সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আরও পড়ুন: মুর্তজা বশীর’র জন্ম
সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট), ৩ ভাদ্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ, ১ সফর ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
আরও পড়ুন: আইয়ুব বাচ্চু’র জন্ম
ঘটনাবলী:
১২০১ - রিগা শহর প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৫৮৭ - আমেরিকায় প্রথম ইংরেজ শিশু ভার্জিনিয়া ডেয়ারের জন্ম।
১৮০০ - লর্ড ওয়েলেসলি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ স্থাপন করেন।
১৮০৪ - ফ্রান্সের সংসদ সিনেটে এক আইন পাশের মধ্য দিয়ে নেপোলিয়ান বেনাপোর্ট সেদেশের সম্রাট হিসাবে আত্ম প্রকাশ করেন।
১৮১২ - স্মোলেনস্কের যুদ্ধে রুশরা নেপোলিয়ানের কাছে পরাজিত হন।
১৮৩০ - ফ্রান্স আলজেরিয়া দখলের জন্য ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে।
১৯৪৫ - তাইহোকু বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু নিহত হন বলে সংবাদ প্রচারিত হয়।
১৯৫৮ - ব্রজেন দাস প্রথম বাঙালি ও প্রথম এশীয় হিসাবে ইংলিশ চ্যানেল সাঁতার কেটে অতিক্রম করেন।
১৯৫৮ - ব্লাদিমির নবোকভের বিখ্যাত ও বিতর্কিত উপন্যাস ‘ললিতা’ যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশ হয়।
১৯৬১ - বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়-এর কার্যক্রম শুরু হয়।
১৯৬৩ - জেমস মেরেডিথ প্রথম কালো নাগরিক যিনি মিসিসিপি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৭১ - ভিয়েতনাম যুদ্ধে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড তাদের সেনা দল ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
১৯৭৪ - ভারত পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজস্থান প্রদেশের মরুভূমিতে প্রথম পরমাণু বোমার পরীক্ষা চালায়।
২০০৮ - পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশাররফ চাপের মুখে পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: বাংলায় প্রথম রেলপথ স্থাপন
জন্মদিন:
১৭০০ - প্রথম বাজিরাও, একজন প্রসিদ্ধ ভারতীয় সেনাপতি। (মৃ. ১৭৪০)
১৭৫০ - আন্তোনিও সালিয়েরি, ইতালীয় ধ্রুপদী সুরকার, সঙ্গীত পরিচালক এবং শিক্ষক। (মৃ. ১৮২৫)
১৭৯৪ - জন ক্লার্ক মার্শম্যান ইংরেজ সাংবাদিক ও ঐতিহাসিক, জনপ্রিয় সংবাদপত্র “ফ্রেন্ড অব ইন্ডিয়া” র প্রকাশক। (মৃ.০৮/০৭/১৮৭৭)
১৯০০ - বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত, ভারতীয় কূটনৈতিক, রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রসংঘ সাধারণ পরিষদে ভারতের প্রথম মহিলা সভাপতি। (মৃ.০১/১২/১৯৯০)
১৯০৮ - বিল মেরিট, নিউজিল্যান্ডীয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার ছিলেন। (মৃ. ১৯৭৭)
১৯২৭ - রোজালিন কার্টার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিমি কার্টারের সহধর্মণী।
১৯৩৩ - রোমান পোলান্স্কি, পোল্যান্ডীয় চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৩৩ - জুস্ত ফোঁতেন, ফ্রান্সের সাবেক ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৩৪ - গুলজার, প্রখ্যাত ভারতীয় কবি, সুরকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক।
১৯৩৫ - গেইল ফিশার, আমেরিকান অভিনেত্রী। (মৃ. ২০০০)
১৯৩৬ - রবার্ট রেডফোর্ড, আমেরিকান অভিনেতা, পরিচালক ও প্রযোজক।
১৯৫৪ - ভিকে শশিকলা, ভারতীয় ব্যবসায়ী মহিলা রাজনীতিবিদ হয়ে উঠেছেন।
১৯৪৮ - ফারুক, বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ।
১৯৪৯ - সেলিম আল দীন, বাংলাদেশী নাট্যকার, গবেষক। (মৃ. ২০০৮)
১৯৫৬ - সন্দ্বীপ পাতিল, ভারতের সাবেক ও প্রথিতযশা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার।
১৯৬৭ - দলের মেহেন্দী, ভারতীয় কন্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, লেখক, প্রযোজক, সম্পাদক এবং পরিবেশবিদ।
১৯৬৯ - এডওয়ার্ড নর্টন, মার্কিন অভিনেতা, চলচ্চিত্র নির্মাতা, ও সমাজকর্মী।
১৯৮০ - এস্তেবান কাম্বিয়াসো, সাবেক আর্জেন্টিনীয় ফুটবল খেলোয়াড়।
১৯৮৩ - ক্যামেরন হোয়াইট, অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার ও মেলবোর্ন স্টার্সের অধিনায়ক।
১৯৯৩ - মিয়া মিচেল, কজন অষ্ট্রেলিয়ান অভিনেত্রী এবং গায়িকা।
আরও পড়ুন: মুদ্রণ যন্ত্র আবিষ্কার
মৃত্যুবার্ষিকী:
১২২৭ - চেঙ্গিজ খান, প্রধান মঙ্গোল রাজনৈতিক ও সামরিক নেতা বা মহান খান, ইতিহাসেও তিনি অন্যতম বিখ্যাত সেনাধ্যক্ষ ও সেনাপতি। (জ. ১১৬২)
১৬৪৮ - ইব্রাহিম (উসমানীয় সুলতান), অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান ছিলেন। (জ. ১৬১৫)
১৮৫০ - অনরে দ্য বালজাক, ঊনবিংশ শতাব্দীর বিখ্যাত ফরাসি ঔপন্যাসিক এবং নাট্যকার। (জ. ১৭৯৯)
১৮৯৮ - রামতনু লাহিড়ী, বাঙালি সমাজ সংস্কারক ও শিক্ষাসংগঠক। (জ.২২/০৫/১৮১৩)
১৯৪৫ - সরলা দেবী চৌধুরানী, বিশিষ্ট বাঙালি বুদ্ধিজীবী। (জ.০৯/০৯/১৮৭২)
১৯৪৫ - সুভাষচন্দ্র বসু, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। (জ. ১৮৯৭)
সুভাষচন্দ্র বসু (২৩ জানুয়ারি ১৮৯৭ - ?) ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক চিরস্মরণীয় কিংবদন্তি নেতা। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে তিনি হলেন এক উজ্জ্বল ও মহান চরিত্র যিনি এই সংগ্রামে নিজের সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।
তিনি ‘নেতাজি’ নামে সমধিক পরিচিত। সুভাষচন্দ্র পরপর ২ বার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিন্তু গান্ধীর সাথে আদর্শগত সংঘাত, কংগ্রেসের বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ নীতির প্রকাশ্য সমালোচনা এবং বিরুদ্ধ-মত প্রকাশ করার জন্য তাকে পদত্যাগ করতে হয়।
আরও পড়ুন: ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল’র প্রয়াণ
সুভাষচন্দ্র মনে করতেন, মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর অহিংসা এবং সত্যাগ্রহের নীতি ভারতের স্বাধীনতা লাভের জন্য যথেষ্ট নয়। এই কারণে তিনি সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিয়েছিলেন। সুভাষচন্দ্র ফরওয়ার্ড ব্লক নামক একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন এবং ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের সত্বর ও পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি জানাতে থাকেন।
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ তাঁকে ১১ বার কারারুদ্ধ করে। তার বিখ্যাত উক্তি "তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেবো।" দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ঘোষিত হওয়ার পরেও তার মতাদর্শের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি; বরং এই যুদ্ধে ব্রিটিশদের দুর্বলতাকে সুবিধা আদায়ের একটি সুযোগ হিসেবে দেখেন।
আরও পড়ুন: বিশ্ব হাতি দিবস
যুদ্ধের সূচনালগ্নে তিনি লুকিয়ে ভারত ত্যাগ করে সোভিয়েত ইউনিয়ন, জার্মানি ও জাপান ভ্রমণ করেন ভারতে ব্রিটিশদের আক্রমণ করার জন্য সহযোগিতা লাভের উদ্দেশ্যে। জাপানিদের সহযোগিতায় তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজ পুনর্গঠন করেন এবং পরে তিনি নেতৃত্ব প্রদান করেন।
এই বাহিনীর সৈনিকেরা ছিলেন মূলত ভারতীয় যুদ্ধবন্দি এবং ব্রিটিশ মালয়, সিঙ্গাপুরসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে কর্মরত মজুর। জাপানের আর্থিক, রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তায় তিনি নির্বাসিত আজাদ হিন্দ সরকার প্রতিষ্ঠা করেন এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের নেতৃত্বদান করে ব্রিটিশ মিত্রবাহিনীর বিরুদ্ধে ইম্ফল ও ব্রহ্মদেশে (বর্তমান মায়ানমার) যুদ্ধ পরিচালনা করেন।
আরও পড়ুন: হুমায়ুন আজাদ’র প্রয়াণ
ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাৎসি ও অন্যান্য যুদ্ধবাদী শক্তিগুলির সাথে মিত্রতা স্থাপনের জন্য কোনো কোনো ঐতিহাসিক ও রাজনীতিবিদ সুভাষচন্দ্রের সমালোচনা করেছেন; এমনকি কেউ কেউ তাকে নাৎসি মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন বলে অভিযুক্ত করেছেন।
তবে ভারতে অন্যান্যরা তার ইস্তাহারকে রিয়েলপোলিটিক (নৈতিক বা আদর্শভিত্তিক রাজনীতির বদলে ব্যবহারিক রাজনীতি)-এর নিদর্শন বলে উল্লেখ করে তার পথপ্রদর্শক সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবাদর্শের প্রতি সহানুভূতি পোষণ করেছেন।
আরও পড়ুন: ঐতিহাসিক ‘জাহাজমারা দিবস’
উল্লেখ্য, কংগ্রেস কমিটি যেখানে ভারতের অধিরাজ্য মর্যাদা বা ডোমিনিয়ন স্ট্যাটাসের পক্ষে মত প্রদান করে, সেখানে সুভাষচন্দ্রই প্রথম ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার পক্ষে মত দেন। জওহরলাল নেহরুসহ অন্যান্য যুবনেতারা তাকে সমর্থন করেন। শেষ পর্যন্ত জাতীয় কংগ্রেসের ঐতিহাসিক লাহোর অধিবেশনে কংগ্রেস পূর্ণ স্বরাজ মতবাদ গ্রহণে বাধ্য হয়।
ভগৎ সিংয়ের ফাঁসি ও তার জীবন রক্ষায় কংগ্রেস নেতাদের ব্যর্থতায় ক্ষুব্ধ সুভাষচন্দ্র গান্ধী-আরউইন চুক্তি বিরোধী আন্দোলন শুরু করেন। তাকে কারারুদ্ধ করে ভারত থেকে নির্বাসিত করা হয়। নিষেধাজ্ঞা ভেঙে তিনি ভারতে ফিরে এলে আবার তাকে কারারুদ্ধ করা হয়।
আরও পড়ুন: ক্ষুদিরাম বসু’র প্রয়াণ
সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ জানুয়ারি ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্গত বাংলা প্রদেশের উড়িষ্যা বিভাগের (অধুনা, ভারতের ওড়িশা রাজ্য) কটকে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা প্রভাবতী বসু (দত্ত) ছিলেন উত্তর কলকাতার হাটখোলা দত্ত বাড়ির কন্যা এবং পিতা জানকীনাথ বসু ছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার বিখ্যাত “মাহীনগরের বসু পরিবার" এর সন্তান।
সুভাষচন্দ্র বসু ছিলেন তার পিতা-মাতার চৌদ্দ সন্তানের মধ্যে নবম তথা ষষ্ঠ পুত্র। তার বাবা জানকীনাথ বসু ছিলেন একজন সফল সরকারি আইনজীবী।
আরও পড়ুন: এস এম সুলতান’র জন্ম
ঐতিহাসিকদের মতে, ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট, সুভাষচন্দ্র বসুকে বহনকারী জাপানি বিমান, জাপান শাসিত ফোরমোসায় (বর্তমান তাইওয়ান) বিধ্বস্ত হওয়ার পর, আগুনে দগ্ধ হয়ে বসুর মৃত্যু ঘটে।
তার মৃত্যুর কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বহু ষড়যন্ত্র তত্ত্ব আবির্ভূত হয় এবং দীর্ঘকাল এগুলো তার মৃত্যু সম্পর্কে বিভিন্ন কল্পকাহিনী জীবিত রেখেছে।
১৯৬৮ - মওলানা মুহাম্মদ আকরাম খাঁ, একজন বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ।
১৯৬৯ - হুমায়ুন কবির, ভারতীয় বাঙালি শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, লেখক ও দার্শনিক। (জ.২২/০২/১৯০৬)
১৯৭৫ - শওকত আলী, রাজনীতিবিদ এবং বাংলা ভাষা আন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা। (জ. ১৯১৮)
১৯৮০ - দেবব্রত বিশ্বাস, স্বনামধন্য ভারতীয় বাঙালি রবীন্দ্রসঙ্গীত গায়ক ও শিক্ষক। (জ.২২/০৮/১৯১১)
১৯৯৮ - পার্সিস খামবাট্টা, একজন ভারতীয় মডেল ও অভিনেত্রী। (জ. ১৯৪৮)
২০০৯ - কিম দায়ে জং, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। (জ. ১৯২৫)
২০১৫ - শুভ্রা মুখোপাধ্যায়, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী। (জ. ১৯৪০)
সান নিউজ/এনজে