নিজস্ব প্রতিবেদক: পেঁপে একটি রসালো সুমিষ্ট পুষ্টিকর এবং উপকারী ফল। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পেঁপে খাদ্যতালিকার মধ্যে আমরা সবাই কম-বেশি রাখি। এতে প্যাপেইন নামক এনজাইম খাদ্যের বিপাক প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। কিন্তু শারীরিক অবস্থা ও বয়সভেদে পেঁপে খাওয়া উচিত। তবে একটা ব্যাপার প্রায় সবারই জানা যে, গর্ভবতী নারীর জন্য পেঁপে খাওয়া একদমই ঠিক নয়। এটি আসলে কতটা সত্যি?
অনেক সময় বাড়িতে বয়স্ক লোকজন থাকলে তারা গর্ভবতী নারীকে পেঁপে খেতে নিষেধ করেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে একেবারেই খেতে বারণ করেন। এর কারণ হলো পেঁপের মধ্যে থেকে বের হওয়া সাদা দুধের মতো তরল। এই তরলের মধ্যে থাকা এনজাইমগুলো গর্ভপাতের কারণ হতে পারে। এনজাইমগুলো পোস্টগ্র্যান্ডিনের নিঃসরণকে বাড়িয়ে জরায়ুর সংকোচন ঘটাতে পারে। এ কারণে গর্ভপাতের আশঙ্কা বেড়ে যায়।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,পেঁপে খেলে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, এমন যুক্তির পেছনে রয়েছে কিছু ইতিহাস।
অনেক আগে মিশরীয়রা গর্ভাবস্থা এড়াতে এবং উটের গর্ভপাত ঘটানোর কাজে পেঁপের বীজ ব্যবহার করতো। সেখান থেকেই গর্ভাবস্থায় পেঁপে এড়িয়ে চলার নিয়ম তৈরি হয়। গর্ভবতী ইঁদুরের ক্ষেত্রে গবেষণা করা হলেও এখনও পর্যন্ত মানুষের ক্ষেত্রে এমন কোনো সুনির্দিষ্ট গবেষণা করা হয়নি। গর্ভবতীদের পেঁপে খাওয়ার ক্ষেত্রে পুরোপুরি বারণ না করলেও সীমিত খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, গর্ভবতী নারীর জন্য স্বাস্থ্যকর একটি ফল হলো পেঁপে। কাঁচা বা পাকা- কোনো ধরনের পেঁপেই পিরিয়ডের চক্রে পরিবর্তন আনে না। তবে কাঁচা পেঁপেতে থাকা পেপেইন নামক প্রোটিওলাইটিক এনজাইম গর্ভবতীর প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যে নারীর জরায়ুর সংকোচন এবং হজমের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই প্রথম তিনমাস হবু মাকে কাঁচা পেঁপে সম্পূর্ণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হয়।
গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাস পেঁপে বা পেপাভেরিন ক্যারোটিন ভাস্কুলার চাপ বাড়াতে পারে, যা প্লাসেন্টার ভেতরে অভ্যন্তরীণ রক্তপাত ঘটাতে পারে। এ কারণেই গর্ভবতীকে গর্ভাবস্থায় পেঁপে এড়িয়ে চলতে বলা হয়। তাই গর্ভাবস্থায় কাঁচা পেঁপে এড়িয়ে চলার পাশাপাশি পাকা পেঁপে খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ জেনে নিন।
সূত্র:ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
সান নিউজ/এনএএম