আন্তর্জাতিক ডেস্ক: চলতি সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গ শহরে অনুষ্ঠেয় ১৫তম ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর দেখা হবে। কিন্তু তার আগে দু’দেশের উচ্চ পর্যায়ের সেনাকর্তাদের ১৯তম বৈঠক কার্যত নিষ্ফল হয়ে গেল।
আরও পড়ুন: পুলিশের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে সুইডেন
পূর্ব লাদাখের সীমান্ত সমস্যা সমাধানে দু'দিন আগে চুসুল-মলডো সীমান্তবর্তী এলাকায় সেনাকর্তাদের ওই বৈঠক হয়।
সূত্রের বরাতে, ডেপসাং ও ডেমচক দু’টি অঞ্চল থেকে নিজেদের সেনাবাহিনী সরিয়ে নিতে রাজি হয়নি চীন। বিগত ৩ বছরের অন্যান্য বৈঠকের মতোই এবারের বৈঠকটিও ব্যর্থ হয়েছে।
গালওয়ান সংঘর্ষের আগের স্থিতাবস্থা কবে ফিরবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ভারতের সরকার বিরোধীরা সরব হয়েছেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে ধেয়ে যাচ্ছে ঝড়, বন্যার আশঙ্কা
দু'দিন আগের বৈঠকটি একেবারে ব্যর্থ হয়েছে বলা যায় না বলে ভারত সরকারের একটি সূত্র দাবি করেছে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে হওয়া বৈঠকে দু’দেশ একসাথে যৌথ বিবৃতি পর্যন্ত দেয়নি। এবার অন্তত যৌথ বিবৃতি দিয়ে দু’দেশই সীমান্তে শান্তি ও সুস্থিরতা বজায় রাখার প্রশ্নে একমত হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি ফেরাতেও রাজি হয়েছে।
দিল্লি দাবি করছে যে তিন বছর আগে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় অংশে ঢুকে পড়ে চীন সেনাবাহিনী। তার পর থেকেই সেনাবাহিনী প্রত্যাহার নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনা জারি রয়েছে।
সূত্রের মতে, পরশুর বৈঠকে ডেপসাং অঞ্চলে চীন সেনাসদস্যদের পিছিয়ে যাওয়ার দাবি জানানো হয়। কারণ চীন সেনাসদস্যদের উপস্থিতির দরুন ওই এলাকায় নজরদারি চালাতে পারছে না ভারত।
আরও পড়ুন: ব্রিটিশ কলাম্বিয়ায় জরুরি অবস্থা জারি
ফলে দৌলত বেগ ওল্ডি এয়ার স্ট্রিপ অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া চীন সেনাসদস্যদের উপস্থিতির কারণে ডেপসাং এলাকায় থাকা ওয়াই জংশনেও ভারত নজরদারি চালাতে পারছে না।
ভারতীয় সূত্রের দাবি, নিজেদের সীমান্ত ছেড়ে প্রায় ১৮ কিলোমিটার ভিতরে এসে চীন সেনাবাহিনী বসে রয়েছে। ফলে ভারতকে ৬৫টি পেট্রোলিং পয়েন্টের মধ্যে ২৬টিতে নজরদারি বন্ধ রাখতে হয়েছে। আর কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানের কারণে কোনোভাবেই সেখান থেকে সেনাবাহিনী সরাতে রাজি হচ্ছে না চীন।
একই অবস্থা ডেমচকেও বিরাজ করছে। সেখানে সিএনএন ট্র্যাক জংশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চীন সেনা ঘাঁটি গেড়ে থাকায় কারাকোরাম পাস এলাকায় আপাতত ভারতীয় সেনাবাহিনীর নজরদারি বন্ধ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠাবে যুক্তরাষ্ট্র
কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালা গতকাল এই অবস্থায় একের পর এক নিষ্ফল বৈঠক নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন।
মোদিকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, চীন যে প্রায় হাজার বর্গ কিলোমিটার জমি দখল করে রেখেছে, তা কবে ফেরত আনবে মোদি সরকার? কবে আগেকার স্থিতাবস্থা ফিরে আসবে? কবে চীনকে চোখ রাঙাতে সক্ষম হবে ভারত?’
নরেন্দ্র মোদি গত ২০ জুন সর্বদলীয় বৈঠকে দাবি করেছিলেন, ভারতের জমিতে কেউ প্রবেশ করেনি।
আরও পড়ুন: উচ্চ সংক্রমণশীল নতুন ধরন শনাক্ত
সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, তা হলে কি ধরে নিতে হবে মোদি ভুল তথ্য দিয়ে দেশকে বিভ্রান্ত করেছিলেন? যদি কেউ ভারতের জমিতে প্রবেশ না-ই করে থাকে, তা হলে চীন সেনাবাহিনীর সাথে এত বৈঠক কেন করা হচ্ছে? সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
সান নিউজ/এইচএন