আন্তর্জাতিক ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তাদের অ্যাপলের আইফোনসহ অন্যান্য বিদেশি ব্র্যান্ডের ডিভাইস ব্যবহার না করার এবং অফিসে না আনার নির্দেশ দিয়েছে চীন।
আরও পড়ুন: রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন কাল
বুধবার (৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি বাণিজ্য ও প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনের সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর বিরোধ চলছে। এর মধ্যেই আইফোন ব্যবহারের বিষয়ে এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সামনে এলো।
রয়টার্স বলছে, চীনা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থাগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তাদের অ্যাপল আইফোন ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে চীন। আইফোনের পাশাপাশি বিদেশি ব্র্যান্ডের অন্যান্য ডিভাইস ব্যবহার না করতে এবং সেগুলো অফিসে না আনতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: 'ইন্ডিয়া'র নাম বদল হতে চলেছে?
বুধবার মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বিষয়টি সম্পর্কে জানেন- এমন বেশ কয়েকজনকে উদ্ধৃত করে এ তথ্য সামনে এনেছে।
প্রভাবশালী এই মার্কিন সংবাদ মাধ্যমটি জানিয়েছে, কাজের জন্য আইফোন ব্যবহার না করা এবং সেগুলো অফিসে না আনার বিষয়ে গত কয়েক সপ্তাহে অধস্তনদের এসব আদেশ দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তবে এ নিষেধাজ্ঞার পরিসর কতটা ব্যাপক, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: উ. কোরিয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের কড়া হুঁশিয়ারি
দেশটিতে আইফোন ব্যবহারের এই নিষেধাজ্ঞাটি এমন সময়ে দেওয়া হলো, যখন পরের সপ্তাহে বাজারে আইফোনের একটি মডেল আসার কথা রয়েছে।
পর্যবেক্ষকরা বিশ্বাস করেন, চীন-মার্কিন উত্তেজনা বাড়ার সাথে সাথে চীনে কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে- এমন বিদেশি কোম্পানিগুলোর মধ্যে বিষয়টি উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে।
যদিও অ্যাপল আইফোন ছাড়া অন্য কোনো ফোন নির্মাতার নাম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে সামরিক বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৩
এ বিষয়ে জানার জন্য অ্যাপল এবং চীনের স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মূলত চীনা সরকারের পক্ষ থেকে সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়ে থাকে চীনের স্টেট কাউন্সিল ইনফরমেশন অফিস।
রয়টার্স জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন ডেটা সুরক্ষার বিষয়ে আরও মনোযোগী হয়েছে। সেই সাথে চীনের বাজারে থাকা কোম্পানিগুলোর জন্য নতুন আইন তৈরি করেছে দেশটি।
আরও পড়ুন: শর্তসাপেক্ষে শস্যচুক্তি নবায়ন
সাম্প্রতিক সময়ে চিপ শিল্পসহ প্রযুক্তিখাত নিয়ে চীন-মার্কিন উত্তেজনা বেশ বেড়েছে। গত মাসের শুরুতে মাইক্রো চিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে চীনের দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যেই বেইজিং সেমিকন্ডাক্টর তৈরির প্রধান ২ টি উপাদান রফতানির ওপর তাদের আরোপ করা বিধিনিষেধ কার্যকরের উদ্যোগ নেয়।
এর আগে চীন যাতে মাইক্রো প্রসেসর প্রযুক্তি শিল্পে খুব বেশি দূর অগ্রসর হতে না পারে, সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকেও পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: জিল বাইডেনের করোনা পজিটিভ
এরই অংশ হিসেবে ওয়াশিংটন চীনের কাছে সেমিকন্ডাক্টর রফতানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। এরপরই গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম রফতানির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে চীন।
মূলত ইলেকট্রনিক্স ও কম্পিউটার চিপসহ সামরিক সরঞ্জামাদি উৎপাদনে এই ২ টি উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিশ্বব্যাপী যত গ্যালিয়াম ও জার্মেনিয়াম ব্যবহার করা হয় তার সবচেয়ে বড় উৎপাদনকারী দেশ চীন।
আরও পড়ুন: ইরানে কয়লা খনিতে বিস্ফোরণ, নিহত ৬
গত সপ্তাহে চীন সফরের সময় মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো বলেন, চীন অবিনিয়োগযোগ্য হয়ে উঠেছে বলে তার কাছে অভিযোগ করেছে মার্কিন কোম্পানিগুলো।
এসব কোম্পানি জরিমানা, অভিযান এবং অন্যান্য পদক্ষেপের দিকেও ইঙ্গিত করেছে, যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ চীনে ব্যবসা করাকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
আরও পড়ুন: তাইওয়ানে বিদ্যুৎহীন ৩০ হাজার মানুষ
রয়টার্স বলছে, যদিও এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা স্মার্টফোন নির্মাতা হুয়াওয়ে এবং চীনের বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকের বিরুদ্ধেও একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। আইফোন নিয়ে চীনের সর্বশেষ বিধিনিষেধটি আগের সেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞারই প্রতিফলন।
প্রসঙ্গত, সারা বিশ্বের মধ্যে অ্যাপলের অন্যতম বড় বাজার চীন। মার্কিন এই সংস্থাটির আয়ের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এশীয় এই পরাশক্তি দেশটি থেকে আসে।
সান নিউজ/এনজে