লাইফস্টাইল ডেস্ক: মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সবাই বোঝে না। অধিকাংশ মানুষ ভাবেন এ বিষয়ে মাথা ঘামানোর কিছু নেই। সত্যিকার অর্থে সহানুভূতির সঙ্গে সম্পূর্ণ বিষয়টি বুঝতে হবে। এই ব্যাপারে ভুল ধারণা দূর করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ আচারণের মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। আসুন জেনে নেওয়া যাক মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ভ্রান্ত ধারণাগুলো-
আরও পড়ুন:ঠোঁট ফাটার সমাধান
১. মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা সম্পর্ক বজায় রাখতে ব্যার্থ
যারা মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যায় ভোগেন তারাও অতি সহজেই মানুষের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে সক্ষম। এইটা কোন রোগ নয় এবং তারাও বাকিদের মতো সুন্দর করে ভালোবাসতে ও যত্ন নিতে জানে। তাছাড়া তারা বাকি সবার সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। সহানুভূতিশীল মনোভাব, সহনশীলতা ও অন্যের কষ্ট বোঝার মত ক্ষমতাও রাখে তারা। শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যার মত মানসিক স্বাস্থ্যের সঠিক যত্ন, কাউন্সিলিং ও ওষুধের মাধ্যমে ঠিক করা যায়। যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন তাদেরকে কথা বলার জন্যে উৎসাহিত করা উচিত। এটা তাদের মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে। মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিক মানুষের মতোই শক্তিশালী এবং সু-সম্পর্ক গড়তে সক্ষম।
২.মানসিক অসুস্থতা ইচ্ছাকৃত
যেকোনো সাধারণ শারীরিক অসুস্থতার মত মানসিক স্বাস্থ্যের সমস্যাও এক ধরনের অসুস্থতা। এটি হলো এমন একটি জটিল অবস্থা যা জিনগত, পরিবেশগত কিংবা স্নায়ুবিক কারণে হতে পারে। এগুলো ব্যক্তিগত পছন্দ বা চারিত্রিক ত্রুটির বিষয় নয়। তাই মানসিক অসুস্থতা ইচ্ছাকৃত মনে হলেও সেই ভুল ধারণা ভুক্তভোগী ব্য়াক্তিকে প্রয়োজনীয় সাহায্য পেতে বাধা হতে পারে। এই অবস্থার জন্য দোষারোপ করা মানে তাদের বোঝা বাড়ানো ও সুস্থ হতে বাধা দেওয়া। সহানভূতির কথা বলতে হবে এবং তাদের সঙ্গে আচরণ সম্পর্কে জানতে হবে।
আরও পড়ুন: গরম পানি পান করা উপকারিতা
৩. খারাপ অভিভাবকত্বের কারণেও মানসিক অসুস্থতা হয়
পারিবারিক লালন-পালনে মানসিক সুস্থতা গঠনে অপরিহার্য ভূমিকা রাখে। যেকোনো ধরনের চারিত্রিক প্রবণতা, মস্তিষ্কের রসায়ন, আঘাত পাওয়ার অভিজ্ঞতা ও সামাজিক প্রভাব সবই মানসিক স্বাস্থ্যের বিকাশে অবদান রাখে। তাই একমাত্র কারণ হিসাবে বাবা-মাকে চিহ্নিত করা উচিত নয়। বাবা-মা তাদের সম্পদ এবং জ্ঞান দিয়ে বাচ্চাদের বড় করে থাকেন। তাই তাদের দোষারোপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
৪. মানসিক রোগীরা ভয়ংকর এবং বিপজ্জনক হয়ে থাকে
মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ভুল ধারণাগুলোর মধ্যে একটি হলো, মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অতি সহজেই বিপজ্জনক ও ভয়াবহ হয়ে উঠে। এই চিন্তাধারা থেকে বের হতে হবে কারণ এই অবস্থায় তারা আরও ভীত থাকে। মানসিক রোগীরা ভয়ংকর কিংবা বিপজ্জনক নয়। তাদের মধ্যে এক ধরনের বিষণ্ণতা কাজ করে। এ বিষণ্ণতা থেকে বাইপোলার ডিসঅর্ডার এবং সিজোফ্রেনিয়ার মতো সমস্যাও তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুন: শীতে যেসব রোগ বাড়ে
৫. মানসিক অসুস্থতা মানে দুর্বলতা
শারীরিক অসুস্থতা যেমন ব্যক্তিগত দুর্বলতাকে বোঝায় না, ঠিক তেমনই মানসিক সমস্যাও কারও চারিত্রিক দুর্বলতা কিংবা শক্তি কম বোঝায় না। মানসিক অসুস্থতা হলো জটিল অবস্থা যা জিনগত,পরিবেশগত, জৈবিক এবং মনস্তাত্ত্বিক কারণের সংমিশ্রণে হয়ে থাকে। এ সমস্যার মুখোমুখি হওয়া ও সাহায্য চাওয়ার জন্য সাহস এবং শক্তি লাগে। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে বলা এবং তার সমাধান করা সাহসিকতার একটি কাজ যা যে কেউ চাইলেই পারে না। আমরা যেমন শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদের সাহায্য করি, ঠিক তেমনই মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তিদেরও সাহায্য করতে হবে।
সান নিউজ/এসকে/এএ