নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আরও পড়ুন: সম্রাট আকবরের রাজত্বকালের সূচনা
সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
শনিবার (১৪ অক্টোবর), ২৯ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
আরও পড়ুন: সংবিধান গণপরিষদে উত্থাপন
ঘটনাবলী:
১৮০৬ - ফ্রান্স ও রাশিয়ার মধ্যে ইয়েনার যুদ্ধ সংঘটিত হয়।
১৮৮২ - পাকিস্তানের লাহোরে ভারতীয় উপমহাদেশের চতুর্থ পুরাতন সর্ব্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (পাকিস্তানে প্রথম) পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯২৬ - অ্যালেন আলেকজান্ডার মিলনী রচিত জনপ্রিয় শিশুতোষ বই উইননি-দি-পু প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৯৩৩ - নাজি জার্মানি কর্তৃক লীগ অব নেশনস ত্যাগ।
১৯৪৪ - জার্মানির নাৎসি বাহিনীর বিখ্যাত সেনাকমান্ডার এরউইন রোমেল হিটলারের আদেশে আত্মহত্যা করে। মার্শাল রোমেল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে উত্তর আফ্রিকায় জার্মান বাহিনীর কমান্ডার ছিল এবং ব্রিটিশ সেনাদেরকে মিশরের উত্তরাঞ্চল পর্যন্ত বিতাড়িত করতে সক্ষম হয়েছিল।
১৯৪৬ - লন্ডনে বিশ্বের ২৫টি দেশের প্রতিনিধিরা বিশ্বব্যাপী পণ্যসেবার মান বজায় রাখতে মান নির্ধারক সংস্থা গঠনের বিষয়ে একমত হন। সংস্থাটি পরের বছর কার্যক্রম শুরু করে এবং সে হিসাবে ১৪ অক্টোবর বিশ্ব মান দিবস পালিত হয়।
১৯৫৩ - জর্দান নদীর পশ্চিম উপকূলীয় কাবিহ গ্রামে সশস্ত্র ইহুদিবাদীরা নির্যাতনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে। এই গ্রামে ইহুদিবাদীরা টানা দুই দিন আগ্রাসী হামলার মাধ্যমে নিরীহ ফিলিস্তিনীদের ওপর নির্বিচার গণহত্যা চালায় এবং তাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস করে।
১৯৫৫ - পূর্ববাংলার নাম পরিবর্তন করে পূর্ব পাকিস্তান রাখা হয়।
১৯৫৬ - বাবাসাহেব আম্বেদকর তার ৩,৮৫,০০০ অনুসারীসহ সনাতন ধর্ম ত্যাগ করে বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেন।
১৯৬৪ - তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের কমিউনিস্ট পার্টির মহাসচিব নিকিতা ক্রুশচেভ বহিস্কৃত হন।
১৯৭১ - মার্কিন নভোযান মেরিনার-৯ প্রথম খুব কাছে থেকে নেওয়া মঙ্গলের ছবি পৃথিবীতে পাঠায়।
১৯৮৬ - আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সৈন্য প্রত্যাহার শুরু হয়।
১৯৯৩ - হাইতির বিরুদ্ধে পুনর্বার যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
১৯৯৭ - বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের মেসার্স স্মিথ কো-জেনারেল (বাংলাদেশ) লিমিটেডের মধ্যে বেসরকারি খাতে বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎ প্লান্ট স্থাপনের চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত।
২০২০ - পৃথিবীকে অতিক্রম করে 2020 TB-9 ও 2020 ST-1 নামের দুটি গ্ৰহাণু।
আরও পড়ুন: নীলিমা ইব্রাহিম’র জন্ম
জন্মদিন:
১৬৪৪ - পেনসিলভানিয়ার প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম পেন।
