আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে চীনে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই ভাইরাসে নতুনভাবে আরো ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে দেশটির মূল ভূখণ্ডেই মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৩ জনে। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নতুন আক্রান্তের সংখ্যাও, এরইমধ্যে যা প্রায় নয় হাজারে ছাড়িয়ে গেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ তথ্য জানিয়েছে।
হুবেই প্রদেশ স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, বৃহস্পতিবার আরো ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ভাইরাসটির কেন্দ্রস্থল উহান প্রদেশে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০৪ জনে।
এদিকে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসটির মোকাবিলায় বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘হু’র মহাপরিচালক অ্যাডানোম গ্রেবিয়াসিস এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন।
সংস্থাটির প্রধান বলেন, এ ঘোষণার মাধ্যমে দুর্বল স্বাস্থ্যসেবার দেশগুলোকে সুরক্ষা দেয়া এবং তাদের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হবে। তবে, চীনে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া শুরু করলেও এক সপ্তাহ আগেও গ্লোবাল ইমার্জেন্সি ঘোষণা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলো হু।
হু’র কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে চীনে হাজার হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশে একে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা এই বিষয়ে স্পষ্ট উদাহরণ দেখেছি। ফলে সবকিছু পর্যালোচনা করে সংস্থাটির বিশেষজ্ঞ কমিটি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলো।
হু ডিজি বলেন, চীনে যা ঘটছে এই কারণে নয়, বরং অন্য দেশে যা ঘটছে সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উদ্বেগের বিষয় হলো দুর্বল স্বাস্থ্যব্যবস্থার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে ভাইরাসটি।
এই ভাইরাস চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে উৎপত্তি হওয়া করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব অন্য দেশগুলোতেও দেখা যাচ্ছে। এরইমধ্যে চীনের সবগুলো প্রদেশ ছাড়াও অন্তত ২০টি দেশে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এ রোগ মানুষের মাধ্যমেই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে চীনসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। দেশের সব জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এখন থেকে পর্যায়ক্রমে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা সব ফ্লাইটের যাত্রীদেরই স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হবে। গত কয়েক দিন শুধু চীন থেকে আসা চারটি উড়োজাহাজের যাত্রীদের স্ক্রিনিং করা হয়েছিল। এখন থেকে তা সব যাত্রীর ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনটি স্ক্যানিং মেশিন রাখা আছে। এর একটি ভিআইপি প্রবেশদ্বারে, একটি সাধারণ প্রবেশদ্বারে এবং অন্যটি স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে। একইভাবে দেশের অন্যান্য স্থল ও নৌবন্দরেও স্ক্রিনিং ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরসংলগ্ন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে একটি আলাদা আইসোলেটেড কেবিন প্রস্তুত রাখা আছে।
উল্লেখ্য, আজই উহান প্রদেশ থেকে ৩৬১ জন বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করেছে সরকার। শুক্রবার বিকেল পাঁচটায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট বাংলাদেশিদের ফেরত আনতে সেখানে যাবে।
সান নিউজ/সালি