আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আগেকার দিনের মানুষের ইতিহাস-ঐতিহ্য আমাদের নতুন দিনের পথকে চলতে সাহায্য করে। প্রাচীন দর্শনকে কাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের আশঙ্কাকে জয় করবার চেষ্টা করে থাকে মানুষ। আবার অনেক সময় প্রাচীন মানুষদের রেখে যাওয়া ঐতিহ্য আমাদের কোন জাতির পরিচয় এবং গুরুত্বও বহন করে থাকে।
কিন্তু মানুষের ছোঁয়া ছাড়া প্রাচীন কোন রাজপ্রাসাদের কথা জানেন কি যা প্রাকৃতিকভাবেই সৃষ্টি হয়েছে? তুরস্কে এমন এক প্রাসাদ আছে যাকে বলা হয় ‘তুলোর প্রাসাদ’। স্থানীয় ভাষায় এর নাম পামুক্কালে। তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত দেনিজলি রাজ্যে আপনি দেখতে পাবেন এই অদ্ভুত সুন্দর প্রাসাদ। এখানে প্রকৃতি আমাদের জন্যে তার উৎকৃষ্ট একটি সৃষ্টি উপহার দিয়েছে যা দেখতে বছর বছর মানুষের ভিড় জমে।
এই প্রাসাদ আসলেই তুলো দিয়ে সৃষ্টি হয়নি। তবে এর রঙ তুলোর মতো ধবধবে সাদা হওয়ার পেছনে রয়েছে অদ্ভুত সুন্দর কারণ। আপনার মনে হবে বরফের রাজ্যে এসে গেছেন। তবে যেটাকে আপনি বরফ ভাবছেন সেটা হলো সামান্য লবণ। এখানে রয়েছে খনিজ লবণের প্রাচুর্য। মেন্দেরেস নদী ও আজিয়ান সাগরের সংযোগস্থলে রয়েছে এই বিশাল প্রাসাদ। তবে আবহাওয়া কিন্তু ভারতের মতোই নাতিশীতোষ্ণ।
পাহাড়ি এই উপত্যকায় থাকা খনিজ লবণ আপনার জন্যে প্রাকৃতিক স্পায়ের কাজ করবে। খনিজ লবণগুলি হাওয়ায় জমাট বেঁধে চুনাপাথরের এই শক্ত প্রাসাদ গড়ে উঠেছে। আবার এর সঙ্গে রয়েছে গরম ঝর্ণার প্রাচুর্য। গরম জলের এই ঝর্ণাগুলি জায়গায় জায়গায় আবার সৃষ্টি করেছে ছোট ছোট জলাশয়ের। সেই উষ্ণ জলে আপনি স্নানও করতে পারবেন আবার তাতে পা ডুবিয়ে তার আরামও উপভোগ করতে পারবেন।
এমন অদ্ভুত প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের জন্যে এখন এই জায়গাটি বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। ফলে পর্যটন শিল্প প্রসার পেয়েছে এখানে। সেটাকে ভিত্তি করেই নতুন আর্থিক উন্নতির পথ খোলায় তুরস্ক সরকারও এর প্রতি এখন যত্নশীল হয়েছে। এর পাশে আবার গ্রিক-রোমানদের প্রাচীন শহর হিয়েরাপোলিস রয়েছে। তার নিদর্শন স্বরূপ সেখানকার রাস্তা, মন্দির, স্নানাগার সব সুন্দর করে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে থাকে। এই গোটা শহরটিও আপনি দেখতে পারবেন এয়ার বেলুনে করে ঘুরে ঘুরে।
সান নিউজ/এসএস