সান নিউজ ডেস্ক: আজকের ঘটনা কাল অতীত। প্রত্যেকটি অতীত সময়ের স্রোতে এক সময় হয়ে উঠে ইতিহাস। পৃথিবীর বয়স যতোই বাড়ে ইতিহাস ততোই সমৃদ্ধ হয়। এ সমৃদ্ধ ইতিহাসের প্রতিটি ঘটনার প্রতি মানুষের আগ্রহ চিরাচরিত। ইতিহাসের প্রতিটি দিন তাই ভীষণ গুরুত্ব পায় সকলের কাছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব বই ও কপিরাইট দিবস
সান নিউজের পাঠকদের আগ্রহকে গুরুত্ব দিয়ে সংযোজন করেছে নতুন আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিন’।
আজ বুধবার (২৪ এপ্রিল) ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৪ হিজরী। এক নজরে দেখে নিন ইতিহাসের এ দিনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা, বিশিষ্টজনের জন্ম-মৃত্যুদিনসহ গুরুত্বপূর্ণ আরও কিছু বিষয়।
আরও পড়ুন: বিশ্ব কণ্ঠ দিবস
ঘটনাবলী:
১০৬১ - ইংল্যান্ডের আকাশে হ্যালির ধূমকেতু দেখা যায়।
১২৭১ - ভ্যানেশীয় বিখ্যাত পর্যটক ও ব্যবসায়ী মার্কো পোলো তার ঐতিহাসিক এশিয়া সফর শুরু করেন।
১৫৫৮ - ফ্রান্সের যুবরাজ ফ্রাঙ্কোইস মেরি স্টুয়ার্টকে বিয়ে করেন।
১৭৬২ - রাশিয়া ও প্রুশিয়া শান্তিচুক্তি করে।
১৮০০ - লাইব্রেরি অব কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করা হয়।
১৮৯৮ - মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে স্পেন যুদ্ধ ঘোষণা করে।
১৯১২ - ব্রিটিশ শাসিত আয়ারল্যান্ড স্বাধীনতার দাবীতে এবং সেদেশে ইংরেজদের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করে।
১৯১৬ - ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে আয়ারল্যান্ডের গণ-অভ্যুত্থান শুরু।
১৯২৬ - যক্ষার ভ্যাকসিন বিসিজি আবিষ্কার হয়।
১৯৪৫ - সাবেক সোভিয়েত সেনাবাহিনী বার্লিনে প্রবেশ করে।
১৯৫৪ - রাজশাহীর কারাগারের খাপড়া ওয়ার্ডে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে কম্পরাম সিং, আনোয়ার হোসেন প্রমুখ ৭ জন রাজবন্দীকে হত্যা করা হয়।
১৯৫৫ - প্রথম বান্দুং সম্মেলন সমাপ্ত হয়।
১৯৭০ - গাম্বিয়া প্রজাতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ঘোষিত হয়।
২০১৩ - রানা প্লাজা ট্র্যাজিডিতে প্রাণ হারায় ১১৩৪ জন শ্রমিক এবং আহত হয় আড়াই হাজারেরও বেশি শ্রমিক। এটি ইতিহাসের তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে পরিচিত।
আরও পড়ুন: বিশ্ব হোমিওপ্যাথি দিবস
জন্মদিন:
৭০২ - ইমাম জাফর আল-সাদিক, শিয়া ইমাম।
১৮৬৫ - মুরলীধর বন্দ্যোপাধ্যায়, নারীশিক্ষার পথপ্রদর্শক শিক্ষাবিদ। (মৃ. ১৯৩৩)
১৮৯৭ - বেনজামিন হোর্ফ, মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী। (মৃ. ১৯৪১)
১৯০৮ - যোসেফ গসলোভস্কি, পোলিশ ভাস্কর। (মৃ. ১৯৬৩)
১৯২৮ - টমি ডোচার্টি, স্কটিশ ফুটবলার এবং পরিচালক।
১৯৩৪ - শার্লি ম্যাকলেইন, মার্কিন অভিনেত্রী, গায়িকা, নৃত্যশিল্পী, সমাজকর্মী ও লেখক।
১৯৪২ - বারবারা স্ট্রাইস্যান্ড, মার্কিন গায়িকা, গীতিকার,অভিনেত্রী এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা।
১৯৪৬ - ভারতের প্রখ্যাত নারীবাদী লেখক, প্রশিক্ষক এবং অধিকারকর্মী কমলা ভাসিন। (মৃ. ২০২১)
১৯৬৪ - জিমোঁ উন্সু, বেনিনীয় অভিনেতা ও মডেল।
১৯৬৮ - এইডান গিলেন, আইরিশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেতা।
১৯৭৩ - শচীন টেন্ডুলকার, ভারতীয় ক্রিকেটার।
১৯৮৭ - ইয়ান ভের্তোনেন, বেলজিয়াম ফুটবলার।
১৯৮৭ - বরুণ ধবন, ভারতীয় চলচ্চিত্র অভিনেতা।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস
মৃত্যুবার্ষিকী:
১৭৩১ - ড্যানিয়েল ডিফো, ইংরেজ ব্যবসায়ী, লেখক, সাংবাদিক, প্যাম্ফলেট রচয়িতা এবং গোয়েন্দা।
১৯৪২ - দীনানাথ মঙ্গেশকর, মারাঠি মঞ্চ অভিনেতা, নাট্য সঙ্গীতজ্ঞ এবং হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী। (জ. ১৯০০)
