নিজস্ব প্রতিনিধি : স্বাধীনতার ৫০ বছর চলে গেলো, প্রাপ্তি আর প্রত্যাশা নিয়ে হিসেব চলছে বেশ। কেমন কর্মসংস্থান হলো, দেশ কতটা এগিয়ে গেলো আর কতটা আধুনিক হলো তা নিয়ে ভাবছে প্রগতিশীলরা। এইসব হিসাব নিকাশ আর ভাবনায় যারা আসে না তারা হলো পথশিশু। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমে যাই, আন্দোলন গড়ে তুলি, কেননা আমরা জানি আমাদের অধিকার কতটুকু পেয়েছি আর কতটুকু পাইনি।
যাদের রাস্তায় জন্ম, রাস্তায় বেড়ে ওঠা তারা কখনও রাজপথে নামে না, অধিকার আদায়ে আন্দোলন গড়ে তুলে না, কেননা তারা তো জানেই না তাদের অধিকার কতটুকু, কতটুকু পেয়েছে আর কতটুকু পায়নি। তারাও মেনে নিয়েছে এটাই তাদের স্বাভাবিক জীবন।
রাষ্ট্রের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমরাও কি ধরে নিবো এটাই ওদের স্বাভাবিক জীবন! আমাদের জন্য স্কুল আছে, কলেজ আছে, বিশ্ববিদ্যালয় আছে। বিনামূল্য বই পাই, পড়াশোনার সুযোগ পাই আর উন্নত জীবনযাপন করি। অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা আর বাসস্থান এগুলো আমাদের মৌলিক অধিকার। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে সচেষ্ট কেননা এদেশে আমাদের জন্ম। আমি আমরা এদেশের নাগরিক। প্রগতিশীলরা, বুদ্ধিজীবীরা আমাদের এই সব অধিকার নিয়ে ভাবে, কথা বলে। সরকার আমাদের জন্য বাজেট প্রণয়ন করে।
পথশিশু, ছিন্নমূল যারা তারা কি এদেশের নাগরিক নয়,
তাদের নিয়ে কারা ভাবে? তাদের সুন্দর, স্বাভাবিক জীবনের জন্য কারা কথা বলবে? তাদের অধিকার তাদেরকে কে বুঝিয়ে দিবে? হ্যা, কিছু সামাজিক সংগঠন মানবিক দিক থেকে কাজ করে তাদেরকে নিয়ে। কিন্তু এই সামাজিক সংগঠনগুলো কি আদৌ তাদের সুষ্ঠ, সুন্দর স্বাভাবিক জীবনযাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম? নাহ, তবে যতটুকু করছে এটাই অনেক বেশি। তবে সামগ্রিক দিক থেকে যথেষ্ট নয়। সরকারি ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ না করলে পথশিশুদের সুন্দর স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
পথে যাদের জন্ম এ দায় ওদের নয়, এই দায় আমাদের, আমাদের সমাজের, আমাদের সমাজ ব্যবস্থার। পথশিশুরা এদেশের সন্তান, এদেশের নাগরিক। আমাদের ভাই আমাদের বোন।তাদেরকে নিয়ে ভাবতে হবে আমাদেরকেই, তাদের প্রাপ্যটুকু বুঝিয়ে দিতে হবে আমাদেরকেই। পথশিশুদের জন্য প্রয়োজন থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা। স্বাভাবিকভাবে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ সুবিধা। তৈরি করে দিতে হবে উন্নত জীবনযাপনের সুযোগ এবং সুষ্ঠ পরিবেশ। পথশিশুদের নিয়ে ভাবতে হবে সরকারকেও।
মোহাম্মদ তানভীর হোসাইন
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
সান নিউজ/এসএম