ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
সস্তা জ্বালানির জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও ভারতকে দ্রুত এবং স্থায়ীভাবে কয়লার ব্যবহার ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। শুক্রবার (২৮ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান। গুতেরেস বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলার লক্ষ্যে ভারতকে অবশ্যই ধারাবাহিকভাবে কয়লার ব্যবহার ছাড়তে হবে আর এই বছরের পর নতুন কোনও কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র অনুমোদন বন্ধ করতে হবে এবং জ্বালানি তেলের ওপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিতে হবে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিশ্বজুড়ে নবায়নযোগ্য শক্তির দাম কমে আসতে শুরু করলেও ভারত সরকার এখনও কয়লাচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে। উন্নত বিশ্ব জ্বালানি তেলের উন্নয়ন চালিয়ে যাচ্ছে দাবি করে নরেন্দ্র মোদির সরকার বলতে চাইছে কার্বণ নিঃসরণের দায় মূলত উন্নত দেশগুলোর। ফলে জলবায়ু সংকটের জন্য দায়ী গ্যাস নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে আনর নতুন প্রতিশ্রুতি দিতে অনিচ্ছুক ভারত সরকার।
ভারতের ওই অবস্থানই মানতে নারাজ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘(কয়লা) সম্পদ আটকে ফেলে আর বাণিজ্যিকভাবে কোনও অর্থই তৈরি করে না-কয়লা বাণিজ্য ধোঁয়ায় গিয়ে শেষ হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু মোকাবিলার লড়াইয়ে ভারত সত্যিকার অর্থে সুপার পাওয়ার হয়ে উঠতে পারে যদি তারা জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে নবায়নযোগ্য শক্তিতে পরিণত হওয়ার কাজে গতি আনে।’
কয়লার ওপর নির্ভরতা চালিয়ে যেতে থাকলে ভারতের বায়ু দূষণ অন্য শহরগুলোতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘জীবাশ্ম জ্বালানিতে আরও বেশি বিনিয়োগের অর্থ আরও বেশি মৃত্যু ও অসুস্থতা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় বাড়তে থাকা। খুব সাধারণভাবে এটিতে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয় আর খারাপ অর্থনৈতিক উদাহরণও তৈরি হয়।’
বায়ু ও সৌর চালিত বিদ্যুতের দাম পড়ে যাওয়ায় জাতিসংঘের হিসেবে বর্তমানে নতুন নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের ব্যয় দুনিয়ায় বিদ্যমান কয়লাচালিত কেন্দ্রগুলো পরিচালনার ব্যয় থেকে ৩৯ শতাংশ কমে গেছে। আগামী দুই বছরে এটি বেড়ে ৬০ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে।
২০২২ সাল নাগাদ ভারতের নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ব্যয় বিদ্যমান কয়লাচালিত কেন্দ্র পরিচালনার খরচ অর্ধেক হয়ে যাবে। ‘আর সেকারণেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় বিনিয়োগকারীদের কয়লা ছেড়ে দেওয়ার পরিমাণ বাড়ছে-তারা দেয়ালের লেখা দেখতে পাচ্ছে’, মন্তব্য করেন জাতিসংঘ মহাসচিব।