আন্তর্জাতিক ডেস্ক: বাংলাদেশে রফতানির জন্য দেশের কৃষকদের কাছ থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ কিনছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রফতানি সংস্থা ন্যাশনাল কো অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেড (এনসিইএল)। প্রতি কেজি বাংলাদেশি টাকায় ৩৮ টাকা ৪০ পয়সা (২৯ রুপি) দরে এ পেঁয়াজ পাঠানো হবে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিশাল জয়
এর আগে গত ডিসেম্বরে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
ডিসেম্বরের শুরুতে দেশটির কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ থাকবে।
পরে কূটনৈতিক পর্যায়ে বাংলাদেশসহ বেশ কয়েকটি দেশের সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার পেঁয়াজ পাঠানোর অনুরোধের পর বিশেষ বিবেচনায় ভারতীয় পেঁয়াজের ওপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে মোট ৬৪ হাজার ৪০০ টন পেঁয়াজ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। এর মধ্যে বাংলাদেশের ভাগে পড়েছে ১৬৫০ টন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুক হামলায় নিহত ২
দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে মন্ত্রণালয় পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কেনা শুরু করেছে সরকার। শিগগিরই এ পেঁয়াজ বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলোতে পাঠানো হবে।
রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা এখনো জারি থাকায় সরকারি উদ্যোগে এসব পেঁয়াজ পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
এদিকে ভারতের বেরসরকারি পেঁয়াজ রফতানিকারকরা বলছেন, একদিকে ভারতের পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা, অন্যদিকে রমজান মাসে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের পুরোনো ক্রেতা বাংলাদেশ, মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর বাজারে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে ভারত থেকে চোরাকারবারিদের মাধ্যমে প্রতিদিন পেঁয়াজ পাচার হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ১৩ হাজারের বেশি শিশুকে হত্যা
সম্প্রতি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রফতানিকারকরা। চিঠিতে তারা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার পর থেকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে যত পেঁয়াজ ছিল, তার প্রায় ৫০ শতাংশই চোরা পথে দেশের বাইরে গিয়েছে।
তবে এ অভিযোগের যথার্থতা নিয়ে সংশয় রয়েছে। কারণ ‘পেঁয়াজের রাজধানী’ খ্যাত রাজ্য মহারাষ্ট্রে পাইকারি পর্যায়ে মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম হচ্ছে সর্বনিম্ন ৭ রুপি থেকে সর্বোচ্চ ১৬ রুপি। ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম ওঠা-নামা করছে ১০-২০ রুপির মধ্যে।
এদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা দরে। অবশ্য কয়েকদিন আগে এ দর ১২০ টাকা ছুঁয়েছিল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১
দেশটির সংবাদ মাধ্যম ইকোনমিক টাইমসকে মহারাষ্ট্রের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী খেদ জানিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের এতো দাম। কিন্তু দেশের কৃষক বা ব্যবসায়ীদের তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না।
ইকোনমিক টাইমসকে এনসিইএলের অধীন সংস্থা হর্টিকালচার এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের (হেপা) প্রেসিডেন্ট অজিত শাহ বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অস্বাভাবিক নয়। প্রতি বছরেই মার্চ-এপ্রিল মাসে (আন্তর্জাতিক) বাজারে পেঁয়াজের ঘাটতি দেখা দেয়।
এতোদিন ভারতীয় পেঁয়াজ এ ঘাটতি সামাল দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে এ বছরের ৩ মাসে বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ পৌঁছায়নি। সেজন্যই এ ঘাটতি। তবে মে মাসে মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজের চালান আসা শুরু হবে। তখন দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে। সূত্র: ইকোনমিক টাইমস
সান নিউজ/এনজে