১৭৭২ - বাউল কবি লালন শাহ।
লালন ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি। তিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামেও পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক।
তিনি অসংখ্য গানের গীতিকার, সুরকার ও গায়ক ছিলেন। লালনকে বাউল গানের অগ্রদূতদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং তার গান উনিশ শতকে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
আরও পড়ুন: সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ’র প্রয়াণ
লালন ছিলেন একজন মানবতাবাদী সাধক। যিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্রসহ সকল প্রকার জাতিগত বিভেদ থেকে সরে এসে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দিয়েছিলেন।
অসাম্প্রদায়িক এ মনোভাব থেকেই তিনি তার গান রচনা করেছেন। তার গান ও দর্শন যুগে যুগে প্রভাবিত করেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ও অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো বহু খ্যাতনামা কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, বুদ্ধিজীবীসহ অসংখ্য মানুষকে।
আরও পড়ুন: বিশ্বে ডাক ব্যবস্থা চালু
তার গানগুলো যুগে যুগে বহু সঙ্গীতশিল্পীর কণ্ঠে লালনের এই গানসমূহ উচ্চারিত হয়েছে। গান্ধীরও ২৫ বছর আগে, ভারত উপমহাদেশে সর্বপ্রথম, তাকে ‘মহাত্মা’ উপাধি দেয়া হয়েছিল।
লালন ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর লালন ১১৬ বছর বয়সে কুষ্টিয়ার কুমারখালির ছেউড়িয়াতে নিজ আখড়ায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর প্রায় একমাস পূর্ব থেকে তিনি পেটের সমস্যা ও হাত পায়ের গ্রন্থির সমস্যায় ভুগছিলেন। অসুস্থ অবস্থায় দুধ ছাড়া অন্য কিছু খেতেন না। এ সময় তিনি মাছ খেতে চাইতেন।
আরও পড়ুন: হেলাল হাফিজ’র জন্ম
মৃত্যুর দিন ভোর ৫ টা পর্যন্ত তিনি গান-বাজনা করেন এবং এক সময় তার শিষ্যদের বলেন, “আমি চলিলাম”, এবং এর কিছু সময় পরই তার মৃত্যু হয়।
তার নির্দেশ বা ইচ্ছা না থাকায় তার মৃত্যুর পর হিন্দু বা মুসলমান কোনো ধরনের ধর্মীয় রীতিনীতিই পালন করা হয়নি। তারই উপদেশ অনুসারে ছেউড়িয়ায় তার আখড়ার মধ্যে একটি ঘরের ভিতর তার সমাধি গড়ে তোলা হয়।
১৮৪০ - বস্তুবাদী রুশ দার্শনিক ও সাহিত্য সমালোচক দমিত্রি পিসারিয়েভ।
১৮৮২ - আয়ারল্যান্ডের স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতা ডি ভ্যালেরা।
১৮৮৪ - লালা হর দয়াল, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সক্রিয় বিপ্লবী। (মৃ.১৯৩৯)
১৮৮৮ - ইংরেজ লেখক ক্যাথারিন ম্যাসফিল্ড।
১৮৯০ - বিংশ শতকের বিশিষ্ট বাঙালি কবি বসন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়। (মৃ.১৯৫৯)
১৮৯০ - ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪তম রাষ্ট্রপতি।
১৮৯৩ - লিলিয়ান গিশ, মার্কিন অভিনেত্রী, পরিচালক ও লেখিকা। (মৃ. ১৯৯৩)
১৮৯৪ - মার্কিন কবি ই ই কামিংস।
১৯২৭ - রজার মুর, ব্রিটিশ, জেমস বন্ড (চরিত্র) খ্যাত মডেল এবং অভিনেতা।
