ঐতিহ্য ও কৃষ্টি
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী

উদীচীর মাসব্যাপি অনুষ্ঠানমালা শনিবার শুরু

সাংস্কৃতিক প্রতিবেদক: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করতে যাচ্ছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। ঐতিহ্যবাহী লোকজধারার বিভিন্ন পরিবেশনার মাধ্যমে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও অর্জনসমূহ বাস্তবায়নে সাংস্কৃতিক জাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে সংগঠনটি মাসব্যাপী এ অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করতে যাচ্ছে।

পালাগান, বাউল গান, গম্ভীরা, যাত্রা, নাটক, চলচ্চিত্র প্রদর্শন ইত্যাদি দিয়ে সাজানো থাকবে পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত মাসব্যাপি এ অনুষ্ঠানমালা। ঢাকাসহ দেশে বিদেশে উদীচীর প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক শাখা একযোগে এই অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করবে।

আগামী ১৩ মার্চ শনিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সংসদের আয়োজনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে এই কর্মসূচি। অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে পরের দিন ১৪ মার্চ রবিবার বাহাদুরশাহ পার্কে থাকছে পালাগানের আসর। ১৩ এপ্রিল শেষ হবে মাসব্যাপি এই অনুষ্ঠানমালা।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মাসব্যাপি অনুষ্ঠানমালার ঘোষণা দেন উদীচীর নেতারা। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উদীচীর কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি হাবিবুল আলম, সহ-সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতা ইমাম, ইকবালুল হক খান, শিল্পী আক্তার রুমী দে, মিনহাজুল আবেদীন মৃদুলসহ সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৩ মার্চ বিকেল ৫টা থেকে ঢাকার রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ এবং ১৪ মার্চ একই সময়ে বাহাদুরশাহ পার্কে আয়োজন করা হবে পালাগানের আসর। পালাগানের আসরে অংশ নেবেন শিল্পী জালাল সরকার ও তার দল এবং শিল্পী সোনিয়া সরকার ও তার দল। এছাড়াও এতে উদীচী কেন্দ্রীয় সঙ্গীত বিভাগ ও আমন্ত্রিত শিল্পীদের বাউল গান পরিবেশিত হবে এ অনুষ্ঠানে।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আয়োজন সম্পর্কে বলেন, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ এখন অপেক্ষায় আছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপনের। অথচ, আমাদের এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য জনগণের যে সংগ্রাম, শহিদের যে আত্মদান, তার মূল লক্ষ্য ছিল একটি শোষণহীন সুখী সমৃদ্ধশালী সমাজ প্রতিষ্ঠা; তা এখনও প্রতিষ্ঠা হয়নি! মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত সংবিধান আজ ক্ষতবিক্ষত। রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি আজ নির্বাসিত। এমনই সব গ্লানিকর বিপরীত বাস্তবতা আমাদের জীবন ঘিরে রেখেছে, গ্রাস করে চলেছে আমাদের সেই স্বাধীনতার বিভিন্ন অর্জনসমূহ।

তারা বলেন, ইসলামোফোবিয়া সৃষ্টির মধ্য দিয়ে বিশ্বকে নতুন এক ‘ভ্রান্তিতে’ ফেলে সুনির্দিষ্টভাবে একটা ধর্মীয় জনগোষ্ঠীকে বিশ্বকাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেওয়া এবং সাম্রাজ্যবাদী পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে দেশে দেশে ধর্মীয় ও জাতিগত উগ্রবাদের বিস্তৃতি ঘটানোর গোটা প্রক্রিয়াটি বিশ্বকে একটা নতুন বাস্তবতায় দাঁড় করিয়েছে। আমাদের দেশেও এর অভিঘাত পড়েছে ভয়ঙ্করভাবে। দেশের মধ্যেও সামাজিক মদদ পাচ্ছে ধর্মীয় উগ্রতা। তার ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রও হয়ে উঠছে ক্রমাগত সাম্প্রদায়িক। পাশাপাশি রাষ্ট্র হয়ে উঠছে শোষণের সবথেকে ঘৃণ্য বর্বর যন্ত্র- চরম নৈরাজ্যবাদী। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা, চরম অন্যায়, অবিচার, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট, ফ্যাসিবাদী প্রবনতা, অসহিষ্ণুতা ও সাম্প্রদায়িকতার সামাজিকীকরণ ঘটে গেছে রাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে। সাংস্কৃতিক অবক্ষয় গোটা দেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

তারা আরও বলেন, সামাজিক অস্থিরতা ও পরস্পর বিচ্ছিন্নতার সুযোগ নিচ্ছে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতিশক্তি। কালা আইনের খড়গের নিচে কথা বলার অধিকার মুখ থুবড়ে পড়েছে, চিন্তার স্বাধীনতাও রহিত হয়েছে। বিপরীত মত ভীষণ জব্দ, পান থেকে চুন খসলেই মৃত্যু এখানে পানির দর পেয়ে যায়। অধিকারের কথা বলতে গিয়ে গুলিতে ঝাঁঝরা হয় শ্রমিকের বুক। গুম ঘরে জমা হয় অগুনতি লাশ। নারীর মর্যাদা কলুষিত করে অট্টহাস্যে উল্লাস করছে মানুষরূপী পশুরা।

উন্নয়নের ভ্রূকুটির কাছে জড়োসড়ো গণতন্ত্র। সাম্প্রদায়িক উগ্রগোষ্ঠীর নসিহতে আমাদের দিন ও রাত নির্ধারিত হয়। রাষ্ট্রধর্মের বজ্জাতি গিলে খায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। যে কারণে, রাজনীতি সচেতন সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে উদীচী বৈষম্যমূলক ও দুর্বৃত্তায়িত রাজনীতির হাত থেকে দেশ, মানুষ ও সংস্কৃতিকে বাঁচানোর জন্য লোকজধারার বিভিন্ন সাংস্কৃতিক উপাদান নিয়ে এই আয়োজন করছে। যার মধ্য দিয়ে লাখো শহীদের আত্মদানের মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মানের যে আকাঙ্খা মূর্ত হয়ে উঠেছিল সেই পথে দেশের মানুষকে নিয়ে আসার জন্য আমাদের এই চেষ্টা।

সান নিউজ/আরকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

ইসলামী ব্যাংকের সাথে হাব-এর মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর উদ্যোগে হ...

ঢাকার বায়ুর মান অস্বাস্থ্যকর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বায়ুদূষণের কবল থেকে নিস্তার মিলছে না দিল্ল...

২৪ ঘণ্টার মধ্যে সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী...

বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু

জেলা প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃ...

কাল গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় 

নিজস্ব প্রতিবেদক: গ্যাস পাইপলাইনের জরুরি স্থানান্তর বা মেরাম...

অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে চোখের যত্ন ও পরিষেবা সম্প্রসারণের জন্...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা