লাইফস্টাইল ডেস্ক : কোনো অফিসে নতুন নিয়োগ পেলে অন্য সহকর্মীদের কাছে নিজের সুন্দর ভাবমূর্তি গড়ে তোলা জরুরি। বেশিরভাগ নতুন চাকরিজীবীরা সে চেষ্টাই করেন। তাই অফিসে সুন্দর একটি ইমেজ গড়তে কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে আপনাকে।
আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করুন: কোনো অফিসে নতুন হিসেবে নিজের সুন্দর ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে আপনার কাজগুলো সঠিক সময়ে যথাযথভাবে করার উদ্যোগ নিন প্রথমে। কারণ কাজের মাধ্যমেই আপনার মূল্যায়ন হবে। সঠিক সময়ে অফিসে ঢুকবেন। বের হবেন সঠিক সময়ে। সম্ভব হলে কিছুক্ষণ বেশি সময় কাটাবেন অফিসে। এতে করে কাজ ভালোভাবে বুঝে নেয়ার পাশাপাশি অফিসের পরিবেশ, সহকর্মীদের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা নেয়ার সুযোগ পাবেন আপনি।
আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। বর্তমান প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা শর্টকাট পথে সব কিছু পেতে চায়, তবে আপনাকে ধৈর্য্য হারালে চলবে না। নতুন অফিসে কাজ শুরু করেই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা বসের কাছে বিশেষ কোনো সুবিধার আবেদন করবেন না। এটি আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। সময় দিন। ধীরে ধীরে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হয়তো এমনিতেই পেয়ে যাবেন আপনি।
অন্যের সাহায্য ছাড়া উদ্যমী হোন: অফিসে নতুন কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ পেয়ে বসের সুনজরে পড়তে আপনি একটি ভালো উদ্যোগ নিতে পারেন। আর তা হলো অন্যের সাহায্য ছাড়াই কাজ করার উদ্যম প্রকাশ করা। অফিস স্কুলের মতো কোনো শিক্ষাক্ষেত্র না যে আপনি বসের কাছে প্রতিনিয়ত নতুন হোমওয়ার্ক বা কাজের জন্য বায়না ধরবেন। আপনি এখানে প্রফেশনাল। তাই সেভাবেই কাজ করতে হবে আপনাকে। নিজের উদ্যোগে কাজের ধরন ও বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।
এক্ষেত্রে অন্যরা যে প্রজেক্ট এড়িয়ে যায়, সেটি গ্রহণ করুন আপনি। কোনো গুরুত্বপূর্ণ ডেটাবেজ আপডেট করা, জমে যাওয়া বিভিন্ন ফাইলের কাজ সম্পন্ন করা এরকম কিছু দায়িত্ব নিতে পারেন। তবে নিজের বরাদ্দকৃত কাজগুলো যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখে অফিসে বাড়তি কিছু সময় অবস্থান করে ওই কাজগুলো করুন। কাজ শেষে আপনি বসের প্রশংসা ও সহকর্মীদের কৃতজ্ঞতা পাবেন।
মতামত প্রকাশ করুন কৌশলে: বস নিশ্চয়ই মেধা ও যোগ্যতার মাপকাঠিতে যাচাই করে আপনাকে নিয়োগ দিয়েছেন। তাই আপনার কোনো মতামত প্রতিষ্ঠানের বেড়ে উঠা ও ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তবে ভদ্রতা ও শ্রদ্ধার মাধ্যমে আপনার মতামত জানান। বিশেষজ্ঞ পরামর্শকের মতো যদি কোনো বিষয়ে মতামত জানান, তাহলে তা আপনার অপরিপক্কতা ও বোকামীই প্রমাণ করবে। কোনো প্রক্রিয়া কেন এভাবে চলছে জিজ্ঞেস না করে, বরং নতুন পন্থায় তা করা যায় কি না তা প্রস্তাব করুন। এতে বস বা কোম্পানির প্রচলিত কাজের ধারাকে অবজ্ঞা না করে আপনার ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা জানানোর সুযোগ তৈরি হবে।
কাজই মুখ্য বাকি সব গৌণ: অফিসে কাজের ফাঁকে অনেক সহকর্মীর সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক তৈরি হতে পারে। অফিসের পরও তাদের সঙ্গে হয়তো আপনি কোথাও বেড়াতে যান, আড্ডা দেন। তবে মনে রাখতে হবে মূলত কাজই মুখ্য, বাকি সব গৌণ। সহকর্মীদের সঙ্গে পেশাগত সম্পর্ককে প্রাধান্য দিন। হতে পারে প্রগতিশীল কোনো কোম্পানিতে কাজ করছেন আপনি।
সেখানে হয়তো আড্ডা দেয়া, মজা করা অফিস কালচারের অংশ। তবে এরপরও খেয়াল রাখতে হবে অফিস কোনো পার্টি করার জায়গা না। এছাড়া অফিস বা বস সংক্রান্ত কোনো আপত্তিকর কথা সবার সঙ্গে শেয়ার করার বিষয়টিও সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত আপনার। যদি মনে হয় কোনো তথ্য অন্যদের জানানো ঠিক না, তাহলে তা বলবেন না।
পরিস্থিতি বুঝুন: নতুন চাকরিতে নিয়োগ পাওয়ার পর অফিসে কাজের বিষয়ে বস বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করা জরুরি প্রত্যেকের। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাদের প্রশ্ন করছেন, তারা যেন বিরক্ত না হোন। কারণ দিনভর তাদের অনেক কাজের চাপ সহ্য করতে হয়। তাই অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কাজ সংক্রান্ত আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নেয়া উচিত। এ
তে বসকে ঘন ঘন বিরক্ত করতে হবে না, আর সহকর্মীদের সঙ্গেও সম্পর্ক দৃঢ় হবে আপনার। তবে আরো ভালো হয় যদি কাউকে তেমন বিরক্ত না করে দ্রুত পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নিজেই জেনে নিতে পারেন আপনার করণীয় কাজ বা প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো।
সান নিউজ/পিডিকে