আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে ফজরের নামাজের সময় মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে নামাজ পড়তে আসা বহু মুসল্লি নিহত হয়েছেন। গতকাল দেশটির একটি ক্যাথলিক গির্জায় হামলার ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন।
আরও পড়ুন: এমএলএসহ ৩ জনকে গুলি করে হত্যা
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গির্জায় হামলার ঘটনার একই দিনে একটি মসজিদে কয়েক ডজন লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বুরকিনা ফাসোর কর্তৃপক্ষ। আজ ভোরে নামাজের সময় আফ্রিকার এই দেশটির নাতিয়াবোয়ানি শহরের ওই মসজিদটি ঘিরে ফেলে বন্দুকধারীরা।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, নিহতরা সবাই মুসলিম, তাদের বেশিরভাগই পুরুষ। বুরকিনা ফাসোর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বর্তমানে ইসলামপন্থি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
আরও পড়ুন: বুরকিনা ফাসোতে হামলা, নিহত ১৫
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা ইসলামপন্থি যোদ্ধা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তারা একই দিনে স্থানীয়ভাবে অবস্থানরত সৈন্য ও মিলিশিয়াকে লক্ষ্যবস্তু করে।
স্থানীয় মিডিয়া বলছে, মোটরবাইকে করে মেশিনগান নিয়ে শত শত জঙ্গি মসজিদটিতে আক্রমণ চালায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় অযাচাইকৃত বিভিন্ন প্রতিবেদনে ইঙ্গিত দেয়া হয়, মসজিদে হামলায় নিহতের সংখ্যা কর্মকর্তাদের দেয়া সংখ্যার চেয়ে বেশি হতে পারে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বুনকিনা ফাসোর নাতিয়াবোয়ানি শহরটি দেশটির অশান্ত পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত। এ অঞ্চলে একাধিক সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৩১ হাজার সেনা নিহত
এদিকে কাতারভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা জানায়, দেশটির পূর্বাঞ্চলে একটি মসজিদে হামলায় কয়েক ডজন মুসলমান নিহত হয়েছে বলে স্থানীয় ও নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, ভোর ৫টার দিকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা নাতিয়াবোনির একটি মসজিদে হামলা চালায়র। এতে কয়েক ডজন লোক নিহত হয়।
অন্য একটি স্থানীয় সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীরা খুব ভোরে শহরে প্রবেশ করে। তারা মসজিদটি ঘেরাও করে এবং মুসল্লিদের ওপর গুলি চালায়। এসব মুসল্লি সেখানে দিনের প্রথম নামাজের জন্য জড়ো হয়েছিল। একজন গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় নেতাসহ বেশ কয়েকজনকে গুলি করা হয়।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
সূত্রটি আরও বলছে, ডিফেন্স অব ফাদারল্যান্ড (ভিডিপি) নামে একটি বেসামরিক বাহিনী সামরিক বাহিনীকে সহায়তা করে থাকে। এ বাহিনীর সৈন্য ও স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর হামলা করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বুরকিনা ফাসোর এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এলাকা বর্তমানে বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে। দেশটির কর্তৃপক্ষ আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের সাথে যুক্ত ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এসব গোষ্ঠী সাহেল অঞ্চলের বিশাল অংশ দখল করেছে। এতে লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
গত ৩ বছরে দেশটির মসজিদ ও গির্জাগুলোকে বারবারই লক্ষ্যবস্তু করা হয় এবং বহু মানুষকে হত্যা করা হয়।
চলতি মাসের শুরুতে বুরকিনা ফাসোর সামরিক-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম ট্রাওরে বলেন, প্রয়োজনে পশ্চিম আফ্রিকার এ দেশটিতে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য রাশিয়ান সেনা মোতায়েন করা হতে পারে।
সান নিউজ/এনজে