আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘মিগজাউম’ আঘাত হানার আগেই এর প্রভাবে সেখানে ব্যাপক তাণ্ডব শুরু হয়েছে। এ তাণ্ডবে চেন্নাইয়ে বিভিন্ন দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় স্কুলে হামলা, নিহত ৫০
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে অন্ধ্রপ্রদেশে সর্বশক্তি নিয়ে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।
ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোর ও মছলিপত্তনমের মাঝামাঝি কোনো জায়গায় আছড়ে পড়বে মিগজাউম। মূলত, চেন্নাইয়ে তাণ্ডব চালানোর পর দ্রুত গতিতে অন্ধ্রপ্রদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এ ঘূর্ণিঝড়।
আরও পড়ুন: গাজার দক্ষিণাঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু
বর্তমানে ঘূর্ণিঝড়টি নেল্লোর থেকে ৭০ কিমি উত্তর-উত্তরপূর্ব, কবালি থেকে ৩৫ কি.মি. পূর্ব-উত্তরপূর্ব, বাপাতলা থেকে ৯০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম, মছলিপত্তনম থেকে ১৫০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম, চেন্নাই থেকে ২৩০ কি.মি. উত্তরে অবস্থান করছে।
এটি গত ৬ ঘণ্টায় উত্তর তামিলনাড়ু উপকূল থেকে ১০ কি.মি. বেগে উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে দক্ষিণ অন্ধ্রপ্রদেশ সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়ে এগিয়ে চলেছে।
আগের ৬ ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি ৭ কিমি বেগে ছুটছিল। আজ সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রস্থল ছিল ওঙ্গোলের ২৫ কি.মি. পূর্ব-দক্ষিণপূর্বে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে নতুন বার্তা
ইতিমধ্যেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অন্ধ্রপ্রদেশ ও পুদুচেরির উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই সাথে বইছে ঝোড়ো বাতাস।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মিগজাউম সাগরে শক্তি বৃদ্ধি করে ঘূর্ণিঝড় থেকে পরিণত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। এর প্রভাবেই দক্ষিণ ভারতের পূর্ব উপকূলজুড়ে ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভারী বর্ষণে ভেসে গেছে চেন্নাই। প্রবল বৃষ্টিপাতে বহু এলাকাই এখন জলমগ্ন। পানিতে ডুবে গেছে শহরের বিশাল এলাকা। ভারী বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট কার্যত নদীতে পরিণত হয়েছে এবং বহু যানবাহন পানির স্রোতে ভেসে গেছে।
আরও পড়ুন: ভারতে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ২
এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গাছ, দেয়াল ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে পড়েছে। বন্যার পানি প্রবেশ করায় বেশ কয়েকটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবা সাময়িকভাবে স্থগিত রয়েছে।
পাশাপাশি অচল হয়ে পড়েছে মেট্রো স্টেশনগুলো। অবিরাম বর্ষণে চেন্নাইয়ের বেশ কয়েকটি এলাকায় বিদ্যুৎ-ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হয়েছে।
ভারী বৃষ্টির কারণে চেন্নাই বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টা বন্ধ ছিল প্লেন ওঠা-নামা। প্রতিকূল পরিবেশের কারণে কমপক্ষে ১২ টি প্লেনকে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং বাতিল হয়েছে ৪ টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট।
আরও পড়ুন: মিগজাউমের প্রভাবে বিমানবন্দর প্লাবিত
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উপকূলীয় জেলাগুলোতে দুর্গতদের সহায়তায় কমপক্ষে ৫০০০ টি ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে। রাজ্যটির সার্বিক পরিস্থিতিতে নিবিড় নজর রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন।
আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস অনুসারে, আজ কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকবে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।
এ দিন কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা স্বাভাবিকের থেকে প্রায় ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। আজ সেখানকার আকাশ মূলত মেঘলাই থাকবে। আর তিলোত্তমায় বিচ্ছিন্নভাবে হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সূত্র: এনডিটিভি।
সান নিউজ/এনজে