সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক : একটি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতির সংগ্রহভান্ডার হলো- জাদুঘর। এই সংগ্রহশালা থেকে খুব সহজে যে কেউ প্রত্যক্ষ শিক্ষা লাভ করতে পারে। যে কারণে, জাদুঘরকে বলা হয়- জনগণের বিশ্ববিদ্যালয়। আজ মঙ্গলবার (১৮ মে) আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস। প্রতিবছরের এবারও নানা আয়োজনে সারা বিশ্বের বিভিন্ন যথাযথ গুরুত্বসহ জাদুঘরসমূহ দিবসটি পালন করবে। বাংলাদেশেও দিবসটি পালন উপলেক্ষ বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর ও আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ দিবনটি পালনে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে দিবসটি পালন করবে।
ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব মিউজিয়াম (আইসিওএম) এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্বাচন করেছে ‘জাদুঘরের ভবিষ্যৎ : পুনরুদ্ধার ও পুনর্ভাবনা’। ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত আইসিওএমের সদস্য হিসেবে বর্তমানে ১০৭ দেশের ২৮ হাজার জাদুঘর এ প্রতিপাদ্যে দিবসটি উদযাপন করবে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের জাদুঘরের মতো দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। মঙ্গলবার (১৮ মে) সকাল ১১টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে এই আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে সভাপতিত্ব করবেন জাদুঘরের মহাপরিচালক- খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। প্রধান আলোচক হিসেবে থাকবেন জাদুঘরের সচিব-গাজী মো. ওয়ালি-উল-হক। এবং আলোচনায় অংশ নিবেন জাদুঘরের কীপার নূরে নাসরীন, ড. বিজয় কৃষ্ণ বণিক এবং জনশিক্ষা বিভাগের কীপার ড. শিহাব শাহরিয়ার প্রমুখ।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ-বাংলাদেশ ন্যাশনাল কমিটি দিবসটি উপলক্ষে অনলাইনে সেমিনারের আয়োজন করবে।
ধারণা করা হয়, বিশ্বের প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয় প্রাচীন গ্রিস ও মিসরে। মিসরে টলেমি শাসনামলে আলেকজান্দ্রিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় শতাব্দীতে। আমাদের উপমহাদেশে জাদুঘর চর্চা শুরু হয় ১৭৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে।
বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় একশটি জাদুঘর আছে। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর দেশের প্রধান জাদুঘর হিসেবে বিবেচিত। জাতীয় জাদুঘরে সংগৃহীত নিদর্শন সংখ্যা প্রায় এক লাখ। ১৯১৩ সালের ২০ মার্চ তৎকালীন সচিবালয়ে (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) জাদুঘরের কার্যক্রম শুরু হয়। তখন এ জাদুঘরের নাম ছিল ঢাকা জাদুঘর। ১৯১৪ সালের ২৫ আগস্ট সর্বসাধারণের জন্য এ জাদুঘর উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ঢাকা জাদুঘরের প্রথম কিউরেটর নলিনীকান্ত ভট্টশালী। পরে ১৯৮৩ সালের ১৭ নভেম্বর শাহবাগ এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের জন্য একটি অত্যাধুনিক বৃহদায়তন ভবনের উদ্বোধন করা হয়। দেশের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়াই জাদুঘরের উদ্দেশ্য।
সাননিউজ/এইচ এস/বিএস