আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক বা একনায়ক হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। তবে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
আরও পড়ুন: চীনে রেঁস্তোরায় বিস্ফোরণে নিহত ৩১
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। একইসঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ‘স্বৈরশাসক’ নন বলেও দাবি করেছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের করা মন্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত নন জানিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স। চলতি মাসের শেষের দিকে নিউজিল্যান্ডের এই প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে যাওয়ার কথা রয়েছে।
বাইডেন দিন দু’য়েক আগে ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সন্দেহজনক চীনা গুপ্তচর বেলুন শনাক্ত হওয়ার পর অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন শি জিনপিং।
আরও পড়ুন: স্পেনের যাওয়ার পথে নিহত ৩৯
মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই বিষয়ে বলেন, ‘শি জিনপিং অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন। কারণ আমি গুপ্তচর সরঞ্জামে ভরা সেই বেলুনটিকে দুটি বক্স গাড়ি দিয়ে গুলি চালিয়ে ভূপাতিত করেছিলাম। আর সেসময় তিনি জানতেন না, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে আছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘স্বৈরশাসকদের জন্য এটা বেশ বিব্রতকর। তারা জানেন না কী ঘটছে। বেলুনটিকে যেখানে পাওয়া গেছে, সেখানে সেটির যাওয়ার কথা ছিল না।’
জো বাইডেনের এই মন্তব্যের বিষয়ে হিপকিন্স একমত কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘না, এবং চীনে যে সরকার গঠন করা হয়েছে তা চীনা জনগণের নিজস্ব বিষয়।’
আরও পড়ুন: প্যারিসে বিস্ফোরণ, আহত ৩৭
চীনের জনগণের সরকার গঠনের বিষয়ে কোনও বক্তব্য আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হিপকিন্স বলেন: ‘তারা যদি তাদের সরকার ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায়, তাহলে সেটা তাদের বিষয়।’
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স আগামী ২৫ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চীন সফর করবেন। সেসময় তিনি একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বও দেবেন যেখানে নিউজিল্যান্ডের কিছু বড় কোম্পানিও থাকবে।
এছাড়া সফরে ক্রিস হিপকিন্স প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং এবং ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ঝাও লেজির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
আরও পড়ুন: ভারতে পিক্সেল ফোন তৈরির পরিকল্পনা
অপরদিকে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে ‘স্বৈরশাসক’ হিসাবে আখ্যা দেওয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের তীব্র সমালোচনা করেছে চীন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বেইজিং সফরের মাধ্যমে চিরবৈরী এই দুই দেশের উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টার মাঝে বুধবার বাইডেনের ওই মন্তব্যকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘উস্কানিমূলক’ বলে অভিহিত করেছে এশিয়ার পরাশক্তি এই দেশটি।
প্রসঙ্গত, আনুষ্ঠানিকভাবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক স্থাপনের পর বর্তমানে তা একেবারে তলানিতে রয়েছে। দ্বিপাক্ষিক এই সম্পর্ক স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের দুদিনের বেইজিং সফর শেষ হয় গত সোমবার। আর তার একদিন পরই ওই মন্তব্য করেন জো বাইডেন।
২০২২ সালের অক্টোবর মাসে কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান এবং গত মার্চে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে মাও সেতুংয়ের পর চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী নেতা হয়ে উঠেছেন শি জিনপিং।
সান নিউজ/এইচএন