সান নিউজ ডেস্ক: দেহ-মন সুস্থ রাখতে ঘুমের বিকল্প নেই। ঘুমের অভাব দূর করা তাই অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তেমনি অতিরিক্ত ঘুমও ক্ষতি করে। বেশি ঘুমানো ও অলস জীবনযাত্রার পরিণতি হতে পারে অকাল মৃত্যু, এমনটাই সতর্কবাণী দিচ্ছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ডেল্টা প্ল্যান
গবেষণা অনুযায়ী, ১৮ থেকে ৬৪ বছর বয়সী একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। যারা অতিরিক্ত ঘুমান বা দিনের ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা ঘুমিয়ে কাটান এবং শারীরিকভাবে সক্রিয় নন, তাদের অকাল মৃত্যুর আশঙ্কা চারগুণ বেড়ে যায়।
অতিরিক্ত ঘুমের সঙ্গে যদি শরীরচর্চার অভাব হয়, তাহলে হতে পারে ত্রিমাত্রিক সর্বনাশ। হতে পারে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ক্যান্সারের মতো রোগ, যা বিশ্বব্যাপী কেড়ে নিচ্ছে ৪ কোটিরও বেশি প্রাণ এবং এ মৃত্যুহার সংক্রামক রোগজনিত মৃত্যুহারের চেয়েও বেশি।
জেনে নিন অতিরিক্ত ঘুমানোর ফলে কী কী শারীরিক ক্ষতি হয়-
আরও পড়ুন: ট্যাক্স দিয়ে পাচারকৃত টাকা আনা যাবে
১. বিষণ্ণতা ঝুঁকি বাড়ে: এক গবেষণায় বলা হয়, বেশি সময় ধরে ঘুমানোর ফলে মানুষের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। পরীক্ষায় দেখা যায়, যারা ৯ ঘণ্টা ও তার বেশি সময় ঘুমান, তাঁদের মধ্যে বিষণ্নতার লক্ষণ ৪৯ শতাংশ বেড়ে যায়।
২. মানসিক বিকাশে বাধা দেয়: অতিরিক্ত ঘুমের কারণে মানসিক বিকাশ খুবই স্বল্প হয়। এতে কাজের অগ্রগতি লোপ পায় ও মানুষ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
৩. ওজন বৃদ্ধি পায়: বেশি ঘুমের কারণে দেহের ওজন অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে। এসব মানুষের ওজন বৃদ্ধির হার ২৫ শতাংশ বেশি থাকে। অতিরিক্ত ঘুমের কারণে স্থূলতা দেখা দিতে পারে।
৪. হৃদযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্থ হয়: নয় ঘণ্টার বেশি সময় নিয়মিত ঘুমালে হৃদযন্ত্রের সমস্যা বাড়তে থাকে। অতিরিক্ত ঘুমান- এমন তিন হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখা গেছে, অন্যদের অপেক্ষা দ্বিগুণ পরিমাণে করোনারি আর্টারি (হৃদরোগ) রোগের ঝুঁকিতে ভোগেন তারা।
৫. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা দুর্বল করে: খুব কম বা খুব বেশি সময়ের ঘুম মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস করে। নারীরা পাঁচ ঘণ্টার কম অথবা ৯ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নিয়মিত ঘুমালে দুই বছরের জন্য তাঁদের মগজের কর্মক্ষতা কমে যেতে পারে।
৬. গর্ভধারণে সমস্যা করে: দক্ষিণ কোরিয়ায় ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখানো হয়, অতিরিক্ত ঘুমের কারণে নারীদের গর্ভধারণের ক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রায় ৬৫০ জন নারীর ওপর এ গবেষণা পরিচালিত হয়। খ্যাতিমান অ্যান্ডোক্রাইনোলজিস্ট ড. ইভান রোজেনব্লাথ বলেন, ঘুমের সঙ্গে দেহের ২৪ ঘণ্টার জৈবিক চক্র, হরমোন ক্ষরণ এবং ঋতুস্রাবের বিষয়টি জড়িত। এসব আবার গর্ভধারণের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
৭. আয়ু কমতে পারে: একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা বেশি ঘুমান তাদের দ্রুত মৃত্যুর আশঙ্কা অন্যদের চেয়ে ৩ শতাংশ বেশি থাকে। ওই গবেষণাগুলো প্রায় ১৪ লাখ মানুষের ওপর করা হয়েছে।
সান নিউজ/এনকে/এফএ