ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
ইসরায়েলের সঙ্গে ক্রমেই ঘনিষ্ঠতা জোরদার অব্যাহত রেখেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ঘোষণার মাত্র কয়েক দিনের মাথায় উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময় শুরু হয়েছে। এরিমধ্যে নিরাপত্তা ইস্যু পর্যালোচনায় আমিরাত সফর করেছেন ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেন। আর প্রথমবারের মতো আমিরাতের একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) আমিরাতের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে মোসাদ প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন আমিরাতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শেখ তাহনাউন বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। আলোচনায় নিরাপত্তা সহযোগিতার সম্ভাবনা এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ও অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েল-আমিরাত সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘোষণা দেওয়ার পর এটাই ঊর্ধ্বতন কোনও ইসরায়েলি কর্মকর্তার প্রথম প্রকাশ্য আমিরাত সফর।
এদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিক হওয়ায় উপসাগরীয় আরব দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির সুযোগ আরও বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এক সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলের নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রেইডম্যান বলেছেন, আমিরাত যত ইসরায়েলের মিত্র, অংশীদার ও যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক মিত্র হবে, আমি মনে করি এতে হুমকির মাত্রা কমবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র কেনার ক্ষেত্রে আমিরাত লাভবান হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, আরব দেশগুলোর তুলনায় তারা অত্যাধুনিক অস্ত্র পাবে। যেমন- লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান যুদ্ধে ব্যবহার করেছে ইসরায়েল। কিন্তু আমিরাত এখনও তা কিনতে পারেনি।
নিয়ার ইস্ট পলিসি থিংকট্যাংকের ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউটের আরব-ইসরায়েল সম্পর্ক প্রকল্পের পরিচালক ডেভিড মাকোভস্কি বলেন, এই চুক্তিটি আমিরাতের জন্য জয়। এর ফলে আমিরাত সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারবে যেগুলো এখন শুধু ইসরায়েলই কিনতে পারে। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে আশঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্র এগুলো আরব দেশগুলোর কাছে বিক্রি করে না।
সৌদি-আমিরাত বলয়ের দেশগুলো ইসরায়েল-আমিরাতের চুক্তিকে স্বাগত জানালেও এর তীব্র নিন্দা জানিয়েছে তুরস্ক ও ইরান। এর জেরে প্রয়োজনে আমিরাতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইব এরদোয়ান। তুর্কি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে আমিরাত। অথচ এই বেঈমানিকে তারা ফিলিস্তিনিদের জন্য আত্মত্যাগ হিসেবে দেখাতে চাইছে।’