ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
এশিয়ার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর। এইচ১-বি এবং এল-১ ভিসায় আমেরিকা সফরে সম্প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, তাতে খানিক ছাড় দিল ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। ছাড় দেওয়া হবে জে-১ ভিসাতেও। তবে সবটাই বেশ কিছু ‘শর্তসাপেক্ষে’।
গত জুনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, অভিবাসী নন, এমন যারা এইচ১-বি-সহ অন্যান্য ‘নন-ইমিগ্র্যান্ট’ ভিসায় আমেরিকায় কাজ করতে যান, তাদের আপাতত আর ভিসা দেওয়া হবে না। কারণ— বিদেশিদের ভিসা দিলে, করোনা-পরিস্থিতিতে মার্কিন বাসিন্দাদের আরও কাজ হারাতে হবে। কিন্তু এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে মার্কিন সংস্থাগুলো বলে, সরকারের এই পদক্ষেপে দক্ষ কর্মী হারাবে তারা। যাতে আখেরে ক্ষতি হবে আমেরিকারই। গত কয়েক সপ্তাহে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে দেখার জন্য বিদেশ সচিবের কাছে আবেদন জানান একাধিক মার্কিন আইনপ্রণেতাও।
এইচ১-বি ভিসায় এশিয়া থেকে প্রতি বছর হাজার হাজার বিদেশি কর্মী নিয়োগ করে মার্কিন সংস্থাগুলো। মূলত তথ্যপ্রযুক্তি ও স্বাস্থ্য সেক্টরে। এল-১ ভিসাও একই রকম, কিন্তু স্বল্প সময়ের ভিসা। তিন মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত এল-১ ভিসা দেওয়া হয়।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ঘোষণা করেছে, এই ভিসাগুলির উপরে যে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হয়েছিল, দেশের স্বার্থেই তাতে ছাড়পত্র দেওয়া হবে। তাদের জারি করা অ্যাডভাইজরিতে জানানো হয়েছে— ‘‘একই সংস্থার সঙ্গে একই পদে এবং একই ধরনের ভিসায় যারা আমেরিকায় কাজ চালিয়ে যেতে চান, তাদের এইচ১-বি ভিসা ও এল-১ ভিসা দেওয়া হবে।’’
আরও জানানো হয়েছে, কোনও সংস্থাকে তার বর্তমান বিদেশিকে কর্মীকে সরানোর জন্য চাপ দেওয়া হলে, সেটা সংস্থার পক্ষে কঠিন হতে পারে। তাই এ কাজ করা হবে না। এইচ১-বি ভিসায় যারা স্বাস্থ্য সেক্টরে (কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কিংবা ক্যানসারের মতো কোনও রোগের গবেষণায় যুক্ত) কাজ করেন, তাদের আমেরিকা-সফরেও নিষোধাজ্ঞা জারি করা হবে না। জে-১ ভিসা দেওয়া হয় রিসার্চ স্কলার, অধ্যাপক, বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের। এ ক্ষেত্রেও কিছু ক্যাটেগরিতে ছাড় দেওয়া হবে।
কিন্তু ছাড়পত্রের পাশাপাশি এইচ১-বি ভিসা দেওয়া নিয়ে মার্কিন সংস্থাগুলোর সামনে পাঁচটি নতুন শর্তও পেশ করেছে পররাষ্ট্র দফতর। এর মধ্যে দু’টি শর্ত পূরণ হলে, তবেই মিলবে ভিসা। এই পাঁচটি শর্ত হল— ১) নিয়োগকারী সংস্থার এইচ১-বি ভিসায় নিয়মিত কর্মী নেওয়ার সত্যিই প্রয়োজন রয়েছে কি না, প্রমাণ করতে হবে।
২) চাকরি আবেদনকারীর কাজের দায়িত্ব ও পদ গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে। এবং তার অবদানও অনন্য হতে হবে।
৩) বর্তমান বেতনের থেকে ১৫ শতাংশ বেশি বেতন দিতে হবে আবেদনকারীকে। পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, কোনও মার্কিন সংস্থা যদি এত বেশি বেতন দিয়েও বিদেশিকে নিয়োগ করে, তা হলে বোঝা যাবে, সত্যিই ওই ব্যক্তির প্রয়োজন আছে এবং তার মতো দক্ষ কর্মী আমেরিকায় নেই।
৪) আবেদনকারীর উচ্চমানের যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৫) ভিসা না-দেওয়া হলে মার্কিন সংস্থাটিকে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। এল-১ ভিসার ক্ষেত্রেও একই বিষয় খতিয়ে দেখা হবে। আবেদনকারীদের স্ত্রী-স্বামীও ভিসার সুবিধা পাবেন।
সান নিউজ/ বি.এম.