ফারহানা ইসলাম: এক প্রতিবেশী কাকিমা গতকাল এসে আম্মুকে বলছে মেয়েদের এত বেশি লেখাপড়া করানোর কি দরকার সেইতো চুলাই ঠেলতে হবে। প্রতি-উত্তরে আম্মু বলেছিলো আমার মেয়েকে পড়াশুনা করিয়েছি বলেই আজ আপনার মেয়েসহ বাড়ির প্রত্যেকটা ছেলেমেয়ের এ্যাসাইনমেন্টে সাহায্য করতে পারছে। পরিবর্তে তিনি আর কিছু বলার সাহস পাননি।
উন্নয়নের জোয়ারে ভাসছে দেশ। কিন্তু এই তথাকথিত উন্নয়নের আড়ালে একটা মেয়েকে বিশেষ করে একটা গ্রামের মেয়েকে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে তৈরি হওয়ার পথে এই সমাজই সবচেয়ে বড় অন্তরায়। যে সমাজের এইসব অযাচিত নিয়ম ভেঙে সামনে এগুতে চাইবে সমাজ তার পায়েই শৃঙ্খল বেঁধে দিবে, শুনতে হবে নানান অযৌক্তিক কথা। দীর্ঘ তেইশ বছর বয়সে এটা বুঝে নিয়েছি একটা মেয়ের জীবনে বিয়েই একমাত্র মুক্তির পথ। এতে তুমি মরে যাও, বেঁচে যাও সেটা তোমার সম্পূর্ণ ব্যক্তিকেন্দ্রিক ব্যাপার।
অথচ এই সামাজিকতার আড়ালেই বেড়ে চলছে খুন, ধর্ষণ, জালিয়াতি, মিথ্যাচার আরও কতকিছু। সমাজ আপনার ভালো চাইবে, ভালো ভালো উপদেশও দিবে কিন্তু ভালো থাকতে দিবে না।
এই সমাজেই যখন নজন ভুলটাকে সঠিক বলে স্বীকার করে তখন বাকি একজনেরও সাহস হয়না ভুলটাকে ভুল বলে প্রমাণ দেওয়ার সামাজিকতার নামে ভণ্ডামিগুলোকেও সেই একজন তখন মানতে বাধ্য হয়।
কি করা যাবে! চাইলেই একদিনে এই সমাজের অযাচিত,অযৌক্তিক নিয়মকানুনকেতো আর পাল্টানো যাবে না। পরিশেষে বলতে চাইবো নিজেদের ভালো থাকাটা নিজেদেরকেই বুঝতে হবে। শুধু খেয়াল রাখতে হবে তাতে যেনো কারো ক্ষতি নাহয়, কেউ কষ্ট না পায়। মনে রাখতে হবে বেশি সংখ্যক মানুষ মিথ্যেটাকে সত্য বললেই তা সত্য হয়ে যাবে না, ভুলকে শুদ্ধ বললেই তা শুদ্ধ হয়ে যাবে না। সত্য একজন বললেও সত্য। সামাজিকতার নামের অযাচিত নিয়মকানুন মেনে নিয়ে আমরা কেনো আমাদের শান্তি বিসর্জন দিবো। দুর্বলকে পায়ের তলায় দমিয়ে রাখার জন্যই এ সমাজ সামাজিকতার নামে এসব অযৌক্তিক নিয়মকানুন চালু করেছে।
আমরা সবাইতো সামাজিক জীব। সমাজকে সাথে নিয়েই চলতে হবে। তবে একটু দেখে বুঝে।
সান নিউজ/এনকে