আন্তর্জাতিক ডেস্ক : স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় একটি ডিঙ্গি নৌকা ডুবে ৩৯ অভিবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : প্যারিসে বিস্ফোরণ, আহত ৩৭
বুধবার (২১ জুন) এ ঘটনা ঘটে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার (২২ জুন) অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা অভিবাসন কেন্দ্রিক ২ টি সংস্থার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার স্পেনের ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাত্রা করা একটি ডিঙ্গি নৌকা ডুবে গেছে। এতে ৩০ জনেরও বেশি অভিবাসীর মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : গ্রিসে ৩০০ পাকিস্তানি নিহত
একই সাথে বিপদাপন্ন যাত্রীদের উদ্ধারে আগে থেকে হস্তক্ষেপ না করার জন্য স্পেন এবং মরক্কোর সমালোচনা করেছে অভিবাসন কেন্দ্রিক ঐ ২ সংস্থা।
রয়টার্স জানিয়েছে, ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের দিকে যাওয়ার সময় অভিবাসীদের বহনকারী নৌকা ডুবে যাওয়ার ঘটনাটি সামনে আনে ওয়াকিং বর্ডারস এবং অ্যালার্ম ফোন নামের ২ টি সংস্থা। অভিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ স্প্যানিশ ওয়াকিং বর্ডারস সংস্থাটি ক্যামিনাডো ফ্রন্টিরাস নামেও পরিচিত।
আরও পড়ুন : ক্রিমিয়ায় হামলার বিষয়ে হুঁশিয়ারি
উভয় সংস্থাই জানায়, ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে মূলত ৬০ জন আরোহী ছিলেন। স্পেনের মেরিটাইম রেসকিউ সার্ভিস ডিঙ্গির ২ যাত্রীর একজন শিশু এবং অন্যজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
তারা বলেছে, মরক্কোর একটি টহল নৌকা এর আগে ২৪ জনকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন : সোমালিয়ায় সহিংসতায় নিহত ৩৬
অবশ্য ডবে যাওয়া নৌকাটিতে ঠিক কতজন লোক ছিল বা কতজন নিখোঁজ হয়ে থাকতে পারেন তা স্প্যানিশ বা মরক্কোর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করতে পারেনি।
ওয়াকিং বর্ডারসের মুখপাত্র হেলেনা ম্যালেনো টুইটারে জানান, নৌকাডুবির পর ৩৯ জন সমুদ্রে ডুবে গেছে। তবে এ ঘটনার বিশদ কোনো বিবরণ সামনে আনেননি তিনি।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশ-ভারত সংলাপ দিল্লিতে আজ
এদিকে উদ্ধার অভিযানের সমর্থনে ট্রান্স-ইউরোপীয় নেটওয়ার্ক পরিচালনাকারী সংস্থা অ্যালার্ম ফোন বলেছে, এ ঘটনায় ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিবাসীদের বহনকারী নৌকাডুবির সর্বশেষ এ ট্র্যাজেডিটি অভিবাসী অধিকার রক্ষায় কাজ করা কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
আরও পড়ুন : জিনপিং একজন স্বৈরশাসক
মূলত এসব কর্মী স্পেনকে তার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। কারণ নৌকাটি যেখানে ডুবে গেছে সেটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে স্পেনের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত। এর অর্থ হচ্ছে, মরক্কোর পরিবর্তে স্পেনের সেখানে উদ্ধার তৎপরতার নেতৃত্ব দেওয়া উচিত ছিল।
রয়টার্স বলছে, ডুবে যাওয়ার সময় ডিঙ্গিটি পশ্চিম সাহারার উপকূলের পানিতে অবস্থান করছিল। যদিও মরক্কো সাবেক এ স্প্যানিশ উপনিবেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ পরিচালনা করে। তারপরও এটির সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে এবং জাতিসংঘ এটিকে অ-স্বশাসিত অঞ্চল হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।
আরও পড়ুন : ডিআইজি মিজানের ১৪ বছরের জেল
স্পেনের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইএফই জানায়, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গার্ডামার ক্যালিওপ নামে স্পেনের একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ঐ ডিঙ্গি থেকে মাত্র ৪৬ কিলোমিটার (২৬ মাইল) দূরে ছিল, যা সময়ের হিসেবে কার্যত এক ঘণ্টার দূরত্ব।
ইএফই আরও বলছে, কিন্তু এরপরও গার্ডামার ক্যালিওপ ঐ ডিঙ্গিটিকে সাহায্য করেনি। কারণ মরোক্কান রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টার সেখানে উদ্ধার তৎপরতার দায়িত্ব নেয়। মরক্কো সেখানে মাত্র একটি টহল নৌকা পাঠায় এবং সেটি প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
আরও পড়ুন : ভারতে পিক্সেল ফোন তৈরির পরিকল্পনা
ওয়াকিং বর্ডারসের ম্যালেনো জানান, ৬ জন নারী ও একটি শিশুসহ ৬০ জন মানুষ ডুবে যেতে পারে এমন একটি ক্ষীণ ছোট নৌকাকে উদ্ধারের জন্য ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করিয়ে রাখা হয়।
এ বিষয়ে জানতে রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনও সাড়া দেয়নি। এমনকি অভিবাসীদের সাথে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে জানতে আনুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগও করেনি মরক্কো।
আরও পড়ুন : মাদক মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন
ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ অঞ্চলের নেতা অ্যাঞ্জেল ভিক্টর টরেস টুইটারে অভিবাসীদের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ইইউয়ের জন্য অভিবাসন এবং আশ্রয় বিষয়ক একটি চুক্তি থাকা প্রয়োজন।
আরও পড়ুন : এবার নুর-রাশেদকে অব্যাহতি
প্রসঙ্গত, পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে অবস্থিত ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টাকারী অভিবাসীদের প্রধান গন্তব্যে পরিণত হয়েছে।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার তথ্য মতে, ২০২২ সালে ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জের উপকূলে পৌঁছানোর প্রচেষ্টায় অন্তত ৫৫৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২২ জন শিশু। সাধারণত সাব-সাহারান আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসীরা এ রুটটি ব্যবহার করে থাকেন।
সান নিউজ/এনজে