১৯৩০ - অশোকতরু বন্দ্যোপাধ্যায় প্রখ্যাত রবীন্দ্র সংগীত শিল্পী। (মৃ.১৩/১২/১৯৯৩)
১৯৩০ - সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ ভারতীয় বাঙালি লেখক। (মৃ.০৪/০৯/২০১২)
১৯৩১ - পণ্ডিত নিখিল রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় মাইহার ঘরানার ভারতীয় ধ্রুপদী সেতার বাদক। (মৃ.২৭/০১/১৯৮৬)
১৯৪১ - রমা চৌধুরী, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের একজন বীরাঙ্গনা। (মৃ. ২০১৮)
১৯৬২ - প্রচেত গুপ্ত, ভারতীয় বাঙালি লেখক ও সাংবাদিক।
১৯৮১ - গৌতম গম্ভীর, ভারতীয় ক্রিকেটার, আই সি সি বর্ষসেরা ক্রিকেটার শিরোপাধারী।
১৯৮৮ - গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অস্ট্রেলীয় অল-রাউন্ডার।
১৯৯১ - জান্নাতুল ফেরদৌস পিয়া, বাংলাদেশী মডেল এবং অভিনেত্রী, মিস বাংলাদেশ শিরোপাধারী।
আরও পড়ুন: ফরাসি বিপ্লবের সূচনা
মৃত্যুবার্ষিকী:
১৫১৪ - পণ্ডিত কবি এবং সম্রাট আকবরের সভাশিক্ষক ফয়েজি।
১৯৪৩ - জিমি ম্যাথুজ, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার।
১৯৫৬ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত, বাঙালি লেখক ও স্বামী বিবেকানন্দর অনুজ। (জ.১৮৬৮)
১৯৮০ - শুট ব্যানার্জী, ওরফে শরদিন্দুনাথ ব্যনার্জী, ভারতীয় জাতীয় দলের ক্রিকেটার। (জ.১৯১১)
১৯৮৪ - রবীন্দ্রবিশারদ পুলিনবিহারী সেন। (জ.১১/০৮/১৯০৮)
১৯৮৯ - বিশিষ্ট কার্টুনিস্ট ও চিত্রশিল্পী শৈল চক্রবর্তী। (জ.০৯/০২/১৯০৯)
১৯৯৯ - জুলিয়াস নেরিরি, তাঞ্জানিয়ার ঔপনিবেশ-বিরোধী কর্মী ও রাজনীতিবিদ। (জ.১৩/০৪/১৯২২)
২০২২ - বিশ্ব বিখ্যাত চলচ্চিত্র সিরিজ হ্যারি পটারে হ্যাগ্রিড চরিত্রে অভিনয় করা কিংবদন্তি অভিনেতা রবি কোলট্রেন। (জ. ৩০/০৩/১৯৫০)
আরও পড়ুন: বিশ্ব মহাকাশ সপ্তাহ শুরু
দিবস:
বিশ্ব মান দিবস
বিশ্ব মান দিবস প্রতি বছর ১৪ অক্টোবর তারিখে আন্তর্জাতিকভাবে উদযাপিত একটি দিবস। পণ্য সেবা প্রভৃতির মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী কর্মরত বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের অবদানের প্রতি সম্মান জানানোর জন্যই এ দিনটির অবতারনা।
এ দিনটি মূলত পণ্য সেবা প্রভৃতির মান উন্নয়ন ও বজায় রাখার প্রতি কর্তৃপক্ষ, উদ্যোক্তা এবং ভোক্তাদের সচেতন করার উদ্দেশ্যেই পালন করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্ব ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন প্রতিষ্ঠিত
১৯৪৬ সালের ১৪ অক্টোবর তারিখে লন্ডনে বিশ্বের ২৫ টি দেশের প্রতিনিধিরা বিশ্বব্যাপী পণ্য সেবার মান বজায় রাখার জন্য একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মান নির্ধারক সংস্থার বিষয়ে ঐকমত্য পোষন করেন যা পরের বছর থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।
ঐদিনকে স্মরণীয় করে রাখতেই এ দিবস বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়। ১৯৭০ সাল থেকে আইএসও এ দিনটি পালন করে আসছে। প্রতি বছরই দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় চলমান বিষয়াদিকে ঘিরে নির্ধারণ করা হয়।
সান নিউজ/এনজে