সান নিউজ ডেস্ক : নভেম্বর আসছে মানেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হচ্ছে। দেখতে দেখতে শীত প্রায় চলেই এসেছে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে ঠাণ্ডা লাগা, সর্দিকাশি, গলা ব্যাথা সহ আরও বিভিন্ন ধরনের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঘরোয়াভাবে কিছু বিষয় অনুশীলন করলে ঠাণ্ডা লাগা, সর্দিকাশি, গলা ব্যাথার মতো সমস্যা সহজেই দূরে রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন : রূপচাঁদা মাছের ফ্রাই
এদিকে ঋতু পরিবর্তনের শুরুতে প্রকৃতির সঙ্গে তাল মেলাতে হিমশিম খেতে হয়। কারণ একটা সময় অনেক ঠান্ডা অনুভূত হতে পারে। আবার কিছুক্ষণ পরেই ভীষণ গরম লাগতে পারে। তাপমাত্রার এই ওঠানামা, হঠাৎ বৃষ্টি এসব দেখতে সুন্দর মনে হতেই পারে।
তবে এখানেই শেষ নয়। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নানা রকম অসুখের ভয়ও বৃদ্ধি পায়।
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে নিজেকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখা জরুরি। কারণ এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সামান্য দুর্বল হলেও দেখা দিতে পারে সর্দি কাশি।
আরও পড়ুন : ইলিশ পোলাও
প্রসঙ্গত, সিজনাল সর্দি-কাশি বছরের এই সময়ে অর্থাৎ নভেম্বর এবং এপ্রিল মাসের দিকে বেশি দেখা দেয়। এই দুই সময়ে আবহাওয়ায় বড় পরিবর্তন আসে। এসময়ে জ্বর, মাথা ব্যথা অথবা সর্দি-কাশি দেখা দিতে পারে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি-কাশি হলে তা দূর করার জন্য কিছু ঘরোয়া সমাধান জেনে নেয়া প্রয়োজন।
ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি-কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় :
গাজরের স্যুপ :
গাজর আমাদের চোখের দৃষ্টি বাড়ানোর জন্য পরিচিত। কিন্তু এছাড়াও এর আরও অনেক গুণ রয়েছে। গাজরে থাকা ভিটামিন এ সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং শ্বাসযন্ত্রের অসুখ দূরে রাখে।
এক বাটি গরম স্যুপ আপনাকে অনেকটাই আরাম দেবে। গাজরের স্যুপ খেলে তা আপনাকে সর্দি-কাশির সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করবে।
বেসনের সিরা :
এটি একটি আয়ুর্বেদিক রেসিপি যা মূলত পাঞ্জাবে তৈরি করা হয়। বেসন, ঘি, দুধ, হলুদ ও গোল মরিচ দিয়ে এটি তৈরি করা হয়। এটি গলা ও নাকের জন্য প্রশান্তিদায়ক গরম পানীয়।
বিশেষজ্ঞের মতে, গোল মরিচ, আদা, হলুদ এবং এ অন্যান্য উপাদানগুলো শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে। তাই এই মৌসুমে সর্দি-কাশি থেকে বাঁচতে এই পানীয় পান করতে পারেন।
হলুদ ও দুধ :
বিশ্বজুড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদ কার্যকরী উপাদান হিসেবে পরিচিত। এতে থাকা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টি ফাঙ্গাল ও অ্যান্টি ভাইরাল উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন একগ্লাস দুধ ও এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া মিশিয়ে খেলে সর্দি-কাশিসহ আরও অনেক অসুখ দূরে থাকে।
ঘরোয়া কাশির সিরাপ :
আদা, মধু ও লেবুর রস দিয়ে এই ঘরোয়া কাশির সিরাপ তৈরি করা হয়। এই তিন উপাদানই আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হিসেবে পরিচিত।
মধুতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল এবং অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল উপাদান রয়েছে। জার্নাল পেডিয়াট্রিক্সে প্রকাশিত ২০১২ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, মধু কাশি দূর করতে সাহায্য করে। সূত্র : এনডিটিভি
আদা চা :
আদা চা সর্দি, কাশিতে দারুণ কাজ করে। এই বিশেষ ধরনের চা নিয়মিত পান করলে সর্দিকাশি দূর হয়। এছাড়াও শ্বাসকার্যে বাধা সৃষ্টিকারী কফ বুক থেকে বেরিয়ে যেতে শুরু করে। তাই দ্রুত সর্দি এবং কাশি সারাতে আদা চা খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
দারচিনি, লেবু এবং মধু :
সর্দি কাশিতে একদম কাবু হয়ে গেছেন? কিছুতেই সারাতে পারছেন না? তাহলে সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে তা দূর করতেই হবে।তা দূর করার জন্য দারুচিনি, মধু ও লেবু একসঙ্গে মিশিয়ে সিরাপের মত বানাতে পারেন। নিয়মিত তা সেবন করলে সর্দিকাশি সহজেই দূর হবে।
হালকা গরম পানি :
হালকা গরম পানি সর্দি, কাশি এবং গলা বসে যাওয়ার মতো সমস্যায় দারুণ কাজ করে। এটি ঠাণ্ডা লেগে গলা ফুলে যাওয়া এবং যে কোনো সংক্রমণ থেকেও শরীরকে রক্ষা করে।
লবন মেশানো পানি দিয়ে গড়গড়া :
সর্দিকাশি,গলা ব্যাথার মতো সমস্যায় দারুণ কাজ করে লবন মেশানো পানি। এই পানি দিয়ে গারগেল করলে সর্দি, কাশি দ্রুত সেরে যায়। এছাড়া এই জলের মধ্যে এক চিমটে হলুদ দিয়ে দিলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়।
মশলা চা :
তুলসি, আদা, গোলমরিচ মিশিয়ে চা পান করলে শরীরের খুবই উপকার হয়। এই চা সর্দি, কাশি দূর করতে দারুণভাবে কাজ করে।
আমলকী :
আমলকী শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন একটা করে আমলকী খেলে লিভার সহ শরীরের প্রতিটি অঙ্গ উপকৃত হয়। একইসঙ্গে সারিয়ে তোলে সর্দি-কাশির মতো নানান সমস্যা।
আদা- তুলসি :
আদার রসের সঙ্গে তুলসি পাতা বাঁটা এবং মধু মিশিয়ে খেলে কাশি কমে যায়। এছাড়াও, সর্দি সারাতে এটি দারুণভাবে কাজ করে।
আদা এবং লবন :
কয়েক টুকরো আদা কেটে তার মধ্যে লবন মেশাতে হবে। এবার এই আদার টুকরো মুখে নিয়ে একটু একটু করে কামড়ে খেতে হবে। এতে সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যাথা কমে যাবে।
সান নিউজ/এইচএন