সান নিউজ ডেস্ক : আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে একসময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এই সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আরও পড়ুন : কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়’র প্রয়াণ
সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন‘।
আজ মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) ৩মাঘ , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৪ হিজরি। গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জী অনুসারে বছরের ১৭তম দিন।
একনজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
আরও পড়ুন : পরিবেশকর্মী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান’র জন্ম
ঘটনাবলি :
১২৫৮ মঙ্গোলরা বাগদাদ নগরী অধিকার করে ও ধ্বংসযজ্ঞে লিপ্ত হয়।
১৫৮৪ বোহেমিয়া গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার গ্রহণ করে।
১৫৯৫ ফ্রান্সের চতুর্দশ হেনরিক প্লেন যুদ্ধ ঘোষণা করেন।
১৬০৫ ডন কুইক্সোট প্রথম প্রকাশিত হয়।
১৮৪১ বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বত চূড়ার নাম মাউন্ট এভারেস্ট রাখা হয়েছিলো।
১৮৬৩ ভার্জিনিয়াতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
১৮৯৩ হাওয়াই প্রজাতন্ত্র ঘোষিত হয়।
১৯২৩ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের কতৃর্পক্ষ অবৈধভাবে একজন বিপ্লবী বিক্ষককে গ্রেফতার প্রতিবাদে ছেই ইয়েন পেই পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ করেন।
১৯৪৫ সোভিয়েত রাশিয়ার সৈন্য বাহিনী পোলান্ডের রাজধানী ওয়ারশকে জার্মান দখল থেকে মুক্ত করে। ইউরোপে যুদ্ধ শুরুর দিন থেকেই ওয়ারশতে যুদ্ধ আরম্ভ হয়।
১৯৪৫ সোভিয়েত সেনারা অগ্রসর হলে জার্মান নাজি বাহিনী কুখ্যাত আউচভিচ কনসেনট্রেশন ক্যাম্প ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়।
১৯৪৬ জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রথম অধিবেশন
১৯৫৩ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুনীর চৌধুরীর কবর নাটক রচনা শেষ হয়।
১৯৫৯ সেনেগাল ও ফরাসি সুদান একীভূত হয়ে মালি ফেডারেল স্টেট গঠন করে।
১৯৬১ কঙ্গোর জননায়ক প্যাট্রিস লুমুম্বা নিহত হন।
১৯৬৬ স্পেনের কাছে ভূমধ্যসাগরের আকাশে মার্কিন বি-ফিফটি টু বম্বারের সাথে কেসি-ওয়ান থ্রি ফাইভ জেট ট্যাংকারের সংঘর্ষ হয়।
১৯৭০ পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে।
১৯৮৭ দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা তথা 'সার্ক' সচিবালয় নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৯১ পঞ্চম হ্যারল্ড নরওয়ের রাজা হিসাবে অভিষিক্ত হন।
১৯৯১ উপসাগরীয় যুদ্ধে অপারেশন ডেসার্ট হার্ট শুরু হয়। ইরাক এদিন ৮টি স্কাড ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলে নিক্ষেপ করে।
১৯৯৫ জাপানের ওসাকা কোবে অঞ্চলে ভূমিকম্পে সাড়ে চার হাজারেরও বেশি লোকের প্রাণহানি ঘটে ও বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়।
২০০৮ ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ ফ্লাইট ৩৮ লন্ডন হিথ্রো বিমানবন্দরে দুর্ঘটনায় পড়ে যাতে প্রথম কোন বোয়িং ৭৭৭ পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় কোন প্রাণহানি ছাড়াই।
আরও পড়ুন : নাট্যকার ও গবেষক সেলিম আল দীন’র প্রয়াণ
জন্মদিন :
১৫০৪ পোপ চতুর্থ পায়াস।
১৭০৬ মার্কিন বিজ্ঞানী বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন।
১৮৬৩ রুশ অভিনেতা, নাট্যকার ও পরিচালক কনস্তানতিন স্তানিস্লাভস্কি।
১৮৯৫ স্বাধীনতা সংগ্রামী,বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবী বিজয়কুমার ভট্টাচার্য ।
১৯০৯ আশুতোষ ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট বাংলা সাহিত্য ও লোকসংস্কৃতি গবেষক ও অধ্যাপক।
১৯১৩ রাডার যন্ত্রের পুরোধা স্যার এ্যাডওয়ার্ড ফেনিশি।
১৯৩০ ক্ষেত্র গুপ্ত, বাঙালি অধ্যাপক, সমালোচক ও প্রাবন্ধিক।
১৯৩৩ প্রিন্স সদরউদ্দিন আগা খান।
১৯৪২ মোহাম্মদ আলী, বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন মুষ্টিযোদ্ধা।
মুহাম্মদ আলী ছিলেন একজন মার্কিন পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা, তাকে ক্রীড়ার ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হেভিওয়েট হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। ক্রীড়াজীবনের শুরুর দিকে আলী রিংয়ের ভেতরে ও বাইরে একজন অনুপ্রেরণাদায়ক ও বিতর্কিত ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
স্পোর্টস ইলাস্ট্রেটেড তাকে শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড় ও বিবিসি তাকে শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াব্যক্তিত্ব হিসেবে সম্মানিত করেছে।
মুহাম্মাদ আলীর জন্ম নাম ক্যাসিয়াস মার্সেলাস ক্লে জুনিয়র। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করার পর তিনি নাম পরিবর্তন করন।
ক্লে ১২ বছর বয়সে প্রশিক্ষণ শুরু করেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ২২ বছর বয়সে তিনি সনি লিস্টনকে পরাজিত করে বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে নেন। ফেব্রুয়ারি ২৫ থেকে সেপ্টেম্বর ১৯ পর্যন্ত তিনি অবিতর্কিত হেভিওয়েট বক্সিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সম্মান পান।
এর কয়েকদিন পরে, তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারণা সংগঠন ‘নেশন অব ইসলামে‘ যোগদান করে তার নাম পরিবর্তন করে রাখেন মুহাম্মাদ আলী। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সুন্নি ইসলামে ধর্মান্তরিত হন।
১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে, আলী তার ধর্মীয় বিশ্বাস ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে আমেরিকার অংশগ্রহণের বিরোধিতার কারণে মার্কিন সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক যোগদান করতে অস্বীকৃতি জানান। এর কয়েকদিন পরে তাকে এই কারণে দোষী সাব্যস্ত করে তার বক্সিং উপাধি কেরে নেওয়া হয়।
তিনি তার জীবনের সেরা সময়ে পরবর্তী চার বছর কোন ধরনের বক্সিং প্রতিযোগিয়ায় নামতে পারেননি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর আপীল সুপ্রিম কোর্টে পেশ হয়, যেখানে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সরিয়ে নেওয়া হয়। যুদ্ধের বিরুদ্ধে আলীর বিবেকজনিত কার্যকলাপ তাকে সংস্কৃতি বিরোধী প্রজন্মের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র করে তোলে। বক্সিং জগতে ফিরে এসে আলী ১৯৭৪ ও ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে আবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন।
শতাব্দীর সেরা লড়াই :
মার্চ ১৯৭১ সালে আলি জো ফ্রেজিয়ারের মুখোমুখি হন যা 'শতাব্দীর সেরা লড়াই' হিসাবে পরিচিত। বহুল আলোচিত এ লড়াইটি ছিলো দুই মহাবীরের লড়াই যা সকলকে শিহরিত করে। জো ফ্রেজিয়ার খেলায় জয়লাভ করেন ও আলি প্রথমবারের মত পরাজিত হন। ১৯৭৪ সালের ফিরতি লড়াইয়ে তিনি অবশ্য শিরোপা পুণরুদ্ধার করেন।
পেশাদার কুস্তিগীর জর্জ ওয়েগনার দ্বারা অনুপ্রাণিত আলী বক্সিং-এর সঙ্গে সম্পর্কহীন বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে সাংবাদিক সম্মেলন ও সাক্ষাতকারে স্পষ্ট মতামত জানাতে দ্বিধা করতেন না। আলী শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের বিরোধিতা করে আফ্রিকান আমেরিকান ক্রীড়াজগতের অবস্থান পরিবর্তন করতে সক্ষম হন।
আলীর বাংলাদেশ সফর :
১৯৭৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি একটি বিদেশি সংস্থা ৫ দিনের সফরে তাকে ঢাকায় এনেছিল। সে সময় তার সফর সঙ্গী ছিলেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী ওই সময়ের বিখ্যাত মডেল ভেরোনিকা পরশে, মেয়ে লায়লা আলী, ভাই, বাবা ও মা। এ সময় কিংবদন্তি বক্সার মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় প্রথম পদকজয়ী বক্সার আবদুল হালিম একই রিংয়ে নেমেছিলেন।
তবে সেদিন আবদুল হালিমকে নকআউট করেননি তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলী। তিনি আরও ছোট কাউকে চেয়েছিলেন তার সাথে মজা করার জন্য। তখন বাংলাদেশের জুনিয়র বক্সিং চ্যাম্পিয়ন ১২ বছর বয়সী গিয়াস উদ্দিন তার সাথে বক্সিং খেলার সুযোগ পান। সেই সফরে বাংলাদেশ সরকার তাকে সম্মান সূচক নাগরিকত্ব প্রদান করে। পল্টনের বক্সিং স্টেডিয়ামকে তার নামে নামকরণ করা হয়।
১৯৮০ সালে তিনি পারকিন্সন্স রোগে আক্রান্ত হন। তাকে যখন বলা হয়, তিনি তার রোগের জন্য বক্সিংকে দায়ী করেন কিনা, তিনি বলেন বক্সিং না করলে এত বিখ্যাত হতেন না।
অবসরের পরে তিনি তার জীবনকে মানবতার কল্যাণে উৎসর্গ করেছিলেন। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন।
৩২ বছর পারকিনসন্স রোগে ভোগার পর ০৩ জুন, ২০১৬ সালে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান কিংবদন্তি বক্সার মুহাম্মাদ আলী।
১৯৪৫ জাভেদ আখতার, ভারতীয় কবি, গীতিকার এবং স্ক্রিপ্ট রাইটার।
১৯৫৩ অঞ্জন দত্ত, ভারতীয় গায়ক , গীতিকার এবং চিত্রপরিচালক।
১৯৬২ জিম ক্যারি, কানাডীয় বংশোদ্ভুত মার্কিন অভিনেতা।
আরও পড়ুন : বিশ্ব ইজতেমা : নিরাপদ পরিবেশ বাংলাদেশ
মৃত্যুবার্ষিকী :
১৫৯৮ রাশিয়ার জার প্রথম ফিয়োডর।
১৮৯১ রামচন্দ্র দত্ত ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের অন্যতম গৃহীভক্ত।
মার্কিন ইতিহাসের জনক জর্জ ব্যানক্রাফ্ট।
১৮৯৩ রাদারফোর্ড বি. হেইজ্, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৯তম রাষ্ট্রপতি।
১৯৩০ গওহর জান,ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী।
১৯৪০ ভারতে ফুটবল খেলার জনক নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী।
১৯৬১ কঙ্গোর প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্যাট্রিস লুমুম্বা।
১৯৭৬ ইতালীয় চলচ্চিত্র পরিচালক ও লেখক লুকিনো ভিসকেন্তি।
১৯৭৮ শিক্ষাবিদ ও জাতীয়তাবাদী তাত্ত্বিক মুজাফফর আহমদ চৌধুরী।
২০০৩ ভারতীয় বাঙালি সঙ্গীতশিল্পী সমরেশ রায়।
২০১০ জ্যোতি বসু, ভারতীয় বাঙালি কমিউনিস্ট নেতা তথা পশ্চিমবঙ্গের নবম মুখ্যমন্ত্রী।
২০১১ গীতা দে, বাংলা চলচ্চিত্র, থিয়েটার এবং বাঙালি লোকনাট্যের ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী।
২০১৪ সুচিত্রা সেন, ভারতীয় বাঙালি অভিনেত্রী।
২০১৫ গোবিন্দ হালদার, বাঙালি গীতিকার।
২০২২ ভারতীয় বাঙালি লেখক মিহির সেনগুপ্ত।
সান নিউজ/জেএইচ/এইচএন