ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
যেমনটা ভাবা হয়েছিল, ঠিক সেই মেজাজেই ধরা দিলেন কমলা হ্যারিস। ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনি তুখোড় বাক্যবাণ আর আগ্রাসী মেজাজে তুলোধনা করলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
সমর্থকদের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগিয়ে মঙ্গলবারই (১১ আগস্ট) ডেমোক্র্যাট দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কমলাকে মনোনীত করার কথা ঘোষণা করেন জো বাইডেন। আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো নিজে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। কমলার নাম ঘোষণার পরে ডেলাওয়্যারের উইলমিংটন শহরে প্রথম প্রচারসভা করেন জো-কমলা জুটি।
আর তাতেই বাজি মাত! সাড়ে তিন বছরের ট্রাম্প প্রশাসন কী কী ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এ দিনের সভায় তার দীর্ঘ তালিকা পেশ করেন কমলা। প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ব্যর্থ, সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘অযোগ্য কাউকে নির্বাচিত করলে, তার ফল এই রকমই হবে।’’ তার মন্তব্য, ‘‘আজ বিশ্বের দরবারে আমাদের দেশ ও দেশের সম্মান ভূলুন্ঠিত।’’
ট্রাম্প প্রশাসনকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওরা আমাদের কী দিয়েছে? দেশে দেড় কোটির বেশি মানুষের কাজ নেই। লক্ষ লক্ষ শিশু স্কুলে যেতে পারছে না। দারিদ্র মাথাচাড়া দিচ্ছে। কৃষ্ণাঙ্গ, অ-শ্বেতাঙ্গ এবং দেশের আদি বাসিন্দারা আজ ঘরহারা, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতি পাঁচ জন শিশুর মধ্যে এক জন আজ খাদ্য সঙ্কটে ভুগছে।’’
আমেরিকায় বর্তমান করোনা সঙ্কটের জন্যে ট্রাম্পকেই দায়ী করেছেন কমলা। করোনায় এখনও পর্যন্ত শুধু আমেরিকায় মারা গিয়েছেন ১ লক্ষ ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ।
ছ’বছর আগে আমেরিকায় ইবোলা-হানার কথা মনে করিয়ে দিয়ে কমলা বলেন, ‘‘তখনও মহামারির রূপ ধরেছিল ইবোলা। কিন্তু তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও তার তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। আমেরিকায় সেই মহামারিতে মাত্র দু’জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই তুলনায় আজকের কথাটা ভাবুন। অন্য দেশগুলি যখন করোনা সংক্রমণের হার কমাতে বিজ্ঞান মেনে চলছে, তখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভরসা কোনও মিরাকল-এ!’’
মাস্ক পরা এবং দূরত্ববিধি মেনে চলা নিয়ে ট্রাম্পের গা-ছাড়া মনোভাবকেই এর জন্য দায়ী করেছেন কমলা। তার মতে, এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরিবর্তে নিজের মতামতকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। যার ফল আজ ভুগছে আমেরিকা। সেখানে প্রতি ৮০ সেকেন্ডে ১ জন করে মারা যাচ্ছেন।
তবে করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে এ দিনের সভায় সাধারণের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত রাখা হয়। পারস্পরিক দূরত্ববিধি মেনে সাংবাদিকদের বসার ব্যবস্থা ছিল। মঞ্চে জো-কমলা দু’জনকেই মাস্ক পরে থাকতে দেখা গিয়েছে।
অন্য পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েননি ট্রাম্পও। বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) এক সাক্ষাৎকারে কমলাকে ‘উন্মাদ মহিলা’ বলেছেন তিনি। দেশের অর্থনীতির দুর্দিন প্রসঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, করোনা পরিস্থিতির আগে আমেরিকার অর্থনীতি এতটাই তুঙ্গে ছিল যে স্বয়ং জর্জ ওয়াশিংটন (আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট) এলেও তাকে (ট্রাম্প) হারাতে পারতেন না।