণ্ডিত ভূমিকা তিনি রেখে চলেছেন সেজন্য বাংলাদেশের জনসাধারণ প্রত্যক্ষ ভোটে তাকে বারবার নির্বাচিত করেছেন এবং সংসদীয় গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে তিনি চারবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জাতীয় সংসদ দ্বারা নির্বাচিত হয়েছেন। আসলে বাংলাদেশকে সামাজিক অর্থনৈতিকভাবে বলশালী করতে বঙ্গবন্ধুর মধ্যে যে সাহসী ভূমিকা ছিল তাই আবার তাঁর কন্যার মধ্যেও জিন ফ্যাক্টর হিসেবে অত্যন্ত শক্তিশালী হিসেবে রূপায়িত হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মহীয়সী নেত্রী হিসেবে দেশে ও সমগ্র বিশ্বে সমাদৃত করেছে। তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকা গ্রহণ করেছেন। তিনি মেহনতী মানুষের সংগ্রামী জীবনকে সহজ করে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছেন। দেশের মানুষের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছেন। আমরা মিয়ানমারের অং সান সু চিকে দেখেছি কিন্তু তিনি তার দেশের বিভেদ সঞ্চার করেছিলেন এবং তার দেশের নাগরিকদের আমাদের দেশে পাঠিয়ে অন্যায় করেছেন। মানবহিতৈষী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন। সুন্দরভাবে করোনাকালে যাতে জীবন ও জীবিকার মাধ্যমে মেলবন্ধন ঘটানো যায় সে জন্য সকল ধরনের প্রয়াস শেখ হাসিনা গ্রহণ করেছেন। অন্যদিকে জীবন ও শিক্ষা- এ দুইয়ের দ্বন্দ্বকে তিনি তার সহজাত জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিদীপ্ততার সাথে সমন্বয় করে ধীরে ধীরে অতিমারী প্রকট কমতে থাকায় স্কুল-কলেজ পর্যায়ক্রমে খোলার জন্য গত ১২ সেপ্টেম্বর ব্যবস্থা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহ যাতে ধীরে ধীরে খুলে তার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। একই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মান্য করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিছু সংখ্যক লোক স্বাস্থ্যবিধি মানছে না যেটা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি আধুনিক বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন যেগুলো দেশকে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে সহায়তা করবে। ডেল্টা প্ল্যানটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করার মতো লোকের অভাব হচ্ছে না। এই সমস্ত দুর্বিনীতদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা বাঞ্ছনীয় হয়ে পড়েছে। শেখ হাসিনা সূর্যের আলোর মতো জ্বলছেন। তার আলোয় অন্যরা আলোকিত হচ্ছে। অথচ যারা গিরগিটির মতো, মোশতাক-জিয়া-চাষীর মতো বারবার রং পাল্টাচ্ছেন তাদের অবশ্যই দ্রুত বিচারের আওতায় আনা উচিত। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বর্তমানে যে জনপ্রিয়তা তা তাকে মানুষের অর্থনৈতিক দুঃখকষ্ট লাঘবে ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এক অসীম সাহসিকা জননীর ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছেন। একজন অর্থনীতির ছাত্র হিসেবে, সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে এবং আইটি বিশেষজ্ঞ হিসেবে আমি মনে করি প্রতিটি স্তরে স্তরে শেখ হাসিনার যে ভূমিকা তার সাথে কারোর তুলনা চলে না এ দেশে। একদিকে তার মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সেই অনমনীয় বাঙালিদের জন্য তীব্র ভালোবাসা এবং দেশকে হায়ানাদের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য কঠিন সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করার শক্তি অন্যদিকে বঙ্গমাতার বাঙালিদের প্রতি যে আন্তরিকতা ও প্রীতি- এই দুয়ের মিশেল এজন্যই শেখ হাসিনা আজ বিশ্ব নেতৃত্বে পরিণত হয়েছেন। নিজের দেশ ছাড়িয়ে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে এক অনন্য নেত্রী। মাঝে মাঝে ভাবি শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই এবং তিনি যেভাবে দেশ পরিচালনা করছেন তা সত্যিই অতুলনীয়। সম্প্রতি সচিবদের সাথে এক বৈঠকে তিনি সার্বিকভাবে দেশের জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছেন এবং কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন। যাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছেন তারা যেন কথা ও কাজের মধ্যে মিল রাখেন। এমন না হয় মুখে মধ্যম ও নিম্ন ব্যবস্থাপকরা অনেক কিছু বলে ফেলেন কিন্তু বাস্তবে তা যেন প্রতিফলন ঘটান। কেউ যদি প্রতিফলন না ঘটান সে যত বড় লোকই হোক তাকে শাস্তির আওতায় আনা দরকার। শেখ হাসিনা জানেন অতিমারীর সময় কিছুটা হলেও বৈশ্বিক যোগাযোগ হ্রাস পেয়েছে- সে জন্য কৃষির উন্নয়নকে মূল উপজীব্য করে লাগসই প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর তিনি গুরুত্বারোপ করেছেন। যাতে কৃষি ক্ষেত্রে আমাদের সংকটকালীন সময়ে সংকট মোকাবেলায় সহায়তা করতে পারে। স্বাস্থ্য খাতে যে সমস্ত দুর্নীতি আছে সেগুলো বন্ধ করতে তিনি দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন সেগুলো বাস্তবায়ন করা দরকার। তিনি বৃক্ষ রোপণ করার জন্য যেভাবে বলেছেন কিছু দুর্নীতিবাজ পরের জায়গায় লাগানো বৃক্ষ তুলে ফেলছে এবং মিথ্যের ফুলঝুড়িতে তারা রং পাল্টাচ্ছে অথচ ওরা প্রকৃত দেশপ্রেমিক নয়। অতিমারীর সময় তার কূটনৈতিক প্রজ্ঞার কারণে প্রতি মাসে ২ কোটির মতো টিকা ব্যবহারের নির্দেশ পাওয়া গেছে। তবে গত দুদিনের স্কুল খোলার অভিজ্ঞতায় বলা যাচ্ছে অনেক ছাত্রছাত্রীকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যাচ্ছে না এবং বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরাঁ ও রকে, ফুটপাতে বসে আড্ডা দিচ্ছে। এদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা বিচারের আওতায় নেওয়া দরকার। পাশাপাশি যেহেতু এখন অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে সেজন্য বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহকে অবশ্যই রপ্তানিমুখী পণ্যের অর্ডার আনার জন্য জোর নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া উচিত।