১৯৬৫ - লুইস ড্রেসার, আমেরিকান অভিনেত্রী।
১৯৭২ - যামিনী রায়, বাঙালি চিত্রশিল্পী। (জ.১৮৮৭)
১৯৭২ - ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায়, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন-এর অন্যতম ব্যক্তিত্ব এবং অগ্নিযুগের বিপ্লবী। (জ. ১৯০২)
২০০৬ - নাসরীন পারভীন হক, বাংলাদেশের অন্যতম মানবাধিকার নেত্রী।
২০১১ - সত্য সাঁই বাবা, (পূর্বাশ্রমের নাম সত্যনারায়ণ রাজু) ভারতীয় হিন্দু ধর্মগুরু, আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব ও শিক্ষাবিদ। (জ. ১৯২৬)
আরও পড়ুন: আধুনিক অলিম্পিকের সূচনা
দিবস:
জাতীয় পঞ্চায়েতী রাজ দিবস। (ভারত)
রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি দিবস। (বাংলাদেশ)
রানা প্লাজা নামের একটি বহুতল ভবন ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে ভবনটি ধসে পড়ে। ভবনের কয়েকটি তলা নিচে ডেবে যায়। কিছু অংশ পাশের একটি ভবনের ওপর পড়ে।
এ দুর্ঘটনায় ১১৭৫ জন শ্রমিক নিহত এবং ২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়, যা বিশ্বের ইতিহাসে ৩য় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
ধ্বংসাবশেষ সাধারণ জনগণ, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ চালায়। ভবনটিতে পোশাক কারখানা, একটি ব্যাংক এবং একাধিক অন্যান্য দোকান ছিল, সকালে ব্যস্ত সময়ে এ ধসের ঘটনাটি ঘটে।
আরও পড়ুন: জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস
ভবনটিতে ফাটল থাকার কারণে ভবন না ব্যবহারের সতর্ক বার্তা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছিল। এর মাত্র ৫ মাস আগে ঢাকা পোশাক কারখানায় একটি বড় অগ্নিকাণ্ডের পর এ দুর্ঘটনাটি হয়, যেটি বাংলাদেশে ঘটা সবচেয়ে বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল দুর্ঘটনা।
সাভার বাসস্ট্যান্ডের কাছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশেই নয়তলা রানা প্লাজা ভবনটি। এতে ভূগর্ভস্থ তলায় গাড়ি রাখার জায়গা। দ্বিতীয় তলার বিপণিকেন্দ্রে বহু দোকান ছিল। তৃতীয় থেকে সপ্তম তলা পর্যন্ত পোশাক কারখানা। এর ওপরের দুটি তলা খালি ছিল। ব্যাংকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় ছিল প্রথম তলায়।
আরও পড়ুন: জাতীয় চলচ্চিত্র দিবস
গার্মেন্টস কারখানায় প্রায় ৫০০০ এর মত কর্মী কাজ করত। ২০০৭ সালে রানা প্লাজা নির্মাণ করার আগে জায়গাটি ছিল পরিত্যক্ত ডোবা। ভবন নির্মাণ করার আগে বালু ফেলে এটি ভরাট করা হয়।
বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের প্রধান আলী আহমেদ খান, জানান যে ভবনের উপরের ৪ তলা অনুমতি ছাড়াই নির্মাণ করা হয়েছিল।
২৩ এপ্রিল ২০১৩ তারিখে ফাটল নিশ্চিত হওয়ার পর ভবন ছেড়ে চলে যেতে বলা হচ্ছে সত্ত্বেও, অনেক গার্মেন্টস শ্রমিকদের পরের দিন কাজে ফিরতে বলা হয়, তাদের সুপারভাইজার ভবনটিকে নিরাপদ ঘোষণা করে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব আবহাওয়া দিবস
ফাটল সম্পর্কে স্থানীয় সংবাদ চ্যানেলে দেখানো হয়েছিল। ৯তলা ভবনটি সকাল ৯ টার দিকে প্রথম তলা বাদে বাকি সবগুলি তলা ধসে পড়ে। ধসে পড়ার সময় ভবনটিতে প্রায় ৩০০০ কর্মী ছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৯ টার দিকে হঠাৎ করে বিকট শব্দ এবং কাঁপনে তারা ভূমিকম্পের আশঙ্কা করেন। পরে বেরিয়ে দেখেন বিরাট এলাকা ধুলা বলিতে ধোঁয়াটে হয়ে পড়েছে।
ঐ সময় ভবনে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে বেশিরভাগ ছিল নারী যাদের সাথের তাদের শিশু সন্তানও সেখানে নার্সারী সুবিধায় ছিল।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সান নিউজ/এনজে