লাইফস্টাইল ডেস্ক: শক্তিশালী হাড় গঠনে সুষম খাদ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাড় সুস্থ রাখতে প্রধানত কাজ করে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি। সুষম খাদ্য সুস্থ হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পুষ্টির যোগান দেয়। সঠিক পরিমাণে ক্যালসয়িামসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ, বাড়তি লবণ না খাওয়া, খাবারে সঠিক পরিমাণে ভিটামিন ডি-রাখা ইত্যাদি হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে। নিয়মিত খাবারের তালিকায় যেসব খাবার রাখলে হাড় মজবুত ও সুস্থ রাখা যাবে, চলুন জেনে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন: রূপচাঁদার দোপেঁয়াজা রেসিপি
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মজবুত হাড় বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধ করে। কিন্তু নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর থেকেই হাড়ের ক্ষয় দেখা দেয়। বয়সজনিত কারণে, অনিয়মতান্ত্রিক জীবনব্যবস্থা এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস হাড়ের ক্ষতির কারণ।
হাড়ের জন্য একটি অপরিহার্য ভিটামিন হলো ক্যালসিয়াম। সাধারণত, প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রাখা প্রয়োজন।প্রতিদিন সুষম খাবার খাওয়ার মাধ্যমে এর চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। দুধ, পনির, দই, মাখন, ছানা ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার, সবুজ শাক-সবজি, সয়াবিন, মাছের তেল এবং মাছ ক্যালসিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস।
চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন খাবার খেলে হাড় মজবুত হয়।
আরও পড়ুন: বেগুন পোড়ানোর রেসিপি
দুধ: দুধ উচ্চ ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারগুলোর মধ্যে একটি। যা সহজে হজমযোগ্য এবং শোষণযোগ্য । শৈশব, কৈশর অথবা বৃদ্ধ সকল বয়সে হাড় তৈরির আশ্চর্যজনক বাহন এটি। প্রস্তাবিত ১০০০ মিলিগ্রামের দুধে ২৮০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম রয়েছে।
বাদাম: সকালের খাবারে অথবা বিকেলের নাসতায় অন্য কোনও খাবারের পাশাপাশি একমুঠো বাদাম খেতে পারেন। বাদামে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্টস হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
কমলার রস: তাজা কমলার রস শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সরবরাহ করে, যা শক্তিশালী হাড় গঠনে সহায়ক। চিকিৎসকদের মতে, নিয়মিত কমলালেবুর রস খেলে রক্ষা পাওয়া যাবে অস্টিওপরোসিসের ঝুঁকি থেকেও।
ভিটামিন ডি: সূর্যের আলো ভিটামিন ডি-র প্রধান উৎস। খাদ্য থেকে চাহিদা অনুযায়ী ভিটামিন ডি পাওয়া মুশকিল। তাই হালকা সূর্যের আলোতে ভোরবেলা হাঁটা সবচেয়ে ভালো বিকল্প হতে পারে। এখন বাজারে ভিটামিন ডি যুক্ত ওষুধও পাওয়া যায়, বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে সেসব ওষুদ সেবন করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন: ছুটির দিন কাটাবেন যেভাবে
কলা: কলা থেকে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম পাওয়া যায়। হাড় এবং দাঁতের সঠিক গঠনের জন্য এটি একটি অপরিহার্য ভিটামিন। হাড়কে মজবুত ও সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কলা রাখতে হবে। প্রতিদিন একটি কলা দুর্বল হাড়ের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
চিজ: বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে যা হাড়ের ক্ষয়সাধন করে। ত্রিশ বছরের উর্ধ্বের মহিলাদের মধ্যে হাড় ক্ষয়ের বিষয়টি বেশি পরিলক্ষিত হয়। তাই হাড় ক্ষয় রোধে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। রোজকার খাবারে চিজ রাখলে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ হয়। এছাড়া চিজ খেতেও সুস্বাদু।
পালং শাক: পালং শাক হাড়কে সুস্থ ও মজবুত রাখতে খুবই উপকারী। এতে থাকা ম্যাগনেশিয়াম এবং ভিটামিন হাড়ের ক্ষয় রোধ করে এবং হাড়ের বৃদ্ধি ঘটায়। এছাড়াও ব্রকোলি এবং বাঁধাকপি হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে।
স্যামন মাছ: স্যামন বা টুনা মাছে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন ডি। নিয়মিত এসব খাবার খেলে হাড় মজবুত থাকে।
আরও পড়ুন: ত্বকের জন্য ভালো চা নাকি কফি?
সয়া মিল্ক: অ-দুগ্ধজাত পণ্য হলেও ফোর্টিফাইড সয়া দুধে রয়েছে উচ্চ মাত্রার ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি।
মুরগির মাংস: মুরগির মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন যা হাড় মজবুত করার পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন ঘাটতি পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ডুমুর: ডুমুরে রয়েছে ফাইবার এবং পটাসিয়াম যা হাড়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। প্রতি ১ কাপ শুকনো ডুমুরে ২৪২ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম থাকে। এতে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম যা হৃদস্পন্দন স্থির রাখতে এবং পেশীর কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের তালিকায় এটির চাহিদা ব্যাপক।
দই: দই আছে অন্ত্রের জন্য স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া। ১ বাটি দইয়ে ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। প্রোটিনেরও উত্তম উৎস এটি। দুধের বিকল্প হিসেবে অনেকেই দই খেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: কীভাবে ইতিবাচক চিন্তা করবেন?
হাড় মজবুত রাখতে প্রয়োজন নিয়মত্রান্তিক জীবনব্যবস্থায়, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং নিয়মিত শরীরচর্চা। ধূমপানের ফলে কিডনির সমস্যার সঙ্গে হাড়েরও ক্ষতি হয়। তাই, ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা।
সান নিউজ/এস আর/এএন