দেশে প্রায় দশ লক্ষ প্রবাসে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিক বর্তমানে অবস্থান করছেন। এরা যারা ফেরত যাবেন না তাদেরকে অবশ্যই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে গঠনমূলক কাজে লাগানো যায় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে হবে। একজন সত্যিকার জনদরদী রাজনীতিবিদ হিসেবে শেখ হাসিনা যাতে এলডিসি মর্যাদা ২০২৬ সালে পেতে পারে, বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে জিএসপি প্লাস যাতে বজায় থাকে এবং ট্রিপস (ঞজওচঝ) এর সুযোগ-সুবিধা, ঔষধ প্রস্তুতকারী শিল্পের জন্য বহাল রাখার কথা বলেছেন। তিনি দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পায়নের জন্য বিভিন্ন স্থানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত রপ্তানিমুখী শিল্প জোন প্রস্তুতের যে ব্যবস্থা নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। অতিমারীর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতির যত বাংলাদেশেও আবার আমদানি বিকল্পায়ন শিল্প প্রতিষ্ঠান সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিতভাবে প্রতিষ্ঠার যে প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে, সেক্ষেত্রে তার সচেতন ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। আশা করা যায়, আমদানি বিকল্পায়ন জোন প্রতিষ্ঠা হলে দেশে রপ্তানিমুখী শিল্পায়ন ও আমদানি বিকল্পায়ন শিল্পায়নের মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ সহাবস্থান তৈরি হবে। স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য আমদানি ও রপ্তানির ভারসাম্যপূর্ণ উদ্যোক্তা তৈরি হওয়ার প্রয়াস নিয়েছেন।

