আন্তর্জাতিক ডেস্ক: লিবিয়ার দেরনা শহরে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ভয়াবহ বন্যায় নিহতের সংখ্যা ১১৩০০ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ১০ হাজারের বেশি মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। দেশটির কর্তৃপক্ষ নিখোঁজদের খোঁজে মরিয়া অনুসন্ধান চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুতে আরও ১১ মৃত্যু, হাসপাতালে ২৬৬৩
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলীয় শহর দেরনায় ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১৩০০ জনে পৌঁছেছে।
ভারী বৃষ্টির কারণে ২ টি বাঁধ ভেঙ্গে সুনামির মতো ব্যাপক বন্যার পরে নিখোঁজদের অনুসন্ধানে জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: লিবিয়া যাচ্ছে বাংলাদেশের ত্রাণ
আন্তর্জাতিক এ সাহায্যকারী গোষ্ঠীর সেক্রেটারি-জেনারেল মারি এল-ড্রেস অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে ফোনে বলেন, ভূমধ্যসাগরীয় এ শহরে আরও ১০১০০ জন মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে দেরনায় মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৫ হাজার বলেছিল লিবিয়ার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের আঘাতে উত্তর আফ্রিকার এ দেশের অন্যত্র প্রায় ১৭০ জন নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সংকেত
এর আগে গত রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) অস্বাভাবিক শক্তিশালী ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল পূর্ব লিবিয়া জুড়ে বিস্তৃত এলাকায় মারাত্মক বন্যার সৃষ্টি করে। তবে ঐ দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয় দেরনা শহরটি।
রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড়টি যখন উপকূলে আঘাত হানে, তখন বাসিন্দারা শহরের বাইরের দুটি বাঁধ ভেঙে পড়ার বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। এরপরই বন্যার পানি সুনামির মতো শহরে প্রবেশ করে এবং বহু ভবন বিধ্বস্তসহ হাজার হাজার মানুষকে সমুদ্রে ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: কৃষি মার্কেটের ২১৭ দোকান ক্ষতিগ্রস্ত
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেরনায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তার বেশিরভাগই এড়ানো যেতো।
জেনেভায় সাংবাদিকদের ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশনের প্রধান পেটেরি তালাস বলেন, যদি স্বাভাবিক কোনো অপারেটিং আবহাওয়া পরিষেবা থাকতো, তাহলে তারা সতর্কতা জারি করতে পারতো। সেটি হলে জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে সক্ষম হতো।
আসন্ন ঝড় সম্পর্কে পূর্ব লিবিয়ার কর্মকর্তারা জনসাধারণকে সতর্ক করেছিলেন। গত শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) তারা সমুদ্র থেকে ঢেউয়ের আশঙ্কায় বাসিন্দাদের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো থেকে সরে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন তারা। কিন্তু বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে কোনো সতর্কতা ছিল না।
আরও পড়ুন: চলমান মামলা বাতিলের সুযোগ নেই
লিবিয়ান রেড ক্রিসেন্ট বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১১৩০০ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়া আরও ১০১০০ জন নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে প্রকৃত মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যম আল আরাবিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বন্যায় বিপর্যস্ত দেরনার মেয়র আব্দুলমেনাম আল-ঘাইতি বলেন, সুনামি সদৃশ এ বন্যায় যেসব এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটির ওপর ভিত্তি করে তারা ধারণা করছেন, মৃতের সংখ্যা ১৮-২০ হাজার হতে পারে।
সান নিউজ/এনজে