আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পূর্ব এশিয়ার দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় আইন করে কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ হতে চলেছে। সম্প্রতি দেশটির রাজধানী সিউলে কুকুরের মাংস ব্যবসার বিরোধিতা করে সমাবেশ করেন কর্মীরা।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ১৪
যদিও দেশটিতে এ মুহূর্তে বিতর্কিত এ শতাব্দী প্রাচীন প্রথাটি স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ বা বৈধও নয়। মূলত, কুকুরের মাংস বিক্রি এবং খাওয়া নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে আইন প্রবর্তনের পরিকল্পনা করছেন দেশটির আইনপ্রণেতারা।
রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) মিডিয়া রিপোর্টের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে রুশ সংবাদ মাধ্যম আরটি।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি কুকুরের মাংস খাওয়া নিষিদ্ধ করার এ আইনটি প্রস্তাব করে। অবিলম্বে প্রস্তাবটি সমর্থন করে দেশটির ক্ষমতাসীন পিপল পাওয়ার পার্টি। এতে বিলটি পাস করার জন্য যথেষ্ট ভোট মেলে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে আবারও ভূমিকম্প
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষমতাসীন দলের পলিসি কমিটির প্রধান পার্ক ডাই-চুল বলেন, দক্ষিণ কোরিয়ার পোষা প্রাণী লালনপালন করে প্রায় ১০ মিলিয়ন পরিবার। তাই এখনই সময় কুকুর খাওয়া বন্ধ করার।
সংবাদ মাধ্যম আরটি বলছে, পার্ক তার দলের প্রধান নীতি নির্ধারক। তিনি ‘কিম কিওন-হি’স বিল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন, যেটি দেশের ফার্স্ট লেডিকে উল্লেখ করে। দক্ষিণ কোরিয়ার এই ফার্স্ট লেডি দেশে কুকুরের মাংস খাওয়ার অনুশীলন বন্ধ করার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
যদিও এ নামকরণটি নিজ দলের সহকর্মী সদস্যদের কাছ থেকে সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যারা পার্ককে দেশের প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ধূর্ততার অভিযোগ এনেছিলেন।
আরও পড়ুন: ৫ ফুট লম্বা চুল, গিনেস বুকে কিশোর
রুশ এ সংবাদ মাধ্যমটি বলছে, ফার্স্ট লেডি সব ধরনের কুকুরের মাংসের ব্যবসা এবং খাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিকে সমর্থন করেন। গত মাসে তিনি দেশের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিকে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের অবসান ঘটাতে একটি আইন পাস করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
সে সময় তিনি কুকুরের মাংস খাওয়া বন্ধ করার জন্য প্রচারাভিযান এবং প্রচেষ্টা চালানোর প্রতিশ্রুতিও দেন।
গত আগস্ট মাসের শেষের দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, মানুষ এবং প্রাণীদের সহাবস্থান থাকা উচিত। কুকুরের মাংস নিয়ে চালানো অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত। যদিও কুকুরের মাংস খাওয়া কোরিয়ান উপ-দ্বীপে একটি শতাব্দী প্রাচীন প্রথা। তবে গত কয়েক বছর ধরে এটি হ্রাস পাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনীয় হামলায় দোনেৎস্কে নিহত ৬
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দক্ষিণ কোরিয়া জুড়ে খামারের সংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু কুকুর খামারি সমিতির মতে, প্রতিবছর এখনো ৭-১০ লাখ কুকুর খাওয়ার উদ্দেশ্যে হত্যা করা হয়। অবশ্য এ সংখ্যা এক দশক আগের থেকে অনেকটা হ্রাস পেয়েছে।
যদিও কুকুরের মাংস শিল্পকে সম্পূর্ণভাবে বেআইনি করার জন্য দেশটির সরকারের ইতিপূর্বে চালানো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কুকুর খামারি এবং রেস্তোঁরা মালিকরা বিরোধিতা করেছিল। মূলত, জীবিকা হারানোর ভয়েই সেই বিরোধিতা করেন তারা। খামারিদের যুক্তি, মাংসের জন্য প্রজনন করা কুকুর পোষা প্রাণী থেকে আলাদা।
সান নিউজ/এনজে