সাননিউজ ডেস্ক: সুইজারল্যান্ড বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বলা হয় একে। দেশটি বিশ্বজুড়ে ভ্রমণপিপাসু মানুষের কাছে অন্যতম কাঙ্খিত গন্তব্য। তবে শুধু বেড়ানোর জন্যই নয়, সব বিচারেই দেশ হিসেবে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি।
আয়তনে ছোট হলেও দেশটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণ। ইউরোপের পাহাড়ী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সুইজারল্যান্ড। এর আয়তনের ৭০ শতাংশ ঘিরে রয়েছে আল্পস পর্বতমালা।
সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে উঁচু পর্বতের নাম মন্টি রোজা। বিশ্বের অন্যতম অর্থসংস্থান হওয়ায় এখানে বহু ভ্রমণকারী ব্যবসার জন্যও আসে। সুইজারল্যান্ডে বার্নের পুরাতন শহর, সাধু গলের মঠ এবং মন্টি স্যান জিওরজিও সহ ১১টি ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে।
তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও এর আরো অনেক বৈশিষ্ট্যের কারণে এটি বিখ্যাত। সত্যিই বিষয়টি অবাক করার মতোই। সুন্দর দেশ সুইজারল্যান্ডেরউত্তর পশ্চিম প্রান্তে একটি শহর রয়েছে যার নাম সোলোথার্ন।
এই শহরটি পর্যটকদের কাছে বিশেষ কারণে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। এখানে যারাই বেড়াতে আসেন সেই পর্যটকেরা কিছু সময়ের জন্য থমকে যান শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত টাউন স্কয়ারের সামনে থাকা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে।
এখানেই আছে একটি অদ্ভুত বিষয় যা ভাবাবে আপনাকেও। আসলে এই ঘড়িটি আর দশটা সাধারণ ঘড়ির মতো একেবারেই নয় তাই তা অসাধারণ। পৃথিবীর সব ঘড়িতে যেখানে এক থেকে বারোটি কাটা দেখতে পাবেন আপনি সেখানে এই ঘড়িতে আছে এগারোটি কাটা। অর্থাত্ বারোটার কাটা নেই সেখানে। তাই কখনও বারোটা বাজে না এই ঘড়িতে।
এর কারণ জানলে আশ্চর্য হবেন বৈকি! এখানে শুধু ঘড়ি নয়, এই শহরের অনেক কিছুতেই রয়েছে এগারো সংখ্যার ছাপ। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে এই শহরে রয়েছে এগারোটি জাদুঘর, এগারোটি গির্জা, এগারোটি ঝর্ণাসহ আরো এমন কিছু যা অন্যান্য জায়গার থেকে আলাদা। কিন্তু এগারোকেই কেন বেছে নেয়া হয়েছে?
এর জন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে হাজার বছর আগে। যখন এই নগরীর সৃষ্টি হয়েছিল। একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই নগরীতে ইলভ নামে এক জার্মান আসেন যিনি এই নগর প্রতিষ্ঠায় তার অনেকটাই পরিশ্রম দিয়েছিলেন।
তবে ওই সময় ইলভ সফল না হলেও সোলোথার্নবাসী তাকে তার অবদানের জন্যে মনে রেখেছে। এই কারণে ইলভ স্মরণে তার নামের সঙ্গে মিল রেখে শহরে ইলেভেন নামে কয়েকটি স্থাপনা তৈরি করা হয় সেখানে।
সেই থেকে এই ধারা রয়েছে। এখানেই শেষ নয়, ১২১৫ সালে যখন এই শহরে কাউন্সিলর নির্বাচন হয় তখন এগারো জনকে নির্বাচন করা হয়েছিল। ১৪৮১ সালে সোলোথার্ন কে সুইস কনফেডারেশনের এগারোতম প্রদেশ হিসেবে যুক্ত করা হয়। ওই সময় এগারো জনক শহরের রক্ষাকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।
এরপর পনেরো শতকের শুরুর দিকে আবার যখন শহরে সেইন্ট আরসু নামক এক গির্জা নির্মাণ করা হয় তখন গির্জায় এগারোটি দরোজা, এগারোটি জানালা, এগারোটি রো, এগারোটি ঘণ্টা, এগারো রকমের পাথর ব্যবহার করা হয়েছিল।
এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই শহরবাসীর মনে এগারো সংখ্যাটির প্রতি রয়েছে এক বিশেষ দুর্বলতা যার সঙ্গে তাদের ইতিহাস মিশে রয়েছে।
সাননিউজ/এএসএম