নিজস্ব প্রতিবেদক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আরও পড়ুন: কবি বিনয় মজুমদারের জন্ম
সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর), ৩ আশ্বিন ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক কপিরাইট কনভেনশন চালু
ঘটনাবলী:
১১৮০ - ফিলিপ আগাস্তাস ফ্রান্সের রাজা হন।
১৪৩৭ - ট্রানসালভানিয়োতে কৃষক বিদ্রোহ হয়।
১৫০২ - ক্রিস্টোফার কলম্বাস কোস্টারিকা আবিষ্কার করেন।
১৬৩৫ - সম্রাট দ্বিতীয় ফার্দিনান্দ ফ্রান্সের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
১৭৩০ - ফ্রান্স ও স্পেন শান্তিচুক্তি করে।
১৮১০ - স্পেনীয় শাসন থেকে মুক্তিলাভের জন্য চিলির স্বাধীনতা ঘোষিত হয়।
১৮১৮ - চিলি স্পেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে।
১৮৫১ - ‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকা প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৯০৬ - টাইফুন ও সুনামিতে হংকংয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
১৯১৯ - নেদারল্যান্ডস নারীদের ভোটাধিকার দেয়।
১৯২২- কলকাতার রঙ্গমঞ্চে ‘শারদোৎসব’-এ রবীন্দ্রনাথের অভিনয়।
১৯২৩ - ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়।
১৯২৪ - হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতির জন্য মহাত্মা গান্ধী অনশন শুরু করেন।
১৯৩১ - জাপানের সেনা বাহিনী চীনের উত্তর পূর্বাঞ্চলিয় ভূখণ্ড মানচুরী দখল করে নেয়।
১৯৩৪ - ইউএসএসআর লিগ অব নেশনসের অন্তর্ভুক্ত হয়।
১৯৩৪ - মুসোলিনির শাসনে ৮-৫৫ বছরের ইতালীয়দের সামরিক প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়।
১৯৬১ - সুইডিস রাজনীতিবিদ ও জাতিসঙ্ঘের দ্বিতীয় মহাসচিব দ্যাগ হেমার শোল্ড এক বিমান দূর্ঘটনায় নিহত হন।
১৯৭২ - বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জুলিওকুরি শান্তিপদক লাভ।
১৯৮২ - পশ্চিম বেইরুটে ছাটিলা ও সাবগার প্যালেস্তিনীয় উদ্বাস্তু শিবিরে গণহত্যা চলে।
১৯৮৮- সামরিক অভ্যুত্থানের পর বার্মা রাষ্ট্রের নাম হয় মিয়ানমার।
১৯৮৯ - বার্মায় সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে এবং বার্মা রাষ্ট্রের নাম হয় মিয়ানমার।
১৯৯১ - বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তিত।
২০০৭ - পাকিস্তানের সামরিক শাসক জেনারেল পারভেজ মোশাররফ নির্বাচনের পর সেনাবাহিনীর প্রধান পদ ছাড়ার ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস
জন্মদিন:
১৭০৯ - স্যামুয়েল জনসন, ইংরেজি সাহিত্যের কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সমালোচক, জীবনীকার, সম্পাদক ও ভাষাতাত্ত্বিক।
১৮১৯ - জাঁ বার্নার্ড লিওঁ ফুকো, ফরাসি পদার্থবিদ। (মৃ. ১৮৬৮)
১৮৬৯ - জগদানন্দ রায়,ঊনবিংশ শতাব্দীর বাঙালি বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক। (মৃ.২৬/০৬/১৯৩৩)
১৮৮৪ - মন্মথনাথ ঘোষ, প্রখ্যাত জীবনীকার। (মৃ.০৭/০৪/১৯৫৯)
১৮৮৬ - যাদুগোপাল মুখোপাধ্যায়, ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবী, অনুশীলন সমিতির অবিসংবাদী নেতা ও প্রখ্যাত চিকিৎসক। (মৃ.৩০/০৮/১৯৭৬)
১৯০৫ - গ্রেটা গার্বো, সুয়েডীয়-মার্কিন অভিনেত্রী। (মৃ. ১৯৯০)
১৯০৭ - এডউইন মাটিসন ম্যাকমিলান, নোবেল বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী।
১৯৫০ - শাবানা আজমি, একজন ভারতীয় অভিনেত্রী।
১৯৫৪ - স্টিভেন পিংকার, মার্কিন মনোবিজ্ঞানী।
১৯৭০ - ড্যারেন গফ, ইংলিশ ক্রিকেটার।
১৯৭৬ - রোনালদো, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার।
আরও পড়ুন: দান্তে আলিগিয়েরি’র প্রয়াণ
মৃত্যুবার্ষিকী:
১১৮০ - ফ্রান্সের রাজা সপ্তম লুই।
১৭৮৩ - লেওনার্ড অয়লার, সুইস গণিতজ্ঞ ও পদার্থবিদ।
১৮৯৯ - রাজনারায়ণ বসু, বাঙালি চিন্তাবিদ এবং সাহিত্যিক। (জ.৭ সেপ্টেম্বর,১৮২৬)
১৯৪১ - ফ্রেড কার্নো, ব্রিটিশ কৌতুকাভিনেতা ও গীতিমঞ্চ পরিচালক। (জ. ১৮৬৬)
১৯৫৬ - মোতাহের হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশি সাহিত্যিক।
মোতাহের হোসেন চৌধুরী (১৯০৩-১৯৫৬) একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও লেখক ছিলেন। তিনি ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত (বর্তমানে বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল মজিদ ও মাতার নাম ফতেমা খাতুন। মাতামহ কুমিল্লার বিখ্যাত দারোগা বাড়ির মৌলভি আশরাফ উদ্দীন। তার পিতা পেশায় একজন সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন, ফলে চাকরিসূত্রে তিনি নানা জায়গায় বদলী হতেন। ফলে মোতাহের হোসেন মায়ের কাছে নানাবাড়ি কুমিল্লাতেই থাকতেন। তিনি অল্প বয়সেই পিতৃহারা হন।
