আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী আজ (২৪ নভেম্বর) বিকালে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন ৩৯ ফিলিস্তিনি।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন— ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে চুক্তির অংশ হিসেবে মোট ৩৯ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
নারী ও শিশুদের নিয়ে গঠিত বন্দিদের ড্যামন ও মেগিদ্দো নামক দুটি জেল থেকে নিয়ে যাওয়া হবে। এর পর অধিকৃত পশ্চিমতীরের রামাল্লার দক্ষিণে অবস্থিত ওফার কারাগারে রাখা হবে। সেখানে তারা রেডক্রসের মাধ্যমে চূড়ান্ত মুক্তির সনদ পাবেন।
এর আগে, এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি বলেন, শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।
মুখপাত্র আরও বলেন, শুক্রবার বিকাল ৪টায় বন্দিদের প্রথম দলটিকে মুক্তি দেওয়া হবে। যুদ্ধবিরতির মেয়াদ হবে ৪ দিন।
আরও পড়ুন: গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু
তিনি বলেন, প্রথম দিন ১৩ জন বন্দি মুক্তি পাবে। আগামীকাল যেসব বন্দি মুক্তি পাবে তাদের তালিকা বিনিময় করা হয়েছে। প্রতিদিন নতুন করে বন্দিদের তালিকা বিনিময় করা হবে। ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো— বন্দিদের নিরাপত্তা। আমাদের লক্ষ্য থাকবে তাদের নিরাপদে সেখানে পৌঁছাতে পারাটা। বন্দিদের গাজা থেকে মুক্তির বিষয়টিতে যুক্ত থাকবে রেডক্রস ও যুদ্ধের অন্য পক্ষগুলো।’
দোহায় কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘শুক্রবার সকাল ৭টা থেকে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে। সন্ধ্যায় ১৩ জন জিম্মি মুক্তি পাবেন। এই সময়ের মধ্যে জিম্মিদের মধ্যে যারা একই পরিবারের তাদের একত্রিত করা হবে। চার দিনের মধ্যে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেয়ার যে চুক্তি হয়েছে সেটি অনুযায়ী প্রতিদিন নতুন করে আরও বেসামরিক জিম্মিকে যুক্ত করা হবে।’
গতকাল ইসরায়েলের পক্ষ থেকে ৩০০ ফিলিস্তিনি বন্দির একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ৪ দিনের যুদ্ধবিরতির সময় এ তালিকার ১৫০ জনকে মুক্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ৩
এর আগে বলা হয়েছিল বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সকাল থেকে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। বুধবার হামাসের সিনিয়র নেতা মুসা আবু মারজুক বলেছিলেন, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বন্দিবিনিময় চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হবে। মারজুকের ওই ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। এর পর ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি একদিন পিছিয়ে যাওয়ার দাবি করে।
এর আগে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, ৫০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, তারা সবাই নারী ও শিশু।
তারা আরও জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ৪ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলতে পারে।
চুক্তিতে বলা হয়েছে, প্রথম ৫০ জনকে মুক্তি দেওয়ার পর প্রতি ১০ জন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হলে একটি অতিরিক্ত দিন যুদ্ধবিরতি থাকবে।
আরও পড়ুন: ফের গাজায় অভিযান শুরু হবে
এদিকে জিম্মিদের স্বজনরা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা এমন কোনো আংশিক চুক্তি চায় না, যেখানে শুধু কিছুসংখ্যক জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে।
তবে আশা করা হচ্ছে এই ধারাটি অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে বাকি জিম্মিরাও মুক্তি পাবে।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রথম ৫০ জনের মধ্যে যাদের মুক্তি দেওয়া হবে, তাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলি নাগরিক এবং যাদের দুই দেশেরও নাগরিকত্ব রয়েছে।
সূত্র : আলজাজিরা, মিডল ইস্ট আই
সান নিউজ/টিও