আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ লাগোয়া ঝাড়খণ্ড রাজ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এইচ৫এন১ ভাইরাস বা বার্ড ফ্লু। সংক্রমিত এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে সব ধরনের পোষা পাখি মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক পত্রিকা ডেকান হেরাল্ডের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
আরও পড়ুন : হেলিকপ্টারে চড়িয়ে ৮০ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা
এদিকে হাঁস-মুরগি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুরগির মাংস ‘আপাতত’ না খাওয়া উচিত। এতে তেমন ক্ষতি হবে না। বরং রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, গত সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলায় বার্ড ফ্লু শনাক্তের জেরে প্রায় চার হাজার হাঁস-মুরগি মেরে ফেলা হয়। এরপর রাজ্যের রাজধানী রনচিতেও এর সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
খবরে আরও বলা হয়েছে, ২০২০ সাল থেকে টানা তৃতীয় বছর ঝাড়খণ্ডে পাখি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল। যতবারই এ ধরনের খবর ছড়ায়, ততবারই স্থানীয় লোকজন হাঁস, মুরগি ও ডিম খাওয়া কমিয়ে দেন।
আরও পড়ুন : ছাত্রীদের ওপর বিষপ্রয়োগ ক্ষমার অযোগ্য
যদিও এই ভয়কে ‘ভিত্তিহীন’ বলা হচ্ছে। তবে এমন সতর্কতার প্রশংসা করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (রিমস)-এর মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ডা. অশোক কুমার শর্মা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ভাইরাসটির প্রায় প্রতিটি ধরনই তাপমাত্রা সংবেদনশীল, এটি সত্য। এতে আক্রান্ত মুরগি বা পাখি সঠিক উপায়ে রান্না করলে ভাইরাস মারা যায়। তবে অন্য উপায়ে সেটি সংক্রমিত পাখি থেকে মানুষের মধ্যে পৌঁছাতে পারে।
তিনি বলেন, ভাইরাসটির প্যাথোজেনোসিটি খুব বেশি। প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়, এটি খামারে দ্রুত ছড়িয়ে গণহারে পাখি হত্যা করে। এই মুহূর্তে পোল্ট্রিগুলোর মধ্যে ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও সংক্রমণ আটকানোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, পাখিগুলো মেরে ফেলার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। যারা কাজটি করবেন, তাদের প্রতিক্ষেত্রে সতর্কতা থাকতে হবে। কারণ ভাইরাসগুলো খুব বেশি সক্রিয়। হাঁস-মুরগি পরিষ্কার ও রান্নার সময়ও একই সতর্কতা প্রযোজ্য। যারা মাংস পরিষ্কার বা রান্না করেন, তারা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। যদিও রান্না করার পরে ভাইরাসটি নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।
আরও পড়ুন : ইমরান খানের আবেদন খারিজ
প্রসঙ্গত, বার্ড ফ্লুয়ের নতুন ধরন এইচ৫এন১। এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল ২০২০ সালে। সম্প্রতি কয়েকমাসে এই ভাইরাসে রেকর্ড সংখ্যক বুনো পাখি এবং পোল্ট্রিতে হাস-মুরগির মৃত্যু হয়েছে। ভাইরাসটিতে স্তন্যপায়ী প্রাণীরাও আক্রান্ত হওয়ায় বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বেড়েছে। ডব্লিউএইচও এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং সব দেশ থেকেই উচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছে।
সান নিউজ/জেএইচ