আরও পড়ুন: সৈয়দ মুজতবা আলী’র জন্ম
মোতাহের হোসেন চৌধুরীর শিক্ষাজীবনের বেশিরভাগ সময় কুমিল্লাতেই কাটে। কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন (বর্তমানে এস.এস.সি) পাশ করেন। আইএ ও বিএ তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে পাশ করেন এবং ১৯৪৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাস করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থাকাকালীন সময়ে তার সহপাঠী ছিলেন মুহম্মদ আবদুল হাই ও আহমদ হোসেন; শিক্ষকদের মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, মোহিতলাল মজুমদার, আশুতোষ ভট্টাচার্য, জসীমউদ্দীন প্রমুখ যশস্বী পণ্ডিতবর্গের সাহচর্য পেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: শাহ আবদুল করিম’র প্রয়াণ
মোতাহের হোসেন চৌধুরী কর্মজীবনের শুরুতে কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুলে একজন সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে প্রভাষক পদে যোগদান করেন।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর চট্টগ্রাম কলেজে যোগদান করে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। সে সময় তিনি চট্টগ্রাম কলেজে সাহিত্যিক আবুল ফজলের সহাচর্য পেয়েছিলেন সহকর্মী হিসেবে।
আরও পড়ুন: প্রথম বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ চালু
মোতাহের হোসেন চৌধুরী কিশোর বয়স থেকেই সাহিত্যে আগ্রহী হয়ে উঠেন। তিনি প্রথমদিকে কবিতা বেশি লিখতেন। বাঙালী মুসলমান সমাজের অগ্রগতির আন্দোলন হিসেবে পরিচিত "বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের" সাথে যুক্ত ছিলেন। তিনি এ আন্দোলনে কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদির প্রমুখের সহযোগী ছিলেন।
তিনি ঢাকার মুসলিম সাহিত্য সমাজের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন। এর নানা সভা ও সম্মেলনে তিনি অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন প্রবন্ধ পাঠ করেন। এর মধ্যে আমাদের দৈন্য সাহিত্য সমাজের পঞ্চম বার্ষিক সম্মেলন (১৯৩১), আদেশপন্থী ও অনুপ্রেরণাপন্থী ষষ্ঠ বার্ষিক সম্মেলন (১৯৩২) ও মুসলমান সাহিত্যিকদের চিন্তাধারা অষ্টম বার্ষিক সম্মেলনে (১৯৩৪) পাঠ করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস
এছাড়া মুসলিম সাহিত্য সমাজের মুখপত্র শিখার পঞ্চম বর্ষে ১৯৩১ সালে তার প্রবন্ধ রবীন্দ্রনাথ ও বৈরাগ্যবিলাস প্রকাশিত হয়। তিনি বিচিত্রা, মাসিক মোহাম্মদী, সওগাত, ছায়াবীথি, বুলবুল প্রভৃতি সাহিত্য পত্রিকাতেও প্রবন্ধ লিখেছিলেন।
তার রচিত উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধ গ্রন্থ "সংস্কৃতি কথা" (১৯৫৮)। এছাড়া তার অনুবাদকৃত দুটি গ্রন্থ হচ্ছে ক্লাইভ বেলের Civilization গ্রন্থ অবলম্বনে রচিত সভ্যতা (১৯৬৫) এবং বার্ট্রান্ড রাসেলের Conquest of Happiness গ্রন্থের অনুবাদ সুখ (১৯৬৫)। সৈয়দ আবুল মকসুদের সম্পাদনায় ১৯৯৫ সালে বাংলা একাডেমি তার প্রকাশিত এবং অপ্রকাশিত সমস্ত রচনা রচনাবলি আকারে প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: মাও সে তুং’র প্রয়াণ
মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনীতে মুক্তবুদ্ধি, মননশীলতা, মানবতার ছাপ পাওয়া যায়। তিনি পরিশীলিত গদ্যের রচয়িতা হিসেবে বাংলা সাহিত্যে পরিচিত। তার লেখায় প্রমথ চৌধুরী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-এর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
তার রচনায় সমাজ-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণ, মানবতাবোধ ইত্যাদি বিষয়াবলী বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করা হয়েছে, সুন্দর, মহৎ ও ভালোভাবে জীবনযাপনের উপায় সন্ধান করা হয়েছে। চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যাপনাকালে ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৬৭ - জন কক্ক্রফট, নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী। (জ. ১৮৯৭)
১৯৬৮ - ফ্রাঞ্চট টোন, মার্কিন অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক। (জ. ১৯০৫)
১৯৯২ - মেনকা ঠাকুর, খ্যাতনামা রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী। (জ.১৯১৭)
২০২০ - শাহ আহমদ শফী, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দারুল উলুম হাটহাজারীর আচার্য। (জ. ১৯২০)
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস
দিবস:
বিশ্ব জল পর্যবেক্ষণ দিবস।
আন্তর্জাতিক সফটওয়্যার স্বাধীনতা দিবস৷
প্রথম প্রেম দিবস আজ। ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে দিবসটির যাত্রা শুরু হয়।
সান নিউজ/এনজে