সান নিউজ ডেস্ক:
আগামীকাল শনিবার (১ আগস্ট) পবিত্র ঈদ-উল আযহা। ঘরে ঘরে মাংসের সমাহার। সবার ঘরেই মাংস রান্না হবে। কিন্তু অন্যদের থেকে একটু আলাদা কিছু তৈরি করে পরিবারের সবার মন জয় করতে পারেন। সেই উদ্দেশ্যেই সান নিউজ নিয়ে এলো ঈদ স্পেশাল রেসিপি।
ঈদ স্পেশাল রেসিপিতে আপনাদের জন্য থাকছে নবাবি ঢঙে ‘সিরাজী বিরিয়ানি’ রেসিপি।
নবাব ওয়াজেদ আলি শাহর হাত ধরে বাংলায় আসার অনেক আগে থেকেই ভারতবর্ষ বিরিয়ানিতে মশগুল ছিল। পারস্য দেশের এই খাবারের নাম এসেছে ফারসি শব্দ ‘বিরিয়ান’ থেকে, যার বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায় ‘সেদ্ধ করার আগে ভেজে নেওয়া’। নিয়ম মেনেই বিরিয়ানির চাল ঘি দিয়ে ভেজে নেওয়ার রেওয়াজ আছে।
বিরিয়ানি ভালবাসেন না, এমন খাদ্যরসিকের সন্ধান পাওয়াই দুষ্কর। জিভে জল আনা যে সব মুঘল খাবার রসনাতৃপ্তির অভিধানে চিরকাল অমলিন হয়ে থাকে, তার মধ্যে বিরিয়ানি অন্যতম। বর্তমানে নামীদামি বিরিয়ানির ব্র্যান্ড থাকলেও ঐতিহ্যবাহী সিরাজী বিরিয়ানির মজাই আলাদা।
বাড়িতেই যদি বানিয়ে নিতে পারেন এই সিরাজী বিরিয়ানি, তাহলে কেমন হয়?
চলুন জেনে নেই কি কি লাগছে সিরাজী বিরিয়ানি তৈরি করতে।
উপকরণ:
স্টার আনিস: ১টি, ভাল করে ধোয়া বাসমতি চাল: ৫০০ গ্রাম, তেজপাতা: ২টি, কালো এলাচ: ২টি, কালো জিরা: ২ টেবিল চামচ, গোলমরিচ: ৬-৭ টা, দারচিনি: ৬-৭টি, ছোট এলাচ: ৬-৭টি, লবঙ্গ: ৬-৭টি, মৌরি: ১ টেবিল চামচ, জয়ফল: ১/৪ চামচ, লবণ: স্বাদ মতো, শাহি জিরা: ১/৪ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ।
মাটন ম্যারিনেশন:
মাটন: ১ কেজি (কাঁধের দিকের মংস এড়িয়ে কিনুন, ২ ইঞ্চির মতো টুকরো করে নিন), গরম মশলা: ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা: ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা: ১ টেবিল চামচ, পেঁপে বাটা: ৩ টেবিল চামচ, পানি ঝরানো দই: ৪ টেবিল চামচ, লেবুর রস: ১টি গোটা লেবু, ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো, মরিচ গুঁড়ো: স্বাদ মতো, লবণ: স্বাদ মতো।
অন্যান্য উপকরণ:
কুচানো পিঁয়াজ: ৪টি, কুচানো টম্যাটো: ২টি, গরম দুধ: ১/৪ কাপ, ঘি, জাফরান, তেল, কেওড়া জল, গোলাপ জল, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা
রন্ধন প্রণালী:
মাটনের গায়ে সব মশলা মাখিয়ে ৩ ঘণ্টার জন্য ম্যারিনেট করে রাখুন। এ বার কড়ায় তেল দিয়ে অল্প অল্প করে পিঁয়াজ দিয়ে ভেজে তুলে রাখুন। এটি মোটা পাত্র আঁচে বসিয়ে তাতে ঘি দিন। এ বার কিছুটা কুঁচোনো কাঁচা পিঁয়াজ ও কাঁচা মরিচ মিশিয়ে নেড়েচেড়ে নিন। এ বার তাতে রসুন বাটা ও আদা বাটা মিশিয়ে এর মধ্যে ম্যারিনেট করে রাখা মাংস দিন। এ বার তাতে ধনিয়া গুঁড়ো, জিরা গুঁড়ো ও মরিচ গুঁড়ো কিছুটা যোগ করুন। তিন কাপ পানি যোগ করে ঢিমে আঁচে মাংসটা কষিয়ে নিন। কষানো হয়ে এলে টমাটো, লবণ, গরম মশলা যোগ করে আরও ১৫ মিনিট মতো রান্না করুন। ঘি থাকায় মশলার গা থেকে সরে সরে আসবে মাংস ও খুব একটা গ্রেভি হবে না।
এ বার বাসমতি চালকে ২০ মিনিট মতো পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। ভাল করে ধুয়ে নিন। এ বার একটি পরিস্কার কাপড়ে ছোট এলাচ, কালো এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ, গোলমরিচ, জয়ফল, জয়িত্রি, শাহি জিরা ও স্টার অ্যানিস মিশিয়ে একটি পুঁটলি তৈরি করুন। এ বার ৭৫০ মিলিলিটার পানিতে চাল, লবণ, তেজ পাতা ও পুঁটলি দিয়ে ফোটাতে থাকুন। প্রায় অর্ধেক ফুটে গেলে পানি ঝরিয়ে নিন ও পুঁটলি থেকে সব মশলা বার করে চালে মিশিয়ে দিন।
রঙের জন্য ১/৪ কাপ গরম দুধে জাফরান মিশিয়ে ২০ মিনিট পর্যন্ত ঢেকে রাখুন। এ বার এতে গোলাপ জল ও কেওড়া জল মেশান। ভাল করে মিশিয়ে এক দিকে সরিয়ে রাখুন।
এ বার একটি বড় ও এয়ার টাইট ঢাকাওয়ালা পাত্র নিন। ২ চামচ ঘি তার সারা গায়ে মিশিয়ে নিন। পাত্রটিকে আঁচে বসিয়ে হালকা করে গলিয়ে নিন ঘি। এ বার দু’হাতা ভাত দিন, তার উপর যোগ করুন মাংস, তার উপর রং। আবার দু’ হাতা মাংস, তার উপর মশলা, তার উপর থেকে ছড়ান রং এ ভাবে পুরো ভাত, মাংস ও রং বণ্টন করে ছড়িয়ে দিন। উপর থেকে বেরেস্তা, কুচোনো পুদিনা পাতা, ধনে পাতা ও বেরেস্তা ছড়িয়ে অর্ধেক লেবুর রস যোগ করুন। এ বার ঢাকা বন্ধ করার আগে তার গায়ে ভাল করে বেসন বা ময়দা মাখিয়ে বায়ুনিরোধক করে তুলুন। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলের মাধ্যমেও তা করতে পারেন। এই অবস্থায় ঢিমে আঁচে বসিয়ে রাকুন ‘দম’ করতে। মোটা পাত্র না হলে নীচের অংশের ভাত পুড়ে যাবে, তাই পাত্রটি মোটা নিন অবশ্যই। ৪০ মিনিট পর আঁচ বন্ধ করে দিন ও আরও ১০ মিনিট পর ঢাকনা খুলে গরম গরম সার্ভ করুন বিখ্যাত সিরাজী বিরিয়ানি।
সান নিউজ/ বিএম/এআর