ফিচার ডেস্ক: সমুদ্র আমাদের সবার ভালো লাগে। সমুদ্র যতটা সুন্দর হয় ঠিক ততোটাই ভয়ানকও হয়। যতদূর চোখ যায় উত্তাল সমুদ্র, আর এই নীল সাগরের ঠিক মাঝ বরাবর ভেসে বেড়াচ্ছে অসম্ভব সুন্দর কারুকাজ করা একটি মসজিদ।
হ্যাঁ, পানিতেই ভাসছে সেটি। অদ্ভুত সুন্দর এই মসজিদটির অবস্থান মরক্কো উপকূলের মাঝ সাগরে। এই সুন্দর মসজিদটির নাম গ্র্যান্ড মস্ক হাসান–২ বা দ্বিতীয় হাসান মসজিদ।
এই মসজিদটি তৈরি করেছেন বাদশাহ দ্বিতীয় হাসান। এটি অবস্থিত কাসাব্লাঙ্কা শহরে। দূরের কোনো জাহাজ থেকে মসজিদটিকে দেখলে মনে হবে যেন ঢেউয়ের তালে তালে দোল খাচ্ছে মসজিদটি। সে সঙ্গে মনে হবে পানির ওপর নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা।
অদ্ভুত সুন্দর এই মসজিদটিতে একসঙ্গে এক লাখ পাঁচ হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। মসজিদের ভেতরের মানুষ ধারণ ক্ষমতা ২৫,০০০ জন আর বাইরের ধারণ ক্ষমতা ৮০,০০০ জন।
ফরাসি কোম্পানি বয়গিসের প্রকৌশলীরা এই মসজিদটি নির্মাণের কাজ করেন। এর নকশা তৈরি করেছিলেন মিশেল পিনচিউ নামের একজন ফরাসি স্থপতি। এটি মরক্কোর বৃহত্তম মসজিদ এবং পৃথিবী বৃহৎ মসজিদের তালিকায় এর অবস্থান ১৩তম। মসজিদটির তিনভাগের একভাগ আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর অবস্থিত হওয়ায় এটি ভাসমান মসজিদ হিসেবেও পরিচিত।
এই মসজিদটির মিনারের উচ্চতা ২১০ মিটার। এর মেঝে থেকে ছাদের উচ্চতা প্রায় ৬৫ মিটার। স্বয়ংক্রিয়ভাবে মসজিদটির ছাদ প্রতি ৩ মিনিট পরপর খুলে যায়। ফলে মসজিদের ভেতর আলো বাতাস প্রবেশ করে। যদিও বৃষ্টির সময় ছাদটি খোলা হয় না।
প্রায় ২২ দশমিক ২৪ একর জায়গা নিয়ে মসজিদটির অবস্থান। মূল ভবনের সঙ্গেই রয়েছে ওযুখানা, কোরআন শিক্ষালয়, লাইব্রেরি ও কনফারেন্স রুম। এতে থাকা পিলারের সংখ্যা ২,৫০০। মসজিদের অভ্যন্তরীণ এলাকা পুরোটাই মোড়া টাইলসে। আশেপাশে সাজানো রয়েছে ১২৪টি ঝরনা ও ৫০টি ক্রিস্টালের ঝাড়বাতি।
১৯৮৭ সালের আগস্ট মাসে এই মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু করে। প্রায় সাত বছরে ২৫ হাজার শ্রমিক ও কারুশিল্পীর পরিশ্রমে ১৯৯৩ সালে এটি নির্মিত হয়। এই মসজিদটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৮০ কোটি ডলার। সুন্দর এই মসজিদটির সৌন্দর্য উপভোগে যেতে পারেন যেকোনো সময়ে।
সাননিউজ/এএসএম