তিনি দেশের শিল্পায়নে রপ্তানিমুখী শিল্পায়নের বহুধা বিভক্তিকরণের জন্য অত্যন্ত দক্ষতাসম্পন্ন কর্মকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন। লাইট ইঞ্জিনিয়ানিং এবং ঔষধ শিল্পের প্রতি তার বিশেষ নির্দেশনা রয়েছে। যাতে করে রপ্তানিমুখী আয় বৃদ্ধি করা যায়। আবার দেশে যাতে ভ্যাকসিন তৈরি করা যায় সেজন্য এসেন্সিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড, যা সরকারি ঔষধ কোম্পানি তার ল্যাব গোপালগঞ্জে প্রস্তুতের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দৃঢ়তার সাথে, সম্প্রীতির সাথে টেনে চলেছেন। আবার পদ্মা সেতুতে রেলের যোগাযোগ ব্যবস্থাপনাতেও তার বিচক্ষণতার ছোঁয়া রয়েছে। ঢাকায় মেট্রো রেল তৈরির প্রকল্প আজ তাঁকে একটি বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। মানব কল্যাণে তাঁর যে ব্রত অদম্য শক্তিতে অতিমারীর সময়ে দক্ষণ কান্ডারীর মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার যে প্রয়াস তা তাকে বিরল গুণসম্পন্ন বৈশ্বিক নৈত্রী হিসাবে বিশ্বে রাষ্ট্র ব্যবস্থার পরিচিতি দিয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন, আজকের পরিবেশ পরিস্থিতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত হয়ে উঠেছে। তিনি প্রমাণ করেছেন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ তার দেদীপ্যমান নেতৃত্বগুণে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলে। কায়েমী স্বার্থবাদীদের হাত থেকে রাষ্ট্রকে বাঁচানোর জন্য গ্রেনেড হামলার পরও তিনি মৃত্যু ভয়ে ভীত না হয়ে সাহসিকতার সাথে জনগণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি একদিকে যেমন মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারায় বিশ্বাসী তার সাথে সাথে গরিব-দুঃখী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, হিজড়া, নিম্নবর্গের মানুষদের জন্য সাম্য ও বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসাবে সেফটি নেটের আওতায় নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করার প্রয়াস নিয়েছেন। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান তার গৃহীত কর্মসূচিসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করছে। তার আমলে অর্থনীতির যে উত্থান তা এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ নানা দাতাগোষ্ঠী, দেশি-বিদেশি অর্থনীতিবিদরা বলে আসছেন এবং সাধারণ জনমানুষ তা প্রত্যক্ষ করছে। এদিকে অতিমারীর কারণে সমগ্র বিশ্বের মানুষ যাতে টিকার সুযোগ পায় সে কথা বিবেচনা করে তিনি অতিমারী আটকানোর টিকাকে পাবলিক গুড হিসাবে অভিহিত করেছেন। এখানেই তার দরদী মনের মাহাত্ম্য এবং বৈশ্বিক নেত্রী হওয়ার প্রয়োজনীয় শক্তি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি মানবতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ডেল্টা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন যা সময়ের তুলনায় অত্যন্ত অগ্রগামী কিন্তু দেশের দীর্ঘ উন্নয়ন পরিক্রমায় গুরুত্ব বহন করে থাকে।

২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ উন্নত দেশ হিসাবে যাতে আত্মপ্রকাশ করতে পারে সে জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। এডিবির মতে, বাংলাদেশের অর্থনীতি, চীন, ভিয়েতনাম ও ভারতের চেয়েও দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। তার আমলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের নেতৃত্বে দেশে ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া শুরু হয় যার সুফল এই অতিমারীর সময়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দৈনন্দিন ক্রয়-বিক্রয়সহ সর্বত্র পাওয়া যাচ্ছে। তিনি যখন প্রথম মেয়াদের প্রধানমন্ত্রিত্ব পালন করেন, তখনই দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে কার্যকর করতে নানামুখী পদক্ষেপ নেন। সে সময়ে ’৯৮-এর বন্যা-পরবর্তী অবস্থা দক্ষতার সাথে মোকাবেলা করেন। আবার ২০০৯ সালে দায়িত্বভার পালন করা থেকে এখন পর্যন্ত অবিরত জনমানুষের কথা ভেবে নানা উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। তার আমলে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮% এর উপর হয়েছে। অবশ্য বৈশ্বিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ কোভিড-১৯ এর মধ্যেও তিনি হাল ছাড়েননি। মুজিববর্ষে তিনি গৃহহীনদের গৃহ দিতে চেষ্টা করেছেন। ৮ মার্চ ২০২০ সালে কোভিড-১৯ এর সমস্যা থেকে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিগুলো যাতে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে তার দিক-নির্দেশনা দেন। দেশের যে উন্নয়ন তা কখনো সম্ভব হতো না যদি তিনি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের মোকাবেলায় বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ না করতেন। দূরদর্শীপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের গুণে দেশে বিদ্যুতে কেবল স্বয়ংসম্পূর্ণ নয় বরং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। কোভিড-১৯ শুরুর সাথে সাথে নানামুখী প্রণোদনা প্যাকেজ রপ্তানিকারকদের থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ও অতি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়াস নিয়েছেন।

চলতি বছরের এপ্রিলে তিনি গরিব, হতদরিদ্র ও অসচ্ছল মানুষদের জন্য ১০.৫০ কোটি টাকা জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছেন। গত বছর সরাসরি মোবাইলের মাধ্যমে তিনি অর্থ সরাসরি দরিদ্র মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেন। তিনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিতে চাচ্ছেন। তার উন্নয়নের মূল সূত্র হচ্ছে কেউ উন্নয়নের ফললাভ থেকে বঞ্চিত হবেন না। আশ্রয়ণ-১ এর আওতায় ৬৯,৯০৪টি গৃহ দরিদ্র ও ভূমিহীনদের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়। আবার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর আওতায় প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয় ধাপে দরিদ্র ও ভূমিহীনদের মাঝে ৫৩.৩৪০টি গৃহ চলতি বছরের ২০ জুন বিতরণ করেন। তিনি কক্সবাজার সমুদ্রবক্ষে বিমানবন্দর তৈরির উদ্যোগ নিয়েছেন যা আধুনিক ও মনোরম পরিবেশের সৃষ্টি করবে। আশা করব কুমিল্লায় যেন আবার বিমানবন্দর চালু হয় যাতে রাজধানীর ওপর চাপ কম পড়ে সেজন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই মন্তব্য করেছেন যে, অতি দরিদ্র যারা তারা দারিদ্র্যের দুষ্ট চক্র থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়াস নিয়েছেন। নারী উন্নয়নে, নারীর শিক্ষা প্রসারে তার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বগুণ সব সময় বাংলার মানুষ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। সবার জন্য জীবন ও জীবিকার উন্মেষ ঘটাতে তিনি সচেষ্ট। তিনি বৃক্ষপ্রেমী, বনায়ন ও গাছ গাছালী রোপণের জন্য নিরন্তর নির্দেশ দিচ্ছেন। তার আমলে দরিদ্র থেকে মুক্তি, ক্ষুধা থেকে মুক্তি, অন্যায়-অবিচার থেকে মুক্তির প্রয়াস তিনি গ্রহণ করেছেন। এজন্যই চলতি বছরের ডিসেম্বরে প্রায় এক লক্ষ গৃহহীনকে গৃহ দেওয়ার উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছেন যাতে স্থানীয় প্রকৌশলী ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ স্থানীয় প্রশাসকদের সাথে একযোগে কাজ করতে পারে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ জাতির বিজ্ঞানমনস্কতার সাথে যোগসূত্র গড়তে তার প্রয়াস লক্ষণীয়। আবার ধরিত্রীর পরিবেশ যাতে দূষণমুক্ত থাকে সেজন্যও তিনি অবিরতভাবে কাজ করে চলেছেন।

একজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রলীগ কর্মী হিসাবে অর্থনীতির ছাত্র হিসাবে বিশ্বাস করি শেখ হাসিনা দীর্ঘায়ু পান এবং তিনি পঞ্চমবারের মতো গণতান্ত্রিকভাবে যেন প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি প্রয়াস নিয়েছিলেন শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য। সে জন্য বাংলাদেশ এক্রিডেশন কাউন্সিল গঠন করেছেন। আসলে এদেশে অনেকে আছেন দায়িত্ব পাওয়ার পর তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব ভুলে যান। অতিমারীর সময়ে বাংলাদেশ এক্রিডেশন কাউন্সিলকে তেমন কার্যকর মনে হয়নি। অনলাইনে শিক্ষার জন্য সরকার সব ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে বিডিরেন্ট এর খরচ যদি বিনামূল্যে হতো, সেক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো উপকৃত হতো। যাদের ওপর শিক্ষা সংশ্লিষ্ট তদারকির ভার দেওয়া হয় তারা যেন প্রধানমন্ত্রীর যে গভীর দেশপ্রেম, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং জাতি হিসাবে বাঙালির গৌরব সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে যাক সেটি মান্য করে চলেন। মধ্যম ও নিম্ন স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নৈতিক বলে বলীয়ান হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর গঠনমূলক কাজ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবন যাতে লাভ করেন তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া থাকল- একই সাথে আশা করব তিনি পঞ্চমবারে মতো প্রধানমন্ত্রী হোন।

দেশের উন্নয়ন, প্রগতি, মহামারি মোকাবেলা, পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দান সব মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনবদ্য কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার জন্য আমরা বাঙালিরা তথা বাংলাদেশিরা জোর দাবি করছি নোবেল পুরস্কার কমিটির কাছে। দেশের অগ্রযাত্রায় এই মহীয়সী নেত্রী আজ বৈশ্বিক নেত্রী হয়ে উঠেছেন। জয় বাংলা, জয়তু শেখ হাসিনা।

অধ্যাপক, ম্যাক্রো ফিন্যান্সিয়াল ইকোনোমিস্ট, আইটি এক্সপার্ট

সান নিউজ/এমএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সংহতি জানালো মুক্তিজোট

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে সোমবার (৭ এপ্রিল) বিশ্বব্যাপী হরতাল পালনের আহ্বান জ...

কুমিল্লায় গোমতী নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন: ৬ ট্রাক জব্দ, ১ জনের জেল

কুমিল্লার গোমতী নদীর চরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ০৬...

সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে ছাত্রদল নেতাসহ আহত চার

বগুড়ার রেলওয়ে এলাকায় ছাত্রদল নেতার ওপর সন্ত্রাসী হ...

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলনে কৃষকরা খুশি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। এসব মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে দেশে...

ইসরায়েল নিশ্চিহ্নে হামাস ইরানের কাছে ৫০০ মিলিয়ন ডলার চেয়েছিল!

ইরান ও হামাস নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ইসরায়েলে...

ঈদে কে কোন আসনে সক্রিয় ছিলেন এনসিপি নেতারা

পবিত্র ঈদুল ফিতরে অন্তত ৪০টি নির্বাচনী আসনে জনসংযো...

খুলনায় বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

‘জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত&rsquo...

ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে লক্ষ্মীপুরে হরতাল অবরোধ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান ধ্বংসযজ্ঞ...

গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা; ওসি-এসআইসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

সুনির্দিষ্ট কোন মামলা ছাড়াই এক গৃহবধূকে (২৫) আটক করে ধর্ষণচেষ্টা ও চাঁদাবাজির...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা