আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কানাডায় ২০০ কোটি বছরের পুরোনো পানির সন্ধ্যান পেয়েছে বিজ্ঞানীরা। প্রাচীন এই পানির সঙ্গে মিশে থাকা হিলিয়াম, নিয়ন, আর্গন ও জেনন বিশ্লেষণ করে এর বয়স বের করতে তারা সক্ষম হয়েছেন।যা পৃথিবীর প্রাচীনতম বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সায়েন্স অ্যালার্টের প্রতিবেদনে জানানো হয়, অন্টারিওর কিড মাইন খনিতে ভূপৃষ্ঠের প্রায় দুই মাইল গভীরে একটি প্রাচীন পুলে এই পানি আবিষ্কৃত হয়। প্রথম ২০১৩ সালে ওই এলাকায় বিশ্বের গভীরতম একটি ধাতব পদার্থের খনিতে বিজ্ঞানীরা যে পানির সন্ধান পান সেটি ছিল ১৫০ কোটি বছরের পুরোনো। যা ছিল ভূপৃষ্ঠের দেড় মাইল গভীরে।
বিজ্ঞানীরা গভীরতা দেখে মাটি আরও খুঁড়ে যেতে উৎসাহ পান। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে বেরিয়ে আসে এর চেয়েও পুরোনো পানির খোঁজ।
সে সময় টরেন্টো ইউনিভার্সিটির জিওকেমিস্ট বারবারা শেরউড লোলার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘২০১৩ সালের আবিষ্কারের পর বহমান পানির প্রবাহ কত পুরোনো হতে পারে, সে বিষয়ে আগ্রহ তৈরি হয় আমাদের। তাই গবেষণা চালিয়ে যাই আমরা। খনিটি অনেক গভীর বলে সেটির সঙ্গে সঙ্গে আমরাও ভূপৃষ্ঠের গভীর থেকে গভীরতম অংশে পৌঁছাতে পেরেছি।’
২০১৬ সালে আবিষ্কৃত প্রাচীন পানির দ্বিতীয় উৎসটি ছিল বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি।
শেরউড লোলার বলেন, ‘যখন কেউ শোনে এই পানির কথা, তারা ভাবে পাথরে আটকে থাকা সামান্য একটু পানি হয়তো আমরা খুঁজে পেয়েছি। কিন্তু আসলে যে পরিমাণ পানির সন্ধান পেয়েছি, তা অনেক। প্রতি মিনিটে এর গতিবেগ এক লিটার।’
ভূগর্ভস্থ পানির স্রোত সাধারণত ভূপৃষ্ঠের বহমান পানির স্রোতের তুলনায় অনেক ধীরগতির হয়ে থাকে। বছরে ভূগর্ভস্থ পানির গতিবেগ এক মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
কিন্তু খননের পর ভূগর্ভস্থ পানির স্রোতের গতিবেগ প্রতি মিনিটে দুই লিটার।
প্রাচীন এই পানির সঙ্গে মিশে থাকা বিভিন্ন গ্যাস (যেমন: হিলিয়াম, নিয়ন, আর্গন ও জেনন) বিশ্লেষণ করে এর বয়স বের করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এ নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশ হয় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের স্যান ফ্রান্সিসকোতে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়নের নিয়মিত বৈঠকে।
এর আগে অক্টোবরের গবেষণায় জানা যায়, ভূপৃষ্ঠ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন এই পানি যে পরিবেশে উৎপন্ন হয়েছে, সেটি স্বতন্ত্র বাস্তুতন্ত্র জন্ম দিতে সক্ষম। আর এই বাস্তুতন্ত্র টিকে থাকতে পারে কয়েক শ কোটি বছর।
অবশ্য এখনও সেখানে জীবন্ত কোনো প্রাণের সন্ধান পাননি বিজ্ঞানীরা। গবেষণার বাকি আরও অনেক। বিজ্ঞানীদের আশা, আরও এমন কিছু প্রাচীন পানির উৎসের সন্ধান মিলতে পারে যা আরও বিশদ অনুসন্ধানে সাহায্য করবে তাদের।
সান নিউজ/